দূর থেকে দেখে এটি খেজুর গাছ তা কেউই ভাববে না। মোটাসোটা আর লম্বায় তাল গাছের সমান এই খেজুর গাছটি মীরসরাই উপজেলার উপকূলীয় বগাচতর গ্রামের কৃষক দেলোয়ারের। প্রায় ২০ বছর ধরেই এই গাছ থেকে রস আহরণ করছে দেলোয়ার। প্রতিরাতে তিন হাড়ি রস পাওয়া যায় এই খেজুর গাছ থেকে। যা স্বাভাবিক খেজুর গাছের রস আহরণের প্রায় ৫ গুন।
লম্বায় অন্তত ৫০ ফুট উঁচু এই খেজুর গাছটি প্রায় ৫ তলা বাড়ির সমান উপরে মাথা। গোড়ার দিকে প্রস্থ অন্তত ৫ বর্গফুট। যা একটি তাল গাছকেও হার মানায়। সাধারণত গাছিরা খেজুর গাছে কোমরে দড়ি বেঁধে পা দিয়ে কাটা অংশ বেয়ে বেয়ে ওঠে। কিন্তু এতো মোটা ও উঁচু গাছে সেভাবে উঠার সুযোগ নেই। তাই গাছি দেলোয়ার গাছের সাথে বড় জাতের (ভাইরা) বাঁশ বেঁধে দিয়েছে। বাঁশের গিরায় গিরায় পা দিয়ে বেয়ে উপরে উঠছেন হাড়ির রশি ও থালি পরিস্কার করতে। তিন হাড়ি রস পড়ে বলে বড় ড্রামই বসিয়ে দেন তিন। নয়তো কয়েকবার নামাতে হয় হাড়ি। স্থানীয় বড়াচতর বেড়ি বাঁধের উপরের এই খেজুর গাছটি অবস্থিত।
গাছি দেলোয়ার (৪৫) বলেন, গাছটি শুরু থেকেই তুলনামূলক বেশি মোটা হওয়ায় অনেক বছর হাড়িও বসাইনি। পরে কষ্ট হলেও পরীক্ষামূলকভাবে হাড়ি বসাই। তখন ভাল রস পেয়েছি। এরপর থেকে গত ২০ বছর ধরেই এই গাছ থেকে রস আহরণ করছি। তবে ভাল রস পড়ে বলে প্রায়ই চোরচক্র এই গাছের রস চুরি করে ফেলে। তাই আমাকে কখনো কখনো পাহারাও দিতে হয়। পাহারা দিলে প্রতিদিন এই গাছ থেকে প্রায় ১৫ লিটার রস পাওয়া যায়। সেগুলো প্রায় ৬০০ টাকা বিক্রি করা যায়। সেই হিসেবে একটি গাছ থেকেই দুই মাসে ৩৬ হাজার টাকার রস পেয়ে থাকি।