ঢাকা নিউমার্কেটে উড়ছে সাদা পতাকা

ছেলে ব্যবসায়ীও না, ছাত্রও না, কেন মারল ওরে : নাহিদের পিতা

| বৃহস্পতিবার , ২১ এপ্রিল, ২০২২ at ১০:১৬ পূর্বাহ্ণ

শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দোকানকর্মীদের ব্যাপক সংঘর্ষের পর ঢাকার নিউ মার্কেট এলাকার বিপণি বিতানগুলোর ছাদে এখন উড়ছে সাদা পতাকা। এর মাধ্যমে ‘আর সংঘর্ষ নয়, শান্তি চাই’ এই বার্তা দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন দোকানিরা। গত মঙ্গলবার প্রথম প্রহর থেকে দিনভর নিউ মার্কেট এলাকার বিভিন্ন বিপণি বিতানের দোকানকর্মীদের সঙ্গে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের দফায় দফায় সংঘর্ষে ওই এলাকা রণক্ষেত্রে রূপ নেয়। এই সংঘর্ষে এক পথচারী নিহত হন, আহত হয় অর্ধ শত ব্যক্তি। সংঘর্ষের কারণে মঙ্গলবার সারাদিনে ওই এলাকার প্রায় ৭৫টি বিপণি বিতানের কোনো দোকান খোলেনি। খবর বিডিনিউজের।

গতকাল বুধবার সকালে পরিস্থিতি আপাত শান্ত হওয়ার পর ওই এলাকা বিভিন্ন বিপণি বিতানের ছাদে সাদা পতাকা উড়তে দেখা যায়। ঢাকা কলেজের বিপরীতে ধানমণ্ডি হকার্স মার্কেটের উপরে তিনটি সাদা পতাকা, নূর ম্যানশনের ছাদে দুটি, নিউ মার্কেটের বিপরীতে গাউছিয়া মার্কেটের ছাদে একটি, ইসমাইল ম্যানশনের ছাদে দুটি পতাকা উড়তে দেখা যায়।

ধানমণ্ডি হকার্স মার্কেটের ‘নীলিমা শাড়ি’ দোকানের এক কর্মচারী বলেন, অনেক ক্ষতি হয়েছে গত দুই দিনে, আর ক্ষতি চাই না। তাই শান্তির প্রতীক হিসেবে ছাদে পতাকা ওড়ানো হয়েছে। নূর ম্যানশনের ‘সালোয়ার কামিজ’ দোকানের মালিক শহিদুল বলেন, দুই বছর করোনাভাইরাসের কারণে কাবু হয়ে গেছি, আর এই ঈদেই যা একটু ব্যবসা হয়। অন্য সময় কোনোরকম চলি- সমান সমান, লাভ হয় না।

ঈদের আগে কেনা-বেচায় যখন সরগরম থাকার কথা নিউ মার্কেট এলাকা, তখন এই সংঘর্ষের কারণে ব্যবসায়ীদের মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। নিউ মার্কেটের ব্যবসায়ীরা দোকান খুলতে চাইলেও সংঘর্ষের ঘটনার সমাধান করার আগে দোকান খোলা হলে আবারও বিক্ষোভে নামার হুঁশিয়ারি দিয়েছে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা। এর মধ্যে বিকেলে ঢাকা কলেজের সামনে কয়েকটি হাতবোমার বিস্ফোরণ ঘটে। এরপর মিরপুর সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়, যা সকালে শুরু হয়েছিল।

ছেলে হত্যার বিচার চান না নাহিদের বাবা : ‘আমি তো জানি না কে মারছে, কারা মারছে? কার কাছে বিচার চাইব? কোনো মামলায় করতে চাই না। মামলা করলে পরে কী হয় কে জানে? আমরা নিরীহ মানুষ, কোনো ঝামেলায় যেতে চাই না।’ ছেলে যাচ্ছিল কর্মস্থলে, সে না ব্যবসায়ীদের পক্ষে, না ছাত্রদের। কেন তার ওপর হামলা হবে, কারা এই কাজ করছে- এসব প্রশ্নের কূল-কিনারা করতে পারছেন না নিউমার্কেটে সংঘর্ষে প্রাণ হারানো নাহিদ মিয়ার বাবা নাদিম হোসেন। আগের রাতে প্রাণ হারানো নাহিদের ময়নাতদন্ত হয়েছে গতকাল বুধবার। সে সময় ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছিলেন নাদিম মিয়া। ছলছল চোখে শুধু একবার এক দিকে, আরেকবার অন্যদিকে তাকিয়ে কাকে যেন খুঁজছিলেন তিনি। নাদিম বলেন, ও (নাহিদ) কাজে যাইতেছিল। নিউ মার্কেট আইসা আটকা পড়লে লোকজন ঘিরে ধরে মারে। আমার ছেলে তো ব্যবসায়ীও না ছাত্রও না। ওরে কেন মারল। আমার ছেলের কী দোষ?

পূর্ববর্তী নিবন্ধপুঁইছড়িতে অভিযানে দুটি ট্রাকসহ ৩ হাজার ঘনফুট বালি জব্দ
পরবর্তী নিবন্ধগ্যাস সিলিন্ডার লিকেজ থেকে অগ্নিকাণ্ড, শিশুর মৃত্যু