দেশ হতে দেশান্তরে

সেলিম সোলায়মান | রবিবার , ২০ নভেম্বর, ২০২২ at ১০:০৬ পূর্বাহ্ণ

মিথ্যা ও মিথের জয়জয়াকার

এরই মধ্যে ফ্লাস্কের পানি যথেষ্ট গরম হয়ে সেটি অটোম্যাটিক বন্ধ হয়ে যেতেই আমাদের তিনজনের তিন কাপে সে পানি ঢালতে ঢালতে পুত্রদের উদ্দেশ্যে বললাম -বুঝলে বাবারা, কখন কারো সাথে কোন সময়ের ব্যাপারে একমত হলে, পারলে দশ বিশ মিনিট আগে যেও, কিন্তু কখনোই এক মিনিট পরে গিয়ে কোন অজুহাত দিও না জীবনে। দেখছো না, রিপোর্টিং টাইম মিস না করার জন্য, লি খাঁ কেমন আগেই চলে এসেছে।

সময়ানুবর্তীতা বিষয়ক ছোট্ট এই লেকচারের জবাবে পুত্রদ্বয়ের নিরবতায় বুজতে পারলাম না, এটা কি মৌনং সম্মতি লক্ষনং, নাকি মোটেও তারা পাত্তা দেয়নি এ লেকচারকে। তবে এটা বুঝলাম পরিষ্কার যে এখন আর লেকচার দিয়ে কাজ নেই। ফলে এরই মধ্যে নিজ হাতে তৈরি করে ফেলা তিন কাপ রং চায়ের, এক কাপ হেলেন আরেক কাপ লাজুর দিকে এগিয়ে দিতেই , নিজের জন্য সংরক্ষিত তৃতীয় কাপটির দিকে নির্দেশ করে অভ্র বলে উঠলো : “বাবা, আমি কি চা খেতে পারি?”
ঠিক আছে তুমি নাও ওটা, বলতে বলতে চতুর্থ কাপে নিজের জন্য ফ্লাস্কে থেকে গরম পানি ঢালতে ঢালতে, ফের সবাইকে মনে করিয়ে দিলাম যে চা খেয়েই, সারাদিনের জন্য বেরিয়ে পড়ার জন্য ঝটপট তৈরি হতে হবে সকলের।

নাহ এবারেও পাত্তা পেল না আমার এই তাড়া দেওয়া মার্কা কথাও। অতএব এ ব্যাপারে কথা আর না বাড়িয়ে ঝটপট নিজের কাপে গরম পানি ঢেলে তাতে হোটেলের রুমের সাথে মুফতে পাওয়া নানান ধরনের গোটা দশেক টি ব্যাগের মধ্য থেকে শুকনো ক্যামোমিল ফুলভরা একটা মিনিজালিব্যাগ বেছে নিয়ে গরম জলে তা চুবিয়ে, মনে মনে ডুব দিলাম আসন্ন মহাপ্রাচির ভ্রমণ বিষয়ে ।

তাতে এ নিয়ে প্রথমেই যে কথাটা ফের মনে পড়লো তা হলো ছোটবেলাকার বহুলশ্রুত সেই কথাটি, যে কথা মোতাবেক স্থিরবিশ্বাস করতাম যে কেউ যদি চাঁদে গিয়ে ওখান থেকে পৃথিবীর দিকে তাকায় তবে হাজার হাজার বছর ধরে এই গ্রহে মানুষ যতো স্থাপনা বানিয়েছে তার মধ্যে নাকি শুধু এই মহাপ্রাচীরই দৃষ্টিগোচর হবে সে লোকের! পরে জেনেছিলাম কথাটা মোটেও ঠিক না। এটা আসলে একটা মিথ্যা কথা। না ঠিক মিথ্যা বলাও মনে হয় ঠিক না এ কথাকে , এটিকে সম্ভবত বলা উচিৎ মিথ।

আরে মিথ আর মিথ্যার মধ্যে শব্দের গঠনগত ও উচ্চারণগত পার্থক্য খুব একটা বেশী না দেখছি! এ তো আগে খেয়াল করিনি! যদিও শব্দ দুটো দু ভাষার, তারপরেও অর্থ তাদের তো মোটামুটি কাছাকাছিই। পার্থক্য একটাই মিথ্যা আমরা সবাই নানান সময়ে বললেও, যখনই কেউ ধরা পড়ে যে সে মিথ্যা বলছে তবে ব্যাপারটা খুব দোষের ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায় । অথচ এই মিথের কোন সত্যতা নেই জানলেও মানুষ তা নিয়ে তেমন গা তো করেই না, বরং মজা পায় । শুধুই মজাই পায় না কায়মনে বিশ্বাস ও করে! আচ্ছা, কখন কি অবস্থায় কোন মিথ্যা মিথে পরিণত হয় ?

এই মনু তুমি কি যাবে আমাদের রুমে , গেলে চল , আমি যাচ্ছি রেডি হয়ে আসতে দীপ্রর উদ্দেশ্যে বলা হেলেনের এই কথার পিঠাপিঠি ওর উদ্দেশ্যে বর্ষিত হলো এসময় মাতৃআজ্ঞা

এই দীপ্র, এই কাপড়গুলো নিয়ে যাও। ভেতরে যা পড়েছ সব বদলে এই ফ্রেশগুলো পড়বে । আর হাতে পায়ে ভালমতো লোশন মেখে নেবে “উত্তরে পুত্রের চেহারায় বেশ বিরক্তির ছাপ দেখা গেলেও , সে বিরক্তি কোন শব্দ বা ধ্বনিতে পরিণত না হওয়াতে স্বস্তি পেলাম বড়ই।

হেলেন আর দীপ্র রুম থেকে বেরিয়ে যেতেই ছোটপুত্রকে আসন্ন হিমযাত্রার জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত করার জন্য,ওকে নিয়ে ঢুকলো লাজু বাথরুমে।

ইতোমধ্যে নিজহাতে ধরা কাপের কথিত নানান ধরনের গুরুত্বপূর্ণ ভেষজগুন সম্পন্ন হালকা সুগন্ধের ক্যামোমিল ফুলের রস মিশ্রিত জল, যা চা না হয়েও পেয়ে গেছে চা নামের অভিধা তা অনেকটাই ঠাণ্ডা হয়ে গেছে। সেই খুবই হালকা গরম রসে চুমুক দিতে দিতে মনে হল, নাহ এ সময় আসলে দরকার ছিল ঘন গরুর দুধে গাঢ় লিকার মিশিয়ে বানানো তোফা এক কাপ চা। কিন্তু তা তো আর পাওয়া যাবে না, অতএব এই স্বাস্থ্যকর ভেষজরসই গিলি, কি আর করা?

সব কিছুরই খাওয়ার বা পান করার একটা নিয়ম আছে। ঠাণ্ডা শ্যাম্পেন, রেড বা হোয়াইট ওয়াইন যেমন ঠাণ্ডা হলেও যেমন সুড়ুৎ করে একবারে গিলে ফেলা নেহাতই গ্রাম্যতার লক্ষণ, তেমনি গরম চাও ঠাণ্ডা জল হয়ে গেলেও তা খেতে হয় ছোট ছোট চুমুকে। এছাড়া সামাজিক নিয়মের ব্যত্যয় করা সমাজ যে মোটেও পছন্দ করে না, তা যেহেতু ঢুকে আছে নিজের অজান্তেই হাড়েমজ্জায়, সে কারণে এই রুমে এ মুহূর্তে কোন সামাজিক পুলিশের উপস্থিতি না থাকা সত্ত্বেও, ছোট ছোট চুমুকে হাতে ধরা ক্যামোমিল ভেষজ রসের কাপে চুমুক দিতে দিতে ভাবনায় হল ফের মহাপ্রাচিরমুখো।

এতে নানান সময়ে এ বিষয়ে যা পড়েছি তা থেকে যতোটা মনে পড়লো, তাতে মনে হল এই মহাপ্রাচীরের সবচেয়ে পুরানো অংশটি তৈরি করা হয়েছিল দুই হাজার বছরেরও বেশী সময় আগে। সন তারিখ এসব মনে রাখার ব্যাপারে নিজের চরম অনীহার কারণে স্কুলে ইতিহাস বড়ই অপছন্দের বিষয় ছিল আমার। ঐ সময় পরীক্ষায় ভালো নম্বর তোলার জন্য কিছু সন তারিখ মুখস্থ করার তুমুল চেষ্টা করলেও, পরবর্তীতে তা আর মোটেও করিনি। ফলে চীনেরপ্রাচির ঠিক কোন অব্দে তৈরি হয়েছিল তা পড়ে থাকলেও, মনে করতে পারছি না সঠিক। তবে তা যে দুই হাজার বছরেরও আগে হয়েছে তা নিশ্চিত। এ তথ্য ঠিকই পরিষ্কার মনে পড়ছে যে তখনো খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বিদের ত্রাতা ও তাদের বিশ্বাস মোতাবেক ঈশ্বরপুত্র যিশু জন্ম নেননি কুমারী মেরির গর্ভ থেকে বেথেলেহেমে। অর্থাৎ মহাপ্রাচির তৈরির মহাযজ্ঞ শুরু হয়েছিল খ্রিস্টের জন্মের পূর্বেই, তবে তা কতো পূর্বে হয়েছিল, সন তারিখ মনে রাখার ব্যাপারে নিজের তুমুল অনীহার কারণে এ মুহূর্তে তা মনে করতে পারার তো কোন কারণই নেই।

এই যাহ! একটু আগে যখন মহাপ্রাচীর বিষয়ক চিন্তা শুরু করেছিলাম, তখন কি না প্রথমেই মনে পড়েছিল তা নিয়ে মিথ্যা একটা প্রচলিত কথা, আর এখন কি না পড়লাম ফের যিশুখৃস্ট বিষয়ক মিথের পাল্লায় । অবশ্য গোঁড়া খৃস্টানের কাছে যদি বলি যিশু নিয়ে প্রচলিত বিশ্বাসের অনেক কিছুই আসলে মিথ তা হলে তো খবর আছে। ইউরোপীয় রেনেসাঁর আগে মধ্যযুগেএ কথা বললে তো ধার্মিক খৃস্টানরা আমাকে আগুনে পুড়িয়ে মেরে, নিজেদের স্বর্গপ্রাপ্তি একদম নিশ্চিত করে ফেলতো!
নাহ,এ নিয়ে ভাবাও ঠিক না এখন আরো। এ গ্রহের দিকে দিকে এই একবিংশ শতাব্দির ডিজিটাল সড়ক বেয়ে ফের ছড়িয়ে পড়েছে মধ্যযুগ দ্রুত গতিতে, যার প্রধানতম একটা গন্তব্য হলো আমারই নিজের দেশ। অবিশ্বাসী বা নাস্তিক তো দূরের কথা আজ দেশে একজন তুমুল বিশ্বাসী ধর্মপ্রাণ এবং ধর্মভীরু প্র্যাক্টিসিং মুসলমানও হঠাৎ সামান্যতম কৌতূহলী হয়ে নিজ ধর্মের কোন মিথের ব্যাপারে যদি প্রশ্ন তুলে, তবে ধর্মান্ধজঙ্গির হাতে প্রাণ হারায় সে বেঘোরে, নিমিষে! সবচেয়ে উদ্বেগের ব্যাপার হলো এ ধরনের হত্যাকাণ্ড কিনা পায় সংখ্যাগরিষ্ঠের তুমুল নিরব সমর্থন! আসলে মিথ্যা ও মিথেরই জয়জয়াকার এখন চারিদিকে।

“বাবা, আমরা তো আজ আগে ফিরে আসবো অ্যাপেল স্টোরে যাওয়ার জন্য। অ্যাপেল স্টোরের পর কি আমরা পেট স্টোর খুঁজে দেখতে পারি?”
বেইজিঙয়ের হিমসাগরে ঝাপ দেয়ার জন্য ধড়াচূড়া পড়ে একদম প্রস্তুত হয়ে আমার গা ঘেঁষে এসে বসা অভ্রের এই প্রশ্নে বুঝলাম দু ভাই অ্যাপল স্টোরে যাওয়ার চুম্বক টানে ইতিমধ্যেই নিজেরা একমত হয়েছে যে, ফিরতে হবে আজ আগে। এ ব্যাপারে দীপ্রই যে ছোটভাইকে দলে টেনেছে তা সহজেই বোধগম্য । কারণ বিটস হেড ফোন তো সেই কিনবে। যে কোন কারনেই হোক অভ্র নিজেকে এখনও ঐ রকম হেডফোন দাবী করার মতো বয়সে পৌঁছেছে বলে মনে যে করে না। সেটা আমার পকেটের জন্য একটা স্বস্তিরই ব্যাপার। তবে সেই কুনমিং থেকে বেইজিংমুখি যাত্রার শুরুতে, দেশে ফেলে আসা ওর নেড়ি কুকুরের বাচ্চা প্লুটোর কথা মনে পড়ায়, তার জন্য কিছু কেনার জন্য যে সংকল্প সে মনে মনে করলেও, ঐ উসিলায় দ্রুত ফিরে আসার প্রস্তাব দেয়া যে খুব একটা পাত্তা পাবে না কারো কাছে তাও হয়তো সে নিজে নিজেই বুঝে নিয়েছে। বরং ভাইয়ার অ্যাপেল স্টোরের দাবীকে সমর্থন করলে, অনায়াসে যে নিজের ইচ্ছা পূরণেরও উপায় হবে, সে কারনেই কি সে অকুণ্ঠ সমর্থন জানিয়েছে ভাইয়াকে? অবশ্য এটাও ঠিক যে অ্যাপেলের ব্যাপারে তার নিজেরও কম আগ্রহ নেই। বরং ঐ ব্রান্ডের নানান গ্যাজেটের ব্যাপারে ভাইয়ার চেয়ে সেই বেশী রাখে খবর। সেক্ষেত্রে এমনিতে হলেও ওখানে যাওয়ার ব্যাপারে তার একটা উত্তেজনা থাকারই কথা।

এদিকে পুত্রের এই আবদারের জবাবে একবার ভাবলাম, বলি আকাট সত্য কথা , যে আমাদের আজকের প্রধান লক্ষ্য হলো ঘোরাঘুরি। অতএব ঐ ব্যাপারে কোন ছাড় দেয়া যাবে না। তবে আশা করা যায় ঘোরাঘুরি করে সন্ধ্যায়ও যদি ফিরি তখনো অ্যাপেল স্টোর খোলা পাওয়া যাবে।

কিন্তু একটু আগের মিথ ও মিথের সংকট তখনো মাথায় ঘোরাফেরা করছিল বলেই , সত্য কথাটা ঐরকম সরাসরি বলে ওর মন খারাপ করে দিতে ইচ্ছে হলো না। আসলে আকাট সত্য হজম করার ক্ষমতা মানুষের খুবই কম । মানুষ বর্তমানে বিভোর থাকে হয় অতীতের মিথ্যা,মিথ ও গল্প নিয়ে কিম্বা ভবিতব্যের নানান কল্পনায় ও আশায় ।

ফলে সত্য বলে পুত্রের আশাভঙ্গের কারণ না হওয়ার নিমিত্তে ওকে জড়িয়ে ধরে, বললাম ঠিক আছে। আচ্ছা বাবা তোমার কি প্লুটোর কথা সারাক্ষণই মনে পড়ছে?
“হ্যাঁ বাবা”।

“আমি রেডি। বাথরুমে যেতে হলে তুমি যাও এখন , তবে তার আগে ঐ রুমে দীপ্র ঠিকঠাক মতো জামা কাপড় পড়েছে কি না , তার একটু খোঁজ নিয়ে আসবে কি ?“ অভ্রের নিম্নস্বর ছাপিয়ে এসময় রুমে স্ত্রী আজ্ঞা জারী হতেই ঠিক আছে, ঠিক আছে দেখছি ওটা, বলতে বলতে বরং বাথরুমেই ঢুকতে ঢুকতে ভাবছি বলি ওকে আচ্ছা এই ফাঁকে তুমিই গিয়ে একটু দেখে আসো না । সাথে সাথেই মনে হল এমনিতেই সকালে উঠিয়া আমি মনে মনে প্রতিজ্ঞা করিয়াছিলাম যে কোন মতেই আজ স্ত্রী আজ্ঞার ব্যতিক্রম কিছু বলবো না, তারপরেও স্বভাবদোষে একটা ফাউল করে ফেলেছিলাম। ফলে হলুদ কার্ড পেয়েছি একটা। এখন আবার দ্বিতীয় ফাউল করে লাল কার্ডের শনি কেন ডাকি আনি আর নিজের ঘাড়ে!

খুব বেশী সময় লাগলো না নিজের নিতান্তই বাড়তি সাবধানতামূলক বাথরুম বিষয়ক ক্রিয়াকর্ম সম্পাদনে। বেশ দ্রুতই তাই স্নানাগার থেকে বেরিয়ে মাথায় উলের টুপি বসিয়ে গায়ের তিন চার স্তরের গরম কাপড়ের উপর মোটা জ্যাকেট চাপিয়ে , জ্যাকেটের পকেটে গ্লোভস ঢুকিয়ে, নিজের সার্বক্ষণিক ভ্রমণসঙ্গী পাসপোর্ট সহ নানান জরুরী কাগজপত্র ধারন করা কাঁধব্যাগটি নেবার জন্য, রুমের ভেতরে পা বাড়াতেই, দরজায় সুরেলা কণ্ঠ বেজে উঠতেই, দরজা খুলে দিতেই হুড়মুড় করে দীপ্র রুমে পড়লো।

“কি রেডি না তোরা? যাবো কি আমরা এখন?’ জিজ্ঞেস করলো দীপ্রর পিছু পিছু এসে দরজার মুখে দাঁড়আন জামাকাপড়ে বেঢপ সাইজ হয়ে যাওয়া হেলেন!
হ্যাঁ আমরাও রেডি। এক্ষুণি বেরুবো বলতে বলতে মনে হল, আচ্ছা কালও তো হেলেন অন্যান্যদের তুলনায় ঢের বেশিই পড়েছিল কাপড়। কিন্তু কাল তো ওর আকৃতি এরকম বেঢপ হয়নি। আজ কেন এরকম মনে হচ্ছে, এ কথা ভাবতে ভাবতে, দ্বিতীয়বার ওকে আগাগোড়া জরীপ করতেই পেয়ে গেলাম উত্তর।
লেখক : প্রাবন্ধিক, ভ্রমণসাহিত্যিক

পূর্ববর্তী নিবন্ধহতাশায় ও কাব্য বাঁচুক
পরবর্তী নিবন্ধনারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নের শক্তিশালী কেন্দ্র