দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, কষ্টে আছেন সাধারণ মানুষ

এম সোলাইমান কাসেমী | মঙ্গলবার , ২৮ মার্চ, ২০২৩ at ৫:২২ পূর্বাহ্ণ

দেশে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি যেন মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা। বেশ কিছুদিন থেকে সংবাদ মাধ্যমে উঠে আসছে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম লাগামহীন। মধ্যবিত্ত নিম্নমধ্যবিত্ত সাধারণ মানুষ আছেন অনেক কষ্টে। বিভিন্ন সিন্ডিকেট করে পণ্যের দাম বাড়ানোর কথাও বারবার উঠে এসেছে এসব প্রতিবেদনে। এত সংবাদের পরও সিন্ডিকেট যেন দিন দিন বটগাছে রূপ নিচ্ছে। একদিকে সাধারণ মানুষের হাহুতাশ বাড়ছে, অন্যদিকে লাভবান হচ্ছে শুধুই অসাধু সিন্ডিকেটগুলো। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিরোধে প্রয়োজন কঠোর বাজার মনিটরিং। বিগত কয়েক মাসের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দামের বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, নিত্যপণ্যের দাম আগের চেয়ে বেড়ে দ্বিগুণ পর্যন্ত হয়েছে।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বরাবরই আন্তরিক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন মানুষের সাবলীল সুন্দর জীবনযাপনের জন্য। কিন্তু একটি অসাধু সিন্ডিকেট বার বার সরকারকে জনগণের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দেওয়ার প্রয়াস চালাচ্ছে। এই কাজে অসাধু সিন্ডিকেটটি অধিকাংশে সফলও বলা চলে। তাই সরকারের উচিত পবিত্র মাহে রমজানে আইন প্রয়োগের মাধ্যমে এই সিন্ডিকেটের মূলোৎপাটন করা। সবকিছুর দাম বর্তমানে অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে। এভাবে প্রায় সব পণ্যের দাম হু হু করে বেড়ে সাধারণ ক্রেতাদের নাগালের বাইরে যাওয়া উপক্রম হয়েছে। তাছাড়া উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ার অজুহাতে শাকসবজিসহ উৎপাদনশীল প্রতিটি পণের দাম কয়েক গুণ বেড়েছে। অথচ, উৎপাদনকারী কৃষক তাদের ন্যায্য মূল্য থেকে সর্বদা বঞ্চিত হয়। সেখানেও মধ্যস্বত্বভোগী অসাধু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট তৎপর। এসব অসাধু ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা তেমন চোখে পড়ে না। তার ওপর বাড়িভাড়া, বিদ্যুৎ বিল, পানির বিল, গ্যাস বিল/ সিলিন্ডার খরচ, গাড়ি ভাড়া, চিকিৎসা খরচ বিভিন্ন সেবা প্রাত্যহিক নানা খরচসহ জীবনযাপন সংশ্লিষ্ট সব খরচও বেড়েছে কয়েক গুণ।

অতি দ্রুত সিন্ডিকেটগুলো ভেঙে পণ্য সরবরাহ বাড়াতে হবে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা ও মজুদদারি কঠোরভাবে দমন করতে হবে সারা দেশে। বাজার মনিটরিং জোরদার, অসম প্রতিযোগিতা কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা, একক কোনো ব্যবসায়ী গোষ্ঠীর কাছে ব্যবসার বিশেষ সুবিধা আটকে না যাওয়াএসব বিষয় নিশ্চিত করতে হবে। কৃষক টু ভোক্তার একটি শক্তিশালী চেইন তৈরিতে উদ্যোগ গ্রহণ, অতি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের ক্ষেত্রে বিশেষ ভর্তুকি দেওয়ার বিষয়টি ভাবা যায়। সবচেয়ে বড় বিষয়, সিন্ডিকেটে জড়িতদের লাইসেন্স বাতিল করে তাদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে জেল জরিমানার বিধান নিশ্চিত করতে পারলেই দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির লাগামে টান পড়বে বলে বিশ্বাস করি। আর তাতে জনমনে আসতে পারে স্বস্তি। অন্যথায় সাধারণ মানুষ নীরবে কান্না করেই যাবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধওয়ারিশ সনদপত্র লাভে বিড়ম্বনা
পরবর্তী নিবন্ধআত্মশুদ্ধি হোক তাদের, যারা লোকদেখানো দান করে