ড. মইনুল ইসলামের কলাম

| বৃহস্পতিবার , ১৯ নভেম্বর, ২০২০ at ১০:০২ পূর্বাহ্ণ

বাংলাদেশের কয়েকটি পুঁজিপতি গোষ্ঠী বেশ কয়েকবছর ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে জোর তদবির করে চলেছেন তাঁদেরকে দেশের ব্যাংকঋণ নিয়ে বিদেশে বিনিয়োগ করার অনুমতি প্রদানের জন্য। এটা অত্যন্ত অন্যায় আবদার হলেও যেহেতু প্রধানমন্ত্রীর সাথে তাঁদের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে তাই অদূর ভবিষ্যতে তাঁদেরকে এরকম অনুমতি দেওয়া হলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। ইতোমধ্যেই কয়েকটি শিল্পগোষ্ঠীকে নাকি বিদেশে বিনিয়োগ করার জন্য সরকার কিংবা বাংলাদেশ ব্যাংক অনুমতি দিয়েছে, আবার কয়েকটি গ্রুপকে অনুমতি দেওয়া হয়নি। কী কারণে একেক গ্রুপের প্রতি একেক রকম আচরণ করা হচ্ছে তা আমার জানা নেই। কিন্তু আমার দৃঢ় বিশ্বাস, অর্থনীতির বর্তমান বাস্তবতায় যে কোন পুঁজিপতি গোষ্ঠীকে বাংলাদেশের ব্যাংকিং সিস্টেম থেকে ঋণ নিয়ে বৈধভাবে বিদেশে বিনিয়োগের সুযোগ দেওয়া বড় ধরনের ভুল। পুঁজি পাচারকে সরকারি লাইসেন্স দেওয়ার শামিল হবে ব্যাপারটি। বাংলাদেশের অর্থনীতির বিনিয়োগ পরিস্থিতির বর্তমান বাস্তবতায় এটা একটা জাতিদ্রোহিতামূলক সিদ্ধান্ত হবে।
দেশের ব্যাংকিং সিস্টেমকে কয়েক’শ ব্যাংক-মালিক ও পরিচালকের একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণাধীন করার কারণে এখন উদ্যোক্তা- বিনিয়োগকারী হিসাবে প্রধানত তাঁদেরই সামর্থ্য রয়েছে। এই গোষ্ঠীর সিংহভাগই দেশ থেকে পুঁজি পাচার করে প্রয়োজনীয় বিদেশি মুদ্রা বিভিন্ন দেশে বিনিয়োগ দেখিয়ে নিজেদের জন্য এবং তাঁদের স্ত্রী-পুত্র-কন্যার জন্য ওসব দেশে অভিবাসন বা নাগরিকত্ব পাওয়ায় সফল হয়েছে। ইনাদের প্রায় সবারই বিদেশে ঘর-বাড়ি-ব্যবসাপাতি রয়েছে। কিন্তু বাস্তবতা হলো, এখনো এদেশ থেকে বৈধভাবে বিদেশে পুঁজি নিয়ে বিনিয়োগের কোন আইনসম্মত ব্যবস্থা চালু করা হয়নি। তার মানে, এদেরকে বেআইনী পুঁজি-পাচারকারী অভিহিত করতেই হবে। খোঁজ নিলে দেখা যাবে, দেশের ব্যবসায়ী-শিল্পপতিদের সংগঠনগুলোর অতীত কিংবা বর্তমান নেতৃত্বে আসীন অনেকেই এহেন পুঁজি-পাচারকারী গোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত। (খেলাপি ব্যাংকঋণ সংক্রান্ত আমার গবেষণায় এর অকাট্য প্রমাণ পেয়েছি।) অতএব, এখন দেশের পুঁজি বিদেশে বৈধভাবে বিনিয়োগের অনুমতি প্রদানের অন্যায় আবদারের মূল উদ্দেশ্য হলো পুঁজি পাচারের বৈধ লাইসেন্স বাগানো। বাংলাদেশে লাভজনক ব্যবসা বা শিল্প উদ্যোগ গ্রহণের সুযোগ ফুরিয়ে গেছে কিংবা সীমিত হয়ে গেছে বলার অবকাশ নেই। তাহলে তাঁরা কেন দেশের ব্যাংকগুলোর আমানতের অর্থ বিদেশে নিয়ে যেতে চাইছেন? ব্যাংকের আমানত প্রবাহের অব্যাহত ঢলের প্রধান উৎস দেশের এক কোটি কুড়ি লাখ প্রবাসী শ্রমজীবীর বৈধ-অবৈধ চ্যানেলে পাঠানো ক্রমবর্ধমান রেমিট্যান্স প্রবাহ। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য অত্যাবশ্যক এই বিপুল পুঁজি দেশের কৃষি ও শিল্পোন্নয়নে বা সেবাখাতে বিনিয়োগ না করে যারা বিদেশে পাচার করতে উদগ্রীব তাদের অপতৎপরতাকে দেশদ্রোহিতামূলক বললে কি ভুল হবে?
পাঠকদের জ্ঞাতার্থে জানাচ্ছি, বাংলাদেশের প্রাইভেট সেক্টরের বিনিয়োগ গত কয়েক বছর ধরে জিডিপি’র ২৩-২৪ শতাংশে ঘোরাঘুরি করছে। সরকারের সযতন প্রয়াস সত্ত্বেও ব্যক্তি খাতের বিনিয়োগ আর বাড়ানো যাচ্ছে না। ব্যাংকগুলোতে উদ্বৃত্ত তারল্য সমস্যা লেগেই রয়েছে। অক্টোবর মাসের শেষে এক লাখ বাষট্টি হাজার কোটি টাকা উদ্বৃত্ত তারল্য ছিল ব্যাংকিং খাতে। মোট বিনিয়োগের যে গতিশীলতা এখন দেশের জিডিপি’র প্রবৃদ্ধির হারকে বাড়িয়ে চলেছে সেটা প্রধানত প্রবাসীদের গ্রামীণ বিনিয়োগ এবং সরকারি খাতের বিনিয়োগের উল্লম্ফনের কারণেই ঘটছে। ব্যক্তি খাতের বিনিয়োগের তুলনামূলক এই স্থবিরতার জন্য ব্যবসায়ী-শিল্পপতিদের পক্ষ থেকে ব্যাংকঋণের উচ্চ সুদের হারকে দায়ী করা হতো বরাবরই, কিন্তু এখন যেহেতু ব্যাংকঋণের সুদের হার ৯ শতাংশে নামিয়ে ফেলা হয়েছে তাই দেশে বিনিয়োগ না করার এই অজুহাত খোঁড়া হয়ে পড়েছে। (১৬ নভেম্বর ২০২০ তারিখের দৈনিক বণিক বার্তার হেডলাইন খবরে জানা যাচ্ছে, বেশ কিছু প্রভাবশালী ব্যবসায়ী আরো কম হারে সুদের বিনিময়ে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে ঋণ বাগিয়ে নিচ্ছেন!) এর মানে, সুদের উচ্চহারকে দেশের অভ্যন্তরে বিনিয়োগে অনীহার অজুহাত হিসাবে খাড়া করলেও যাঁরা বিদেশে পুঁজি বিনিয়োগের সুযোগ পেতে মরিয়া প্রয়াস চালাচ্ছেন তাঁদের মূল উদ্দেশ্য বিদেশে পুঁজি পাচারকে আইনী-লেবাস প্রদান। বাংলাদেশ থেকে বিদেশে পুঁজি পাচার সমস্যা করোনাভাইরাস মহামারি আঘাত হানার আগে ক্রমশ বিপজ্জনক স্তরে চলে যাচ্ছিল কয়েক বছর ধরে। মার্কিন গবেষণা সংস্থা গ্লোবাল ফাইনেন্সিয়াল ইন্টেগ্রিটির হিসাব মতে গত এক দশক ধরে বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছর ৭-৯ বিলিয়ন ডলার বিদেশে পাচার হয়ে যাচ্ছিল ২০১৮ সাল পর্যন্ত। এই পাচারকৃত পুঁজির সিংহভাগ আবার ছিল ব্যাংকঋণ। আমদানি বাণিজ্যের ওভার-ইনভয়েসিং, রফতানি বাণিজ্যের আন্ডার-ইনভয়েসিং এবং রফতানি-আয় দেশে ফেরত না এনে বিদেশে রেখে দেওয়া পুঁজি পাচারের প্রধান তিনটা প্রক্রিয়া হলেও প্রবাসী বাংলাদেশিদের রেমিট্যান্সের একটা বিশাল অংশ হুন্ডি ব্যবস্থায় দেশে পাঠানোর কারণে দেশ থেকে বিদেশে হুন্ডি প্রক্রিয়ায় ব্যাংকঋণ পাচার করা একেবারেই সহজ হয়ে গিয়েছিল। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, এখন মহামারির কারণে হুন্ডি প্রক্রিয়া ঝিমিয়ে পড়ায় গত পাঁচ মাস ধরে বৈধ চ্যানেলে দেশে রেমিট্যান্স আসায় রেকর্ড প্রবৃদ্ধি পরিলক্ষিত হচ্ছে। (অর্থমন্ত্রী অবশ্য সরকারের ঘোষিত ২ শতাংশ প্রণোদনাকে রেমিট্যান্স বৃদ্ধির মূল কারণ দাবি করে চলেছেন।)
আমাদের ভুললে চলবে না যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র-ভিত্তিক গবেষণা সংস্থা ‘ওয়েলথ এক্স’ এর প্রতিবেদন ওয়ার্ল্ড আল্‌ট্রা ওয়েলথ রিপোর্ট-২০১৮ এর গবেষণা মোতাবেক ২০১২ সাল থেকে ২০১৭ এই পাঁচ বছরে অতি ধনী বা ধনকুবেরের সংখ্যা বৃদ্ধির দিক দিয়ে বিশ্বের বড় অর্থনীতির দেশগুলোকে পেছনে ফেলে সারা বিশ্বে এক নম্বর স্থানটি দখল করে নিয়েছে বাংলাদেশ। ঐ পাঁচ বছরে বাংলাদেশে ধনকুবেরের সংখ্যা বেড়েছে বার্ষিক ১৭.৩ শতাংশ হারে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশের জিডিপি এবং জিএনআই এর উচ্চ-প্রবৃদ্ধি এই ধনকুবেরদের দেশে-বিদেশের সম্পদের প্রবল স্ফীতি ঘটানোর অর্থই হলো অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সুফলের সিংহভাগ দেশের ধনাঢ্য গোষ্ঠীগুলোর কাছে গিয়ে জমা হয়ে যাওয়া। সোজা কথায়, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ন্যায্য হিস্যা থেকে দেশের শ্রমজীবী জনগণ বঞ্চিত হয়ে যাচ্ছে দেশের ক্ষমতাসীন মহলের মারাত্মক ভ্রান্ত নীতির কারণে। দেশের আয় এবং সম্পদের এহেন পুঞ্জীভবন শেখ হাসিনার রাজনীতিকে ‘ক্রোনি ক্যাপিটালিজমের’ নিকৃষ্ট নজির হিসেবে সারা বিশ্বের জনগণের কাছে তুলে ধরছে। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ রাষ্ট্রের চারটি মূল নীতির মধ্যে ২০১০ সালে সুপ্রিম কোর্টের ঐতিহাসিক রায়ের মাধ্যমে সমাজতন্ত্র আবার পুনঃস্থাপিত হয়েছে। ২০১১ সালে সংসদে পাশ হওয়া সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে ক্ষমতাসীন মহাজোট সরকার সে রায়কে সংবিধানে ফিরিয়ে এনেছে। কিন্তু, পঞ্চদশ সংশোধনী পাশ করা সত্ত্বেও শেখ হাসিনার সরকার এখনো ‘মুক্ত বাজার অর্থনীতির’ অহিফেনের মৌতাতে মেতে রয়েছে। ‘স্বজনতোষী পুঁজিবাদ’ (ক্রোনি ক্যাপিটালিজম) আজো নীতি-প্রণেতাদের ধ্যান-জ্ঞান হিসেবে ‘হলি রীটের’ মর্যাদায় বহাল রয়ে গেছে। কৃষিমন্ত্রী, পরিকল্পনা মন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রীসহ সরকারের মন্ত্রীরা তাঁদের সাম্প্রতিক বক্তব্যে এখনো দাবি করে চলেছেন যে বাংলাদেশ সরকারের নীতি পরিচালিত হয়ে চলেছে ‘মুক্ত বাজার অর্থনীতির’ দর্শন অনুসারে। এহেন বক্তব্যের মাধ্যমে যে তাঁরা দেশের সংবিধানকে অবমাননা করছেন ঐ বোধটুকু তাঁদের মধ্যে দেখা যাচ্ছে না। তাঁরা ভুলে যাচ্ছেন যে ২০১০ সাল থেকে বাংলাদেশ সাংবিধানিকভাবে আবারো ‘সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র’! ২০০১-২০০৫ ঐ পাঁচ বছরে পাঁচবার বাংলাদেশ দুর্নীতিতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশীপ অর্জন করেছিল, আবার বাংলাদেশ বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশীপ অর্জন করলো ধনকুবেরের সংখ্যাবৃদ্ধির দৌঁড়ে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, এসব ‘রবার ব্যারন’ সৃষ্টির জন্যে কি বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে স্বাধীনতা ছিনিয়ে এনেছিলাম আমরা? ধিক্‌ এহেন রাজনীতিকে!
এসব ধনাঢ্য ব্যক্তির কাছেই দেশের খেলাপি ব্যাংকঋণের ৮০ শতাংশেরও বেশি আটকে রয়েছে। বাংলাদেশের এই ‘রবার ব্যারন’ ব্যাংকঋণ লুটেরারা জাতির শত্রু। বৃটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ১৭৫৭ সালে বাংলাকে উপনিবেশে পরিণত করার পর কোম্পানির কর্মকর্তা, সেনাপতি ও সিপাহীরা ১০১ বছর ধরে এদেশ থেকে যে বিপুল পুঁজি জাহাজের পর জাহাজে ভরে বৃটেনে পাচার করেছিল সেটাকেই এখন ঐতিহাসিকরা ‘দি বেঙ্গল লুট’ নামে অভিহিত করেছেন। বলা হচ্ছে, ঐ জাহাজগুলো লন্ডন বন্দরে লুটের মাল খালাস করতে তিন মাসের একটি জাহাজ-জট সৃষ্টি করেছিল। ১৭৫৭-১৮৫৮ পর্বের বৃটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির এবং ১৮৫৮-১৯৪৭ পর্বের সরাসরি বৃটিশ শাসনের পর ১৯৪৭-৭১ পর্বের পাকিস্তানী পুঁজি-লুটেরারা আরো চব্বিশ বছর পুঁজি পাচারের মাধ্যমে দেশটাকে ছোবড়া বানিয়ে ফেলার কারণেই ১৯৭২ সালে বাংলাদেশকে ‘আন্তর্জাতিক তলাবিহীন ভিক্ষার ঝুলি’ উপাধিতে ভূষিত হতে হয়েছিল। গত ৪৯ বছরে বেড়ে ওঠা বাংলাদেশের কয়েক’শ ‘রবার ব্যারন’ বাংলাদেশ থেকে দশ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি পুঁজি লুন্ঠনের ও পুঁজি পাচারের প্রধান হোতা। এরা খেলাপি ব্যাংকঋণের বড় অংশটাই বিদেশে পাচার করে দিয়েছে। বিদেশে তাঁরা ঘর-বাড়ি-ব্যবসাপাতি কিনে অভিবাসন বা নাগরিকত্ব নিয়ে ফেলেছে। তাদের স্ত্রী-পুত্র-কন্যারা বিদেশে বসবাস করছে, তারা নিজেরাও মাসে-দুমাসে বা আরো ঘনঘন নিয়মিত রুটিন হিসেবে বিদেশে যাওয়া-দেশে আসা চালিয়ে যাওয়ার মাধ্যমে এদেশে ব্যবসা-বাণিজ্য করার ভাণ করে যাচ্ছে। ভবিষ্যতে খেলাপিঋণ আদায় করার জন্যে কখনো সরকার সত্যিসত্যিই জোর ধাওয়া দিলে তারা রাতারাতি দেশ থেকে ভেগে যাবে। অতএব, এই খেলাপি ব্যাংকঋণের অর্থ কস্মিনকালেও হয়তো ব্যাংকে ফেরত আসবে না।
বাংলাদেশের নেতৃস্থানীয় অনেক ব্যবসায়ী-শিল্পপতি যে শ্রীলংকা, নেপাল, কেনিয়া, মালয়েশিয়া, উগান্ডা, দক্ষিণ আফ্রিকা, তানজানিয়া এবং মধ্যপ্রাচ্যের অনেক দেশে কল-কারখানা ও ব্যবসাপাতি স্থাপন করেছেন সে খবর আমাদের জানা আছে। তাঁরা এদেশ থেকে কিভাবে পুঁজি বিদেশে নিয়ে গেলেন, বৈধভাবে তো এদেশ থেকে বিদেশে পুুঁজি নিয়ে বিনিয়োগ করা যায় না? কানাডার টরন্টো নগরীর ‘বেগম পাড়ায়’ যারা বাড়িঘর কিনেছেন কিংবা মালয়েশিয়ায় ‘সেকেন্ড হোম’ কর্মসূচির সুযোগ নিয়ে মালয়েশিয়ায় নাগরিকত্ব লাভ করেছেন তারা এই কোটি কোটি টাকা নিশ্চয়ই বৈধপথে বিদেশে নিয়ে যাননি! তাদের ‘আলাদীনের চেরাগের’ সন্ধান এখনো করছে না কেন দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)? বাংলাদেশের ফরেন মিনিস্ট্রি কিংবা দূতাবাস/হাই কমিশনকে পত্র দিয়ে পুঁজি-পাচারকারীর তথ্য সংগ্রহের যে হাস্যকর প্রয়াস দুদক শুরু করেছে সেটা ফলপ্রসূ হওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই, এটা আগেভাগেই বলে দেওয়া যায়। দুদকের নিজস্ব তদন্ত টিম এবং/অথবা গবেষণা টিম সরাসরি এসব দেশে প্রেরণ করে এই পুঁজি পাচারকারীদের সুলুক সন্ধানে বাধা কোথায়? আবারো বলছি, করোনা ভাইরাস মহামারি অর্থনীতিকে বর্তমানে একটা বিপর্যয়ের গিরিখাদে নিক্ষেপ করেছে যেখান থেকে মুক্তি পেতে জাতিকে আগামী এক-দেড় বছর কঠোর সাধনা চালিয়ে যেতে হবে। সময়ের দাবি হলো, অর্থনৈতিক উন্নয়নের মহাসড়কে আবার দৃপ্ত পদক্ষেপে এগিয়ে যাওয়ার স্বার্থে জাতিকে দুর্নীতি, পুঁজি লুন্ঠন ও পুঁজি পাচারের বিরুদ্ধে কঠোর প্রতিরোধ যুদ্ধ শুরু করতে হবে এখনই।
লেখক : একুশে পদকপ্রাপ্ত অর্থনীতিবিদ ও অবসরপ্রাপ্ত প্রফেসর,
অর্থনীতি বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

পূর্ববর্তী নিবন্ধকাল আজকাল
পরবর্তী নিবন্ধবশির আহমেদের ৮১তম জন্মদিনে