ধূ স র পা ণ্ডু লি পি

তুহিন ডি খোকন | শুক্রবার , ২৯ অক্টোবর, ২০২১ at ৬:০৯ পূর্বাহ্ণ

‘জ্যোৎস্নায়-শীতে
কাহারে সে চাহিয়াছে? কতদূর চেয়েছে উড়িতে
মাঠের নির্জন খড় তারে ব্যথা দিতে
এসেছিলো? কোথায় বেদনা নেই পৃথিবীতে’

এ-যেন তাঁরই জীবনের গান। ঘাসফড়িং, কাঁচপোকা বা পাখি হয়ে যিনি মিশে যেতে চেয়েছেন তাবৎ পৃথিবীর প্রকৃতিতে। বোহেমিয়ানদের মতো জীবনধারা তাঁর, ছিলেন প্রকৃতির বন্দনা নিয়েই মত্ত। ভুল করে তবুও হঠাৎ কখনো পার্থিব সুখ-ভালোবাসার স্বপ্ন তাঁর মধ্যেও এসে পড়েছে। তখন আর দশজনের মতোই পিপাসক্ত হাত বাড়িয়েছেন তিনি। কিন্তু হায়! পেতে রাখা তাঁর সে করতলে কুয়াশার আবডালে উড়ে এসে পড়েছে হেমন্তের কুটো, হিজলের ক্লান্ত-পাতা বা হেলেঞ্চার ঝোঁপের সেই মৃত জোনাকির শরীর। জীবনভর শুধু প্রচণ্ড দারিদ্র; অপমান ব্যর্থতাই নিত্যসঙ্গী হয়েছে তাঁর।
তবু স্বপ্ন দেখেছেন তিনি। তাঁর কবিতাগুলো তাঁর কল্পনার কোন মানুষীর খোঁজে স্বপ্নের পথে হেঁটেছে হাজার বছর। যেখানে মৃদু জ্যোৎস্নাজ্বলা অর্পূব রাতগুলোতে জীবনানন্দ তাঁর কল্পিত বনলতা, সুরঞ্জনা, সুচেতনা, সবিতা বা শঙ্খমালা নামক সমুদ্র কন্যাদের হাত ধরে হাঁটতে চেয়েছেন; ঝাউ-নিম-নাগকেশরের বনভূমির ছায়া মাড়িয়ে, এলোমেলো আঘ্রানের শুকনো খড়ের উপর দিয়ে শিশিরে পা ভিজিয়ে অবিরল। অথচ বাস্তবে সে সাধ পূর্ণ হয়নি তার। গাঢ়তম এক নিঃশব্দ বিষাদের মধ্যে অবসান ঘটেছে সে স্বপ্ন- প্রেমে তারপর একদিন পৃথিবীর হাজারো পথ হাঁটার ক্লান্তি নিয়ে এ বাংলার কোন এক কীর্তিনাশার পাড়ে, জোনাকি বিন্দু ছিটানো অন্ধকারে চিরকালের মতো স্তব্ধ হয়ে রইলেন তিনি। গভীর ঘুমের আস্বাদে লালিত হয়ে; তখনো তাঁর বুকের ভেতরে প্রান্তরের গান; হাতছানি, তবু তিনি জাগলেন না আর

‘গভীর অন্ধকারে ঘুমের আস্বাদে আমার আত্মা লালিত।
আমাকে কেন জাগাতে চাও?
আরব অন্ধকারের ঘুম থেকে নদীর ছল ছল শব্দে জেগে উঠবো না আর,
তাকিয়ে দেখবো না নির্জন বিমিশ্র চাঁদ বৈতরণীর থেকে
অর্ধেক ছায়া গুটিয়ে নিয়েছে কীঁর্তিনাশার দিকে।
ধানসিঁড়ি নদীর কিনারে আমি শুয়ে থাকবো ধীর পউসের রাতে –
কোনদিন জাগবোনা জেনে- কোনদিন জাগবো না আমি
-কোনদিন আর।’
দেশ বিভাগ। ফলে জন্মভূমি ছাড়ার তীব্র কষ্ট বুক বন্দী করে চলে গেলেন তিনি কলকাতা শহরে। পরে আর কখনো ফিরে যেতে পারেননি তাঁর ছেড়ে আসা জন্মভূমি সেই বরিশাল ও তার নিজস্ব নদী প্রকৃতির কাছে।

প্রায় সারা জীবনই কষ্ট পেয়েছেন তিনি। ভুগেছেন অর্থকষ্টে। জীবিকার সন্ধানে ঘুরেছেন হন্যে হয়ে, হয়েছেন স্নায়ুচাপে পীড়িত, আদর্শচ্যুতির গ্লানিতে আচ্ছন্ন, জীবনের কদর্যতায় তিক্ত। শেষে এমনও হয়েছিল যখন বেকারত্ব, তীব্র-দারিদ্রতা ও হীনমন্যতার মধ্যে থেকে বিশেষ কিছু লিখতেও পারছিলেন না তিনি; শুধু মাঝে মাঝে খাটের নীচ থেকে ট্রাঙ্কগুলো বের করে তার মধ্যে সঞ্চিত পুরোনো লেখাগুলো গুছাতেন সে-সময়।
একদিন বিকেলবেলা সাগরময় ঘোষের (দেশ পত্রিকার তৎকালীন সম্পাদক) বাসায় হঠাৎই উপস্থিত হয়ে তীব্র দারিদ্র-পীড়িত জীবনানন্দ জিজ্ঞেস করলেন, ‘দেশ’ পত্রিকায় গদ্য লিখলে কবিতার তুলনায় আর্থিক দক্ষিণা বেশি দেওয়া হয় কিনা? আরেকদিন অকস্মাৎ একটি চিঠিতে, উৎকন্ঠিত অনুনয়ে তাঁর সম্পাদক বন্ধু সঞ্জয় ভট্টাচার্যকে লিখেছিলেন ‘বেশি ঠেকে পড়েছি, যে জন্য বিরক্ত করতে হলো আপনাকে। এক্ষুনি চার পাঁচশো টাকা দরকার। দয়া করে ব্যবস্থা করুন। চিঠির সাথে পাঠানো পাঁচটি কবিতার সাথে পরে প্রবন্ধ ইত্যাদি লিখার প্রতিশ্রুতি দিয়ে লিখলেন, ‘লেখা দিয়ে আপনার সব ধার পরিশোধ করে দেব। না হয় ক্যাশে ক্যাশে শোধ করতে গেলে ছ-সাত মাস (তার বেশী নয়) দেরী হতে পারে।’ ভাগ্য সেখানেও বিরূপ জীবনানন্দের। তাঁর কবিতার একান্ত অনুরক্ত মরমী সে সম্পাদকের আর্থিক অবস্থা তখন এতোই খারাপ যে, তাঁর পত্রিকাটিও বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম। ফলে মানসিকভাবে এতটাই বিপর্যস্ত ছিলেন তিনি যে, জীবনানন্দের চিঠির জবাব দেওয়া তাঁর পক্ষে সম্ভব হয়নি।
ঠেকায় পড়ে জীবনানন্দ ভেবেছিলেন ছাতার বাঁটের ব্যবসা করবেন, পারেননি। জীবনবীমার দালাল হতে চেয়েছিলেন, তাও পারেন নি। এমনও সময় এসেছিল তাঁর জীবনে যখন তিনি রাস্তায়-রাস্তায় খবরের কাগজের হকারি করতেও চেয়েছিলেন।
জীবনানন্দ গবেষক ভূমেন্দ্র গুহর ভাষায়, ‘এই সময় তিনি কর্মহীনতার দৈনন্দিন বিড়ম্বনায় অত্যন্তই বিভ্রান্ত ছিলেন, দারিদ্রের ও পরমুখাপেক্ষিতার কারণে হতাশাগ্রস্থ, অপমানহত, আত্মধিক্কার পীড়িত।” ইংরেজিতে এম. এ। তাই অবশেষে পড়ানোর প্রতি দারুণ অনিহা সত্ত্বেও অধ্যাপনার চাকরিই কপালে জুটলো এবং শেষ জীবন পর্যন্ত তা-ই করে গিয়েছেন।
দাম্পত্য জীবনের শুরু থেকেই বনিবনা হয়নি স্ত্রী লাবন্যের সাথে। সংসারে আর্থিক সচ্ছলতা ছিল না। কলেজের বেতনাদি সে সময় এতই কম ছিল যে, সংসারের স্বাভাবিক সাচ্ছল্যটুকুও ধরে রাখা যেত না। শেষে সংসারের আর্থিক অনটনের কারণেই শিক্ষিতা কবিপত্নী শিক্ষকতায় নামলেন। এদিকে জীবনানন্দ তখনও আত্মমগ্ন। কাজের প্রতি স্বামীর এই অনীহা প্রসন্ন করেনি লাবন্যকে। ফলে বে-সুর বেজেই চলছিল সংসারে। হয়তো তাই মনে মনে সিংহল সমুদ্র আর মালয় সাগর ঘুরে দু’দণ্ড শান্তির খোঁজে জিরোতে চেয়েছেন তিনি বনলতা সেন নাম্নি কল্পিত কোনো মানুষীর মুখোমুখি বসে, যে শুধু তাঁর কবিতায়। বাস্তবে স্ত্রী লাবণ্য ছাড়া আর একটি মাত্র রমণীর প্রতি তাঁর দুর্বলতার প্রমাণ পাওয়া যায়। হতে পারে সে-ই তাঁর ‘বনলতা সেন’ চরিত্র সৃষ্টির উৎস্‌ যদিও তার প্রকৃত নামটি আজও কেউ জানে না। জীবনানন্দ শুধু তাঁর খুড়তুতো বোনের বান্ধবীটিকে তাঁর দিনলিপিতে “ণ” অক্ষরে চিহ্নিত করে রেখেছেন। যা দেখে মনে হয়, অধরা এই রহস্যময়ী নারীও হতভাগ্য কবির সাথে কৌতুক করেছেন।
জীবনানন্দের উপন্যাসের নায়কেরা প্রায়ই বেকার। উপার্জন নেই। তার চেয়েও বড় কথা তাদের কর্মতৎপর হবারও কোনো ইচ্ছে নেই। ঠিক যেন নিজের জীবনের প্রতিফলন ঘটিয়েছেন তিনি তার নায়ক চরিত্রগুলোতে। জীবনের অনেক কিছু থেকে বঞ্চিত হয়ে নেশাগ্রস্ত এই বোহেমিয়ান নায়কেরা দিনের পর দিন আত্মমগ্ন আলস্যে জীবনকে ক্ষয় করে ফেলেছে।
সমসাময়িক কালের অনেক বেশি পরিচিত ও প্রতিষ্ঠিত অন্যান্য কবি সাহিত্যিকরা, যেমন: প্রেমেন্দ্র মিত্র, অচিন্ত কুমার সেন, অমিয় চক্রবর্তী, বিষ্ণু দে’র চেয়ে বয়সে বড় ছিলেন জীবনানন্দ। কিন্তু তখনও তাঁর কবিতা পত্র-পত্রিকা থেকে ফেরত আসতো। নতুন কবিতা সংকলনে তাঁর স্থান হতো না। আধুনিক কবিদের বিষয়ে রচিত প্রবন্ধে তাঁর নাম উল্লেখ থাকতো না। উঁচু-ভ্রু সম্পাদক সুধীন্দ্রনাথ দত্ত তো পছন্দই করতেন না জীবনানন্দের কবিতা। বাংলা ভাষায় আধুনিকতার সঞ্চার বা কাব্যের মৌলিক পরিবর্তন যা তিনি করেছিলেন তা সমসাময়িককালে ছোট্ট একটি গোষ্ঠীর বাইরে সমাদৃত হয়নি মোটেও। সুধীন্দ্রনাথ দত্তের মতো অনেকেই ভুল বুঝেছেন, বিরক্ত হয়েছেন। ফলশ্রুতিতে উৎসাহ ও সমাদরের পরিবর্তে ভাগ্যে জুটেছে উপহাস আর বিদ্রুপ। ধরতে গেলে তার ছাপান্ন বছরের সেই যাপিত জীবনে খ্যাতি-যশ এসব কিছুই মেলেনি, পাননি স্বীয় কীর্তির স্বীকৃতি। শুধু একবার একটি একশো এক টাকার পুরস্কার ছাড়া।
ক্রমাগত লিখে গেছেন। শব্দের সাঁজিতে এক এক করে তুলে নিয়েছেন সমগ্র প্রকৃতিকে। হয়েতো বা রবীন্দ্রনাথের মতো তাঁরও বিশ্বাস ছিল উপস্থিতকালের বিচারটাই শেষ কথা নয়। আশা ছিল, পরির্বতনের ধারায় একদিন না একদিন মূল্যায়িত হবে তাঁর রচনা। সত্যিকারের সফল আজ তিনি। উত্তরকাল প্রত্যাখ্যান করেনি তাঁকে। বরং সাগ্রহে গ্রহণ করেছে যেখানে তাঁর সমসাময়িক বিখ্যাত ও প্রতিষ্ঠিতদের অনেকেই আজ বিস্মৃতির অন্তরালে তলিয়ে গেছেন, সেখানে তাঁর কাব্যের ক্রমবর্ধমান সমাদর সেই সাক্ষ্যই বহন করছে।
জীবনানন্দ দাশ। সবচে’ নির্জন, সবচে’ স্বতন্ত্র কবি। বাংলা কবিতার প্রধান ঐতিহ্য থেকে বিচ্ছিন্ন তিনি স্বভাবে লাজুক; ফলে কোনো সাহিত্যিক গোষ্ঠীভুক্ত হয়ে দেশ-বিদেশে আত্মরচনার আয়োজন কখনোই করতে পারেননি। অকস্মাৎ মৃত্যুর প্রায় ষোল বছর পর ‘জীবনানন্দ দাশের গল্প’ শিরোনামে তিনটি গল্পের কৃশকায় এক সংকলন যা প্রকাশের আগ পর্যন্ত গদ্যকার হিসেবে অনালোচিতই থেকে গেছেন তিনি। বুদ্ধদেব বসু বলতেন, ‘তিনি শুধু কবিতা লেখেন, গল্প কিংবা প্রবন্ধ লেখেন না।’ পরবর্তীতে নরেশ গুহও লিখেছেন, ‘তিনি শুধুই কবিতা লিখেন, কবিতা ছাড়া আর কিছু লেখেন নি।’ ফলে ১৯৫৬ সালে মৃত্যুর দুই বছর পর গল্পকার হিসেবে হঠাৎই আবির্ভূত হন তিনি। তাঁর সেসব রচনা এতটাই উত্তরকালের দীর্ঘ বিস্তৃতির সাথে মিশে আছে যে, সেসব রচনার রচয়িতা যে প্রয়াত এটা ভাবতেও এক অকল্পনীয় বিস্ময়বোধ জাগে। কল্যাণী উপন্যাসে তাঁর আধুনিকতম মানসিকতার পরিচয় মেলে। জীবৎকালে গদ্য লেখক হিসেবে যার সামান্যতম পরিচয়ও কেউ জানতে পারেনি আজ মৃত্যুর চল্লিশোর্ধকাল অতিক্রম করে তিনি বাংলা কথা সাহিত্যের যেন এক অজ্ঞাত পূর্বধারা উম্মোচন করে দিলেন।
জীবৎকালে কবিতার গণ্ডির বাইরে নিজেকে প্রকাশের অসীম কুন্ঠা ছিল তাঁর। নীরবে শুধু তাঁর সকল আয়োজন করে গেছেন সযতনে। উদ্ধারকৃত ট্রাঙ্কভর্তি পাণ্ডুলিপি তারই সাক্ষ্য বহন করে।
ব্যক্তিজীবনে চির রহস্যাবৃত এই মানুষটির সৌন্দর্যবোধ ছিল নৈসর্গোত্তীর্ণ। সুন্দর অসুন্দরের সীমারেখায় জীবন-কল্পনার এক অদ্ভুত অভিব্যক্তি ধরা পড়ে তাঁর ‘মৃণাল’ উপন্যাসটির রোগাক্লান্ত নায়িকা মৃণালের সংলাপে যা জীবন ও মৃত্যুর মাঝখানে দাঁড়িয়ে আশ্চর্য এক উপলব্ধির ঃ ‘পৃথিবীতে সুন্দর কোনদিনই শেষ হয় না। নীল আকাশ থাকবে, নক্ষত্র থাকবে, ভোর থাকবে, রোদ থাকবে, রোদের মাছি থাকবে। হাজার হাজার বছর পরও এমনই ফাল্‌গুনের বিকেলের পড়ন্ত রোদের ভিতরে হয়তো কোন যক্ষারোগীর ঘরে এমনই মাছিগুলো ডানা কাঁপাবে, উড়বে, খেলবে, জীবনের গভীর স্পৃহা ও আনন্দে বিচিত্র হয়ে থাকবে।’

১৪ অক্টোবর ১৯৫৪। বিকেলবেলা প্রায় রোজকার মত বেড়াতে বেরিয়ে ট্রামের নীচে পড়ে গিয়ে গুরুতরভাবে আহত হলেন তিনি। ভর্তি হলেন পন্ডিত শম্ভুনাথ হাসপাতালে, ইমারজেন্সি ওয়ার্ডে। দুর্ভাগ্য শেষ পর্যন্তও পিছু ছাড়লো না তাঁর। ঠিক সাতদিন পর ২২ অক্টোবর কার্তিকের মৃদু কুয়াশা নামায়িত এক বিকেলে চিরতরে স্তব্ধ হলো তাঁর হৃদস্পন্দন। পার্থিব জীবন যাপন ছেড়ে প্রকৃতির বুকেই ঝ’রে গেলেন ঠিক তাঁর কবিতারই প্রতিশব্দ হয়ে – ‘যদি আমি ঝ’রে যাই একদিন কার্তিকের নীল কুয়াশায়…’
জীবনানন্দ নেই। তবুও আজও হেমন্ত আসে; হেমন্ত এসে পড়ে। ধূসর চাদর পড়া সন্ধ্যা নামে আজও কোনও র্কীতিনাশার তীরে। বাংলার মাঠ, প্রান্তরের ঘাস, আম-বট-অশ্বত্থের বন, জলসিঁড়ি-ধলেশ্বরীর শান্ত জল, অপরাজিতার মতো নীল হয়ে আসা অপার সৌন্দর্যের আকাশ, শালিখ-খঞ্জনাসহ প্রকৃতি উম্মুখ প্রতীক্ষায় থাকে একজনের। যে তাদের কানে কানে শুনিয়ে গেছে ‘আবার আসিব ফিরে…’

tuhin.dkhokah@gmail.com

পূর্ববর্তী নিবন্ধচালকের খামখেয়ালিতে প্রাণ গেল ৮ বছরের শিশুর
পরবর্তী নিবন্ধবনফায়ারের স্মৃতি