‘ত্রুটি’ দেখিয়ে পদোন্নতি বোর্ড থেকে ডিনের পদত্যাগ

চবির সেকশন অফিসার পদোন্নতি

চবি প্রতিনিধি | শুক্রবার , ২৬ নভেম্বর, ২০২১ at ৭:১০ পূর্বাহ্ণ

চবির পদোন্নতির নিয়োগ বোর্ড থেকে পদত্যাগ করেছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন প্রফেসর এস এম সালামত উল্যা ভূঁইয়া। আইনি জটিলতা ও সামাজিক ঝুঁকির কারণ দেখিয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বরাবর পদত্যাগপত্র দেন তিনি।
সূত্রে জানা যায়, চবি ঊর্ধ্বতন সহকারী/সমমানের পদ থেকে সেকশন অফিসার/সমমানের পদোন্নতির জন্য আবেদন সম্পন্ন করেছে গত ২১ নভেম্বর। এতে ৫৮ জন সাক্ষাৎকারের জন্য আবেদন করেছেন। এই ৫৮ জনের পদোন্নতির জন্য আবেদনপত্র সাক্ষাৎকারের আগে যাচাই-বাছাইের জন্য নিয়োগ বোর্ডের সদস্যদের কাছে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু গতকাল বৃহস্পতিবার পদোন্নতি প্রার্থী ছিলেন প্রায় ১০০ জন। এর মধ্যে সাক্ষাৎকার নিয়েছেন ৮০ জনের।
জানা যায়, ২১ নভেম্বরের পর গত দুইদিনে অন্তত ৫০ জনকে ‘অবৈধভাবে’ সাক্ষাৎকারপত্র দেয়া হয়েছে। এদের মধ্যে অনেকেই পদোন্নতির মেয়াদ অপূর্ণ ও পদোন্নতির অযোগ্য বলে জানা গেছে। আবেদনের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও কিভাবে তারা সাক্ষাৎকারপত্র পেলেন, সেটা নিয়ে রয়েছে প্রশ্ন। আবার অনেকে অবৈধভাবে পদোন্নতি পেতে নানাভাবে তদবির করছেন বলেও জানা গেছে। এছাড়া উপাচার্য নিজ ক্ষমতা বলে পদোন্নতির নির্বাচনী বোর্ডে সিন্ডিকেট মনোনীত সদস্যের বাইরে প্রশাসন বিশেষজ্ঞ হিসেবে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. রবিউল হাসান ভুঁইয়াকে। যা নিয়ম বহির্ভূত।
পদত্যাগ পত্রে প্রফেসর এস এম সালামত উল্যা ভূঁইয়া বলেন, ‘পদোন্নতি নিয়োগ বোর্ডে প্রক্রিয়াগত ত্রুটির কারণে আইনি জটিলতা ও সামাজিক ঝুঁকি সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করছি। এ অবস্থায় ব্যক্তিগত নিরাপত্তার কারণে আমি উক্ত নির্বাচনী বোর্ড থেকে পদত্যাগ করছি।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের এক জ্যেষ্ঠ শিক্ষক বলেন, পদোন্নতির আবেদনের জন্য নির্দিষ্ট তারিখ থাকার কথা। ওই তারিখে আবেদন সম্পন্ন করেই বোর্ড ডাকা হয়। এর মধ্যে যারা আবেদন করেন তারাই সাক্ষাৎকারে অংশগ্রহণ করেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর এস এম মনিরুল হাসান বলেন, পদোন্নতির নিয়োগ বোর্ডে কোনো অনিয়ম হয়নি। ৫৮ জন আগে আবেদন করেছেন, বাকিদের পরে যোগ করা হয়েছে এবং সকল শর্ত পূরণ করে তারা আবেদন করেছেন। এটার আবেদনের কোনো নির্দিষ্ট সময় থাকে না। কেউ যদি পদোন্নতি বোর্ডের একদিন আগেও আবেদন করেন, তাহলে সাক্ষাৎকারে অংশ নিতে পারবেন।
তিনি বলেন, ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিনের পদত্যাগপত্র পেয়েছি। কিন্তু তিনি যে ত্রুটি দেখিয়েছেন সেরকম কোনো ব্যত্যয় ঘটেনি। উনি উনার দৃষ্টিকোণ থেকে বলেছেন, কেন বলেছেন আমি জানি না। নিয়ম অনুযায়ী যারা বোর্ডের সদস্য তাদেরকে ডাকা হয়েছে। প্রক্টরকে পদোন্নতি নিয়োগ বোর্ডে আমন্ত্রণ জানানোর ব্যাপারে তিনি বলেন, উপাচার্য আমন্ত্রণ জানালে প্রক্টর থাকতে পারেন।
এ ব্যাপারে উপ-উপাচার্য ও নিয়োগ বোর্ডের সদস্য প্রফেসর বেনু কুমার দে আজাদীকে বলেন, উপাচার্য চাইলে প্রশাসনিক বিশেষজ্ঞ কাউকে রাখতে পারেন। এর আগে এরকম হয়েছে অনেক। এ ব্যাপারে রেজিস্ট্রার ভালো বলতে পারবেন বলে তিনি ফোন রেখে দেন। নিয়োগ বোর্ডের সভাপতি হিসেবে আছেন উপাচার্য প্রফেসর শিরীণ আখতার। আর সদস্য হলেন, উপ-উপাচার্য প্রফেসর বেনু কুমার দে, রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) এস এম মনিরুল হাসান, ব্যবসায় অনুষদের ডিন প্রফেসর সালামত উল্যা ভুঁইয়া এবং কলা অনুষদের ডিন প্রফেসর মহীবুল আজিজ।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকলেজছাত্রীকে চিরকুট, বাস হেলপার গ্রেপ্তার
পরবর্তী নিবন্ধটেকনাফে মেয়র পদে চাচা-ভাতিজা মুখোমুখি