ডি.এইচ. লরেন্স : প্রচলিত সামাজিক প্রথা ও বিশ্বাসে বিদ্রোহী শিল্পীসত্তা

| বুধবার , ২ মার্চ, ২০২২ at ১০:২৯ পূর্বাহ্ণ

ডি.এইচ. লরেন্স। বিখ্যাত ইংরেজ সাহিত্যিক। উপন্যাস, ছোটগল্প, ছন্দময় পদ্য, নাটক এবং ভ্রমণকাহিনি রচনায় তিনি স্বকীয় বৈশিষ্ট্যে অনন্য ছিলেন। বিশ শতকের বিশ্ব সাহিত্যে বেশ কিছু সৃষ্টির জন্য লরেন্স ব্যাপকভাবে সমালোচিতও হয়েছেন। লরেন্সের পুরো নাম ডেভিড হার্বার্ট লরেন্স। জন্ম ১৮৮৫ সালে ইংল্যান্ডের নটিংহ্যামশায়ারের খনি-শ্রমিকদের গ্রাম ইস্টউডে। বাবা জন লরেন্স ছিলেন প্রায়-অশিক্ষিত খনি মজুর। মা লিডিয়া স্কুল শিক্ষক। লরেন্সের পুরো ছেলেবেলা কেটেছে এই কয়লাখনি অঞ্চলে, যাকে তিনি ‘হৃদয়ভূমি’ বলে ভাবতেন। অনেক রচনার বিভিন্ন অনুষঙ্গে বার বার তিনি ফিরে এসেছেন এই অঞ্চলে। লরেন্স লেখাপড়া করেন বিউভেল বোর্ড স্কুলে। এরপর ইস্টউডের ব্রিটিশ স্কুলে শিক্ষকতা করেছেন কিছুকাল। ১৯০৮ সালে ইউনিভার্সিটি কলেজ নটিংহ্যাম থেকে কোয়ালিফায়েড টিচার স্ট্যাটাস অর্জন করেন তিনি। ১৯০৭ সালে লরেন্স নটিংহ্যাম গার্ডিয়ান পত্রিকার একটি প্রতিযোগিতায় ছোটগল্প লিখে প্রথম স্থান অধিকার করেন। এটিই ছিল তাঁর সাহিত্য জগতে প্রথম আত্মপ্রকাশ। পরবর্তীসময়ে শিক্ষকতা ছেড়ে পুরোপুরি লেখালেখিতেই মনোনিবেশ করেন। লরেন্সের রচনায় মানসিক স্বাস্থ্য এবং এর গুরুত্ব, সেই সাথে মানুষের স্বভাবিক কিছু প্রবৃত্তি বিশেষ প্রধান্য পেয়েছে, তিনি বিরুদ্ধাচরণ করেছেন প্রচলিত কিছু সামাজিক প্রথা ও বিশ্বাসের, যা সমালোচিত হয়েছে ব্যাপকভাবে। তাঁর বেশ কিছু রচনা সরকারিভাবে বাজেয়াপ্ত হয়েছিল, কিছু রচনার জন্য তিনি পড়েছেন সেন্সরশিপের মুখে। মোটামুটিভাবে বলা চলে, লেখালেখি নিয়ে তাঁকে নিয়তই মামলা সংক্রান্ত হয়রানির মুখে পড়তে হয়েছে। এ ধরনের অনভিপ্রেত পরিস্থিতির কারণে তিনি চলে গিয়েছিলেন স্বেচ্ছা নির্বাসনে তাঁর ভাষায় ‘বর্বর তীর্থযাত্রা’। লরেন্সের সাহিত্যকর্মের মধ্যে ‘দ্য হোয়াইট পিকক’, ‘সন্স অ্যান্ড লাভার্স’, ‘রেইনবো’, ‘লেডি চ্যাটার্লিজ লাভার’, ‘ইংল্যান্ড মাই ইংল্যান্ড’, ‘ক্যাঙ্গারু’ ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। জীবনের শেষ বছরগুলোতে লরেন্স ছবি আঁকায় বিশেষ মনোযোগী হয়ে ওঠেন। তাঁর প্রবল অনুরাগ ছিল তেলচিত্রে। লরেন্সের আঁকা অনেক ছবিও বাজেয়াপ্ত হয়েছিল। তিনি ১৯৩০ সালের ২ মার্চ মৃত্যুবরণ করেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধএই দিনে
পরবর্তী নিবন্ধনয়া বাজার বিশ্বরোড মোড়ে গোল চত্বর চাই