দুর্ভোগের নাম বাগিচাহাট

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে যানজট

চন্দনাইশ প্রতিনিধি | রবিবার , ২৬ ডিসেম্বর, ২০২১ at ৪:৫৮ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের চন্দনাইশ উপজেলার হাশিমপুর ইউনিয়নের বাগিচাহাট। বাগিচাহাটে ঐতিহ্যবাহী খান জামে মসজিদ ও মসজিদের উত্তর পাশে কদম রসুল (দঃ) শরীফ থাকায় এখানে জিয়ারত বা দর্শনের জন্য প্রতিদিন আগমন করেন শত শত মুসল্লি। তাছাড়া মসজিদের দক্ষিণ পাশে হযরত শেরে জামান খাঁন (রহঃ)সহ মোট ২২ জন আউলিয়ার মাজার এবং মসজিদের পশ্চিম পাশে হযরত সৈয়দ শাহ আমির (রহঃ) আউলিয়ার মাজার শরীফ বিদ্যমান থাকায় বাগিচাহাট ঐতিহ্যবাহী ও দর্শনীয় স্থান হিসেবে অধিক পরিচিত। কিন্তু এই বাগিচাহাট এখন যানজটের নতুন আতঙ্ক হয়ে উঠেছে। প্রতিদিন এখানে যানজটে নাকাল হতে হয় স্থানীয় ও দূরপাল্লার যাত্রীদের। যানজটে আটকা পড়লেই বাগিচাহাট অংশটি পাড়ি দিতে সময় লাগে কমপক্ষে অর্ধঘণ্টা। সাপ্তাহিক হাটের দিনে এখানে যানজট আরো তীব্র আকার ধারণ করে। এসময় যানজট দীর্ঘ হয়ে সড়কের উভয় পাশে শত শত যানবাহন আটকা পড়ে।
বাগিচাহাটে কেন এই যানজট? এর উত্তর খুঁজতে কথা হয় স্থানীয় ব্যবসায়ী ও সাধারণ যাত্রীদের সাথে। মূলত বাগিচাহাটের মূল পয়েন্ট থেকে পশ্চিম দিকে চলে গেছে বৈলতলী-বরমা সংযোগ সড়ক ও পূর্ব দিকে চলে গেছে হাশিমপুর রেলওয়ে স্টেশন সংযোগ সড়ক। ফলে চার রাস্তার সংযোগস্থলে পরিণত হয়েছে বাগিচাহাটের মূল কেন্দ্রটি। সপ্তাহের শুক্রবার ও সোমবার (স্থানীয় হাটের দিন) হওয়ায় বাগিচাহাটে যানজট তীব্র আকার ধারণ করে।
একদিকে বাগিচাহাট অংশে মহাসড়ক অত্যন্ত সরু। অপরদিকে মহাসড়ক ঘেঁষেই গড়ে তোলা হয়েছে বিভিন্ন স্থাপনা। এর মধ্যে মহাসড়কের উপর যত্রতত্র সিএনজি অটোরিকশা, ত্রি-হুইলার স্ট্যান্ড, মহাসড়কের দু’পাশ দখল করে অপরিকল্পিতভাবে দাঁড়িয়ে বাস-মিনিবাসে যাত্রী উঠা-নামা ইত্যাদি কারণে দিনদিন যানজট তীব্র আকার ধারণ করছে। ফলে বাগিচাহাটের ব্যবসায়ী, পথচারী, শিক্ষার্থী ও দূরপাল্লার যাত্রীদের নিয়মিত দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
স্থানীয় ব্যবসায়ী মো. বদিউল আলম জানান, চট্টগ্রাম-কঙবাজার জাতীয় মহাসড়কটি দেশের ব্যস্ততম একটি মহাসড়ক। এই মহাসড়ক থেকে বৈলতলী-বরমা সংযোগ সড়কের মুখে এবং হাশিমপুর রেলওয়ে স্টেশন সংযোগ সড়কের মুখে সিএনজি অটোরিকসা ও ব্যাটারি চালিত রিকসা দাঁড়িয়ে থাকায় সড়ক দুটিতে বড় গাড়ি প্রবেশের সময় আটকে পড়ে। এতে স্বাভাবিকভাবে মহাসড়কে চলাচলরত যানবাহনগুলো বাঁধারমুখে পড়ে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। পাশাপাশি বাগিচাহাট অংশে মহাসড়কের পূর্ব পাশে আইল্যান্ড দেয়ার ফলে মহাসড়ক একদম সরু হয়ে গেছে। বিপরীতমুখী দুটি বড় গাড়ি সাইট দিতে গিয়েও অনেক সময় আটকে পড়ে। এছাড়া যাত্রীবাহী পিকআপ গুলো যাত্রীর আশায় প্রায় ১৫ থেকে ২০ মিনিট সড়কপাশ দখল করে দাঁড়িয়ে থাকে। ফলে যানজট সৃষ্টি হয়। হাটের দিন বাগিচাহাটে মানুষের আনাগোনা বৃদ্ধি ফলে যানজট আরো তীব্র হয়ে উঠে। এই অবস্থায় তিনি বাগিচাহাট অংশে ট্রাফিক পুলিশি ব্যবস্থা চালুর দাবিও জানান। পাশাপাশি দুই সড়কের মুখে দাঁড়িয়ে থাকা সিএনজি অটোরিকশা ও ব্যাটারি চালিত রিকশাগুলো সরিয়ে নিলে যানজট কমে আসবে। দখল করে নেয়া মহাসড়কের জায়গা উদ্ধার করে সড়ক প্রশস্ত করার উপরও গুরুত্বারোপ করেন এবং মহাসড়কের পূর্ব পাশে স্থাপিত আইল্যান্ডটিও তুলে ফেলার দাবি জানান।
পরিদর্শনে দেখা যায়, বাগিচাহাট অংশে মহাসড়ক ঘেঁষেই বিভিন্ন স্থাপনা গড়ে তোলা হয়েছে। আর যাত্রীদের বিশ্রামের জন্য নির্মিত যাত্রী ছাউনিটিও দখল করে সিএনজি অটোরিকশা চালক সমিতির কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। ফলে সেখানেও যাত্রীদের বসার কোন পরিবেশ নেই।

পূর্ববর্তী নিবন্ধআত্মশুদ্ধির মাধ্যমে সুখ-শান্তির প্রত্যাশা
পরবর্তী নিবন্ধলালদীঘি এলাকায় জলদস্যু নেতা গ্রেপ্তার