পূর্বের জের ধরে ফের সংঘর্ষে জড়িয়েছে শাখা ছাত্রলীগের উপগ্রুপ বিজয়ের দুই পক্ষের নেতাকর্মীরা। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা পৌনে ছয়টায় সংঘর্ষ শুরু হয়ে প্রায় ঘণ্টাখানেক চললে পুলিশ পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে। এতে সোহরাওয়ার্দী হলের প্রভোস্টের কক্ষসহ ৮–১০টি কক্ষ ভাঙচুর করে আলাওল–এফ রহমান হলে অবস্থানরত বিজয়ের অনুসারীরা। এর আগে গত সোমবার মধ্যরাতে সংঘর্ষে জড়ায় এ দুই পক্ষ।
জানা যায়, উপগ্রুপ বিজয়ের অনুসারীরা দুই ভাগে বিভক্ত। এক পক্ষ আলাওল হল ও এএফ রহমান হল ও অপরপক্ষ সোহরাওয়ার্দী হলে অবস্থান করে। গত ২০ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাতের সংঘর্ষের পর উভয় পক্ষের মধ্যে চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছিলো। এ ঘটনার জেরে গতকাল আলাওল হল ও এএফ রহমান হলে অবস্থানরত বিজয় গ্রুপের কর্মীরা সোহরাওয়ার্দী হলে অবস্থানরত কর্মীদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এর পর পরেই দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। একপক্ষ সোহরাওয়ার্দী হলের ছাদে ও অপরপক্ষ সোহরাওয়ার্দী হলে মাঠে অবস্থান নিয়ে একে অপরের দিকে ইট পাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। এসময় আলাওল হল ও এফ রহমান হলের নেতাকর্মীরা সোহরাওয়ার্দী হলে প্রবেশ করে প্রভোস্টের কক্ষসহ ৮–১০টি কক্ষ ভাঙচুর করে। পরে পুলিশ ও প্রক্টরিয়াল বডি ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের মোট ৪ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
রাত সাড়ে নয়টা পর্যন্ত উভয় পক্ষই নিজ নিজ হলের সামনে সতর্ক অবস্থানে আছে। পুলিশও ঘটনাস্থলে মোতায়েন রয়েছে। ক্যাম্পাসে থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে।
এ বিষয়ে বিজয় গ্রুপের সোহরাওয়ার্দী হল অংশের নেতা শাখা ছাত্রলীগের সহ–সভাপতি নজরুল ইসলাম সবুজ আজাদীকে বলেন, আমাদের ছেলেরা কেউ মাঠে খেলতেছিল, কেউ রুমে ঘুমাচ্ছিল। আর প্রশাসন আমাদের আশ্বাস দেওয়ায় আমরা চুপচাপ ছিলাম। এমন সময় তারা জামাত–শিবির স্টাইলে অতর্কিত হামলা চালায়। প্রভোস্টের রুম, আবাসিক শিক্ষকদের রুমসহ অনেকগুলো রুম ভাঙচুর করে। প্রশাসনের নিকট এর সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি।
আলাওল হলে অবস্থানরতদের নেতা শাখা ছাত্রলীগের উপ–আপ্যায়ন বিষয়ক সম্পাদক নয়ন চন্দ্র মোদক বলেন, একুশের প্রথম প্রহরে আমরা শহীদ মিনারে ফুল দিতে যাওয়ার সময় তারা পথ আটকে আমাদের ছেলেদের মারধর করে। পাশাপাশি ক্লাসে, খেলার মাঠেসহ বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন সময় হল থেকে বের করে দিবে বলে হুমকি দেয়। আজ (গতকাল) তারা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আলাওল হলের দিকে আসলে সংঘর্ষ শুরু হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর (ভারপ্রাপ্ত) ড. শহীদুল ইসলাম বলেন, ঘটনা জানার সাথে সাথেই আমরা পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হই। সবাইকে যার যার হলে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। পরিস্থিতি এখন শান্ত আছে। গত ২০ তারিখের ঘটনায় যে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল তারা এ ঘটনা নিয়েও খতিয়ে দেখবে। দোষীদের ব্যাপারে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এর আগে আলাওল হলে রুম দখলকে কেন্দ্র করে গত ২০ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাত ১ টার দিকে সংঘর্ষে জড়ায় এ দুই পক্ষ। এ ঘটনায় অন্তত ১৫ জন আহত হয় বলে জানা যায়। অপরদিকে ঘটনায় দোষীদের আইনের আওতায় আনার লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শাহ আমানত হলের প্রভোস্ট প্রফেসর নির্মল কুমার সাহাকে আহ্বায়ক করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। এতে সদস্য হিসেবে আছেন আলাওল হলের আবাসিক শিক্ষক ড. মো: মাসুদ আল কামাল এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর হাসান মুহাম্মদ রোমান।