রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ির সাজেক ইউনিয়নের দুর্গম লংথিয়ান পাড়ায় ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে গবতি বালা ত্রিপুরা (৫০) ও দরুং ত্রিপুরা (৬০) নামে দুই পাড়াবাসীর মৃত্যু হয়েছে। গতকাল বুধবার ভোরে গবতি বালা ত্রিপুরা ও দুপুর ১টায় দরুং ত্রিপুরার (৬০) মৃত্যু হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করে বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুমানা আক্তার বলেন, ঘটনাস্থলটি অত্যন্ত দুর্গম। ইতোমধ্যে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ওষুধ, স্যালাইন ও বিশুদ্ধ পানি নিয়ে একটি টিম রওনা হয়েছে। সেখানে হেঁটে যেতে ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা সময় প্রয়োজন। কালকে (বৃহস্পতিবার) সকালে তারা পৌঁছাতে পারে।
জানা যায়, লংথিয়ান পাড়ায় ২০ জন ও আশপাশের বিভিন্ন গ্রামে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে আরো অর্ধ শতাধিক মুমূর্ষু অবস্থায় রয়েছেন। আক্রান্তদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। এলাকায় আশপাশে কোনো হাসপাতাল বা কমিউনিটি ক্লিনিক না থাকায় স্থানীয়রা চিকিৎসাসেবা পান না।
সাজেক ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য বনবিহারী চাকমা জানান, গত এক সপ্তাহ ধরে সাজেকের লংথিয়ান পাড়া, অরুণ পাড়া, কাইজা পাড়া, রায়না পাড়া ও শিয়ালদহ এলাকাসহ আশপাশের বেশকিছু এলাকায় ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। এলাকায় যাতায়াতের কোন সড়ক যোগাযোগ ব্যাবস্থা না থাকায় পায়ে হেঁটে মাচালং ও উপজেলা সদর হাসপাতালে রোগী পাঠানো সম্ভব নয়। হেলিকপ্টারের মাধ্যমে যদি মেডিকেল টিম পাঠানো যায় তাহলে দ্রুত চিকিৎসা সেবা দেয়া সম্ভব হবে। দ্রুত চিকিৎসা সেবা না পেলে মৃতের সংখ্যা বাড়ার শঙ্কা রয়েছে। সাজেক ইউপি চেয়ারম্যান অতুলাল চাকমা বলেন, বৃষ্টি হওয়ার পর ছড়ার দূষিত পানি পান করায় ঐ পাড়ায় ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে ২ জন মারা গেছেন। ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য জোপুইথাং ত্রিপুরা জানান, দুর্গম শিয়ালদহ এলাকায় ১০ থেকে ১২ জন ডাইরিয়া রোগী রয়েছে। ছড়ার পানি থেকে এই রোগ ছড়িয়েছে। ২০১৬ সালে এখানে ডাইরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ৬ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। পরে সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টারে মেডিকেল টিমের দীর্ঘ এক মাসের চিকিৎসায় ডায়রিয়া নিয়ন্ত্রণে আসে। এবারও দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে রোগীর সংখ্যা ও মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে।
বাঘাইছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেঙের মেডিকেল অফিসার ডা. অরবিন্দু চাকমা বলেন, ইতোমধ্যে ৪ সদস্যদের একটি মেডিকেল টিম সাজেকের উদ্দেশে রওনা হয়েছে। সাজেকের কংলাক পাড়া থেকে পায়ে হেটে ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে একদিন লাগবে।