দুদককে নিজের ঘরে অভিযান চালাতে বললেন রাষ্ট্রপতি

আজাদী ডেস্ক | শুক্রবার , ১০ ডিসেম্বর, ২০২১ at ৬:৩৮ পূর্বাহ্ণ

দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) নিজেদের ঘর থেকে দুর্নীতিবিরোধী অভিযান শুরু করতে বলেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস ২০২১ উপলক্ষে গতকাল বৃহস্পতিবার দুদক আয়োজিত এক আলোচনা সভায় দেওয়া ভিডিও বার্তায় এ কথা বলেন তিনি। দুর্নীতি দমনে দুদককে আরও দৃঢ়তার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের নির্দেশনা দিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, দুর্নীতিবাজ যে দলেরই হোক, দুর্নীতি করলে তাকে আইনের আওতায় আনতে হবে। আগামী দিনগুলোতে দুদককে দুর্নীতি দমনে আরও দৃঢ়তার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে হবে। আমি আশা করব, আপনারা নিজেদের ঘর থেকেই এ অভিযান শুরু করবেন। কিছুসংখ্যক লোকের জন্য যাতে পুরো দুর্নীতি দমন কমিশনের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখবেন।
আবদুল হামিদ বলেন, কমিশনের সব পর্যায়ের কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি দুর্নীতি দমন কার্যক্রমে তারা যেন সর্বোচ্চ নিরপেক্ষতা ও নৈতিকতা প্রদর্শন করেন। অন্যের দুর্নীতি চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনার আগে নিজেদের অনিয়ম ও অসততা দূর করতে হবে। ‘যারা রাষ্ট্র কর্তৃক অর্পিত দায়িত্ব ও ক্ষমতার অপব্যবহার করবে তাদের কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করে প্রচলিত আইনের মাধ্যমে বিচারের আওতায় আনতে হবে।’
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালা অডিটরিয়ামে অনুষ্ঠিত এ আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ।
প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন তার বক্তব্যে বলেন, আমি নবীন ছেলে-মেয়েদের উদ্দেশ্যে বলছি, তারা তাদের পিতা-মাতার কাছে বিনয়ের সাথে জানতে চাইবে যে, তাদের পিতা-মাতার বেতন-ভাতা কত? তাদের মাসিক আয় কত, মাসিক ব্যয় কত? তাদের সংসার কীভাবে চলে, তারা কীভাবে বিলাসবহুল জীবন-যাপন করে। পরিবারের সদস্যদের মধ্যে থেকে দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানিয়ে মাহমুদ হোসেন বলেন, দুর্নীতিবাজদের পারিবারিক, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয়ভাবে বয়কট করতে হবে। তরুণ প্রজন্ম দুর্নীতির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ালে দেশ দুর্নীতিমুক্ত হতে বাধ্য।
দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ বলেন, দুর্নীতিবাজদের প্রভাব-প্রতিপত্তির মোহে তাদের সাথে সম্পর্ক স্থাপন করতে সমাজের অনেক মানুষ মুখিয়ে থাকে। এভাবে সামাজিকভাবে ঘুষ ও দুর্নীতিকে গ্রহণযোগ্যতা দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু দুর্নীতিবাজদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেওয়া ও সম্মান করা অপরাধ, এই বোধটি সমাজে জাগিয়ে তুলতে হবে। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দিকে দুর্নীতির আঙুল তোলা হয়ে থাকলেও তাদেরকে দুর্নীতিগ্রস্ত করতে লোভী ব্যক্তিরা প্রলুব্ধ করে থাকে।
তিনি বলেন, দুর্নীতিগ্রস্ত বলতে আমরা সাধারণত সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দিকে আঙ্গুল তুলি, কিন্তু আমাদের ভুলে গেলে চলবে না, প্রতিটি অনৈতিক লেনদেনের টেবিলের অন্যপ্রান্তে কেউ না কেউ থাকে। সরকারি কর্মচারীদের দুর্নীতিগ্রস্ত করতে লোভী ব্যক্তিগণ প্রলুব্ধ করে এবং ক্ষমতাশালীগণ ভীতি প্রদর্শন করে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধদুর্নীতি প্রতিরোধে সবাইকে শামিল হতে হবে
পরবর্তী নিবন্ধকৌতুক কণিকা