দীর্ঘমেয়াদে বিদ্যুতের চাহিদা পূরণে রূপপুরের পর আরেকটি পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের পরিকল্পনার কথা জানিয়ে সেজন্য জায়গা খোঁজার কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশকে যেন আর কখনো পিছিয়ে পড়তে না হয়, এ দেশের ওপর আর কখনো যেন কোনো দশকুনির থাবা না পড়ে, সেজন্য সরকার বাংলাদেশকে উন্নত, সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে কাজ করে যাচ্ছে। গতকাল রোববার গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে পাবনার রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রথম ইউনিটে রিঅ্যাক্টর প্রেশার ভেসেল বা পরমাণু চুল্লিপাত্র স্থাপনের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। খবর বিডিনিউজের।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা দক্ষিণ অঞ্চলে জায়গা খুঁজছি। দক্ষিণ অঞ্চলে শক্ত মাটিওয়ালা জায়গা পাওয়া খুব কঠিন। তারপরও বিভিন্ন জায়গায় আমরা সার্ভে করছি যে আরেকটা পাওয়ার প্ল্যান্ট আমরা করব। এখন যদি আমরা আরেকটা নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্ট করতে পারি, তাহলে বিদ্যুতের জন্য আর কোনো অসুবিধা আমাদের হবে না। তারপরও আমরা বহুমুখী বিদ্যুৎ উৎপাদন করে যাচ্ছি এই জন্য যে বিদ্যুৎ সুবিধাটা মানুষ যেন পায়, এটা যেন অব্যাহত থাকে।
তিনি বলেন, আমাদের লক্ষ্য বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। অর্থাৎ আমরা এখন পরমাণু শক্তির একটা অংশ হিসেবে বাংলাদেশ আজকে… আমি বলব সেখানে একটা স্থান আমরা করে নিতে পারলাম এবং সেটা শান্তির জন্য। এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পরমাণু শক্তি আমরা শান্তির জন্য ব্যবহার করছি।
তিনি আরও বলেন, সরকার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন করছে। পাশাপাশি স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপিত হচ্ছে এ বছর। একই সময়ে নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্টের কাজ এগিয়ে নিয়ে যেতে পারা বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গৌরবের। বাংলাদেশের জন্য আজকে এটা সত্যিই খুব গুরুত্বপূর্ণ দিবস। আজকের এই দিনটি শুধু বাংলাদেশ নয়, আমার ব্যক্তিগত জীবনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আজকের দিনটি সত্যিই আমাদের জন্য খুবই একটা আনন্দের দিন।
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, ২০১৩ সালে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠকে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের তেজস্ক্রিয় বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিয়েও তার কথা হয়েছিল। সেখানে আমার কতগুলো প্রশ্ন ছিল, আমরা এটা করার পর এটার নিরাপত্তা এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনা। কারণ বাংলাদেশ ঘনবসতিপূর্ণ, এখানে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা করাটা সম্ভব নয়। আমাদের যে চুক্তি হয়, তাতে এটাও নিশ্চিত করা হয়, এর বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সব সময় রাশিয়া নিজেই করবে। সেই বিষয়গুলো আমরা নিশ্চিত করি।
পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের ফলে বাংলাদেশের নিজস্ব দক্ষ জনবলও তৈরি হচ্ছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, আমরা এখন উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি। কিন্তু এখানে থেমে গেলে চলবে না। দেশকে এগিয়ে নিতে শত বছরের ডেল্টা প্ল্যান করার কথা তুলে ধরেন তিনি।











