দুই মামলা, গ্রেপ্তার আরো ১৯

জামালখানে বঙ্গবন্ধুর দেয়ালচিত্র ভাঙচুর ও কলেজ গেটে সংঘর্ষ

আজাদী প্রতিবেদন | শুক্রবার , ১৬ জুন, ২০২৩ at ৪:৩৭ পূর্বাহ্ণ

নগরীর জামালখানে বঙ্গবন্ধুর দেয়ালচিত্র ভাঙচুর ও নাশকতার দুই মামলায় নগর ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি মো. নওশাদ আল জাসেদুর রহমান আরো ১৯ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তারের পর নওশাদ থেকে একটি দেশীয় একনলা বন্দুক উদ্ধার করা হয়। এর আগে গত বুধবার বিকেলে পাঁচ যুবদল কর্মীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে সিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন) আ স ম মাহতাব উদ্দিন এই তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, আমরা ইতোমধ্যে নিশ্চিত হয়েছি যে, বুধবার জামালখান এবং আসকারদীঘির পাড়ে নাশকতার ঘটনা চান্দগাঁওবাকলিয়া থেকে আসা মিছিলকারীরাই ঘটিয়েছে।

এ ঘটনার পরপরই পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, হামলার নেতৃত্ব দিয়েছেন নওশাদ আল জাসেদ নামে এক যুবদল নেতা। তাকে গ্রেপ্তারের পর আমরা ঘটনায় জড়িতদের সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারি। জামালখানে দেয়ালচিত্র ভাঙচুরের ঘটনায় কোতোয়ালী থানায় একটি মামলা হয়েছে। এছাড়া চট্টগ্রাম কলেজ গেটে ছাত্রলীগ কর্মীদের সঙ্গে যুবদলছাত্রদল নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনায় চকবাজার থানায় আরেকটি মামলা হয়েছে। কোতোয়ালী থানায় ৭৮ জন ও চকবাজার থানায় ৬০ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ২০০ থেকে ২৫০ জনের নামে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার আ স ম মাহতাব উদ্দিন বলেন, নওশাদ আল জাসেদ মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি। তিনি বঙ্গবন্ধুর দেয়ালচিত্র ভাঙচুর মামলার অন্যতম আসামি। গতকাল (বুধবার) রাত সাড়ে ৯ টায় চান্দগাঁও থানাধীন মৌলভী পুকুর পাড় এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। নওশাদের বিরুদ্ধে নগরীর চান্দগাঁও থানায় ১৬টি নাশকতার মামলা আছে বলে পুলিশ জানায়।

এ ঘটনায় চান্দগাঁও, কোতোয়ালী, বাকলিয়া ও চকবাজার থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে ২৪ জনকে গ্রেপ্তার করে। পরে নওশাদ আল জাসেদের দেয়া তথ্যমতে রাত ৩টায় কোতোয়ালী থানাধীন গোয়ালপাড়া রোডের অফিসারস ক্লাবের পশ্চিম পাশে একটি ক্লিনিকের সামনে টিনের বেড়ার পাশে ঝোঁপের ভেতর থেকে একটি এক নলা বন্দুক উদ্ধার করা হয়।

নওশাদ ছাড়া গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে আছেন১৮ নম্বর বাকলিয়া ওয়ার্ড ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মো. মাহবুব সিদ্দিকী, ১৮ নম্বর ওয়ার্ড ৪ নম্বর ইউনিট ছাত্রদলের সভাপতি মো. এরফান, যুবদলকর্মী নুরুল ইসলাম ওরফে মাসুম, মহিউদ্দিন হাসান ইমন, চান্দগাঁও থানা যুবদল কর্মী মো. ইমন খান, আকরাম হোসেন আকিব, আবু সিদ্দিক রুবেল, জাহেদ গিয়াস, মো. আল আমিন, মো. ইকবাল, মো. মানিক, জয়নাল আবেদীন, মো. সবুজ, মো. সাহেদ, নুরুল হক, মো. রিয়াদ, মঈন উদ্দিন, আশিক আহমেদ নয়ন, মো. জুয়েল ও মো. বশির। এদের মধ্যে মাহবুব, এরফান, মাসুম, মহিউদ্দিন হাসান ইমন ও ইমন খানকে ঘটনার পরপর অভিযান চালিয়ে কোতোয়ালী থানা পুলিশ গ্রেপ্তার করে।

ভাঙচুরের ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে কোতোয়ালী থানায় মামলাটি করেছে। চট্টগ্রাম কলেজ গেইটে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় চকবাজার থানায় মামলাটি করেছেন শাফায়েত হোসেন রাজু নামে এক যুবক। জিজ্ঞাসাবাদে আসামি জাসেদ জানান, কাজির দেউড়ি মোড় এলাকায় বিএনপি আয়োজিত দেশ বাঁচাতে তারুণ্যের সমাবেশকে কেন্দ্র করে দেশের মধ্যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির লক্ষ্যে জামালখান এলাকায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ দেশের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের দেয়াল চিত্র ভাঙচুরের ঘটনার নেতৃত্ব দেন তিনি। তার বিরুদ্ধে কোতোয়ালী থানায় মামলা করা হয়েছে।

আ স ম মাহতাব উদ্দিন বলেন, বুধবার (১৪ জুন) বিকেলে বিএনপির তারুণ্যের সমাবেশে যাওয়ার পথে যুবদলছাত্রদলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের প্রথমে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরে একই মিছিল থেকে কোতোয়ালী থানার জামালখান এলাকায় বিভিন্ন দেয়ালে অঙ্কিত বঙ্গবন্ধুর বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের স্থিরচিত্র সম্বলিত চল্লিশটি ট্যাম্পার্ড গ্লাস ম্যুরাল, নৌকার প্রতীক ভাঙচুর করা হয়। জামালখানে ভাঙচুর করে যাওয়ার পথে আসকারদীঘি এলাকায় আঞ্চলিক লোক প্রশাসন কেন্দ্রের কাঁচের নাম ফলক, সিসি ক্যামেরা ও মানবতার দেয়াল ভাঙচুর করে। তিনি আরও বলেন, ঘটনার পরপরই নগরীর কোতোয়ালী, চকবাজার, বাকলিয়া ও চান্দগাঁও এলাকায় পুলিশ ও মহানগর গোয়েন্দা বিভাগ অভিযান চালিয়ে ২৪ জনকে গ্রেপ্তার করে। চান্দগাঁও থেকে মোট ১৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানান অতিরিক্ত কমিশনার মাহতাব। বাকিদের গ্রেপ্তার করা হয় চকবাজার, বাকলিয়া থানা এলাকা থেকে। সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে যারা নাশকতা করেছে বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারেও অভিযান চলছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধনিউজপ্রিন্টের সিন্ডিকেট তৈরি হয়েছে এটা ভাঙতে হবে : তথ্যমন্ত্রী
পরবর্তী নিবন্ধভিটামিন-এ প্লাস ক্যাম্পেইন ১৮ জুন