ডিপ টিউবওয়েল বসিয়ে খালে ধান চাষ

নাইক্ষ্যংছড়ির বেশিরভাগ খালে এই চিত্র, বিফলে ১৬ কোটি টাকার রাবার ড্যামও

নাইক্ষ্যংছড়ি প্রতিনিধি | শনিবার , ২৮ জানুয়ারি, ২০২৩ at ৮:১২ পূর্বাহ্ণ

মৌসুমের শুরুতেই খালের পানি শুকিয়ে গেছে। তাই কি আর করার? খালের বুকেই জমি তৈরি করে তাতে চলছে ধান চাষ। বিগত বছরগুলোতে এ মৌসুমে খাল, বিল, নদীনালা, পাহাড়ি ছড়ার পানিতে ভরপুর ছিল। কৃষকেরা থাকতেন চাষাবাদে ব্যস্ত। কিন্তু এ বছর চিত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন। খালবিল শুকিয়ে চৌচির হয়ে গেছে। মরে গেছে অনেক নদী। অনাবাদি থেকে যাচ্ছে নদী কূলবর্তী অনেক জমি। তারপরও গভীর নলকূপ বসিয়ে অনেক জায়গায় চাষাবাদের চেষ্টা করছেন কৃষকেরা।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পার্বত্য জেলা বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার অধিকাংশ খাল যেমন ফারির খাল, গর্জন খাল, আলীক্ষ্যং খাল, ইদগড় বড় ছড়া খাল, ছোট গর্জন খাল, বাকখালী, দৌছড়ি খাল এখন আর খাল নেই। চাষের জমি ও ক্ষেত খামার এবং সবজি বাগানে পরিণত হয়েছে। সাবেক চেয়ারম্যান ও স্কিম/সেচ ম্যানেজার মো. নুরুল হাকিম জানান, নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বাইশারীতে দীর্ঘকাল যাবত এই শুকনো মৌসুমে অর্ধশত একর জমির সেচ ম্যানেজার হিসেবে খালের উপর বাঁধ দিয়ে চাষাবাদ করে আসছি।

কিন্তু এ বছর খালে পানি না থাকায় বাঁধ দিয়ে কোনো লাভ তো হল না, উল্টো আরো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। তবে তিনি হাল ছাড়েননি, ডিপ টিউবওয়েল বসিয়ে নতুন করে পানির ব্যবস্থা করছেন।

স্থানীয় লোকজনের দাবি, পাহাড়ে এখন আর গাছবাঁশ না থাকায় পাহাড়ও শুকনো হয়ে গেছে। তাই আর পাহাড় থেকে পানি আসছে না। থোয়াইংগাকাটা এলাকার বাসিন্দা কৃষক আবু নছর, মোশাররফ আলী, নুর আহাম্মদসহ অনেকেই জানান, খালে পানি না থাকায় এখন পুরো খাল জুড়ে চলছে ধান চাষ। অনেকের মতে, এটি এখন আর খাল নেই, চাষের জমিতে রূপান্তর হয়ে গেছে। ১৬ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত রাবার ড্যামও কোনো কাজে আসল না। এখানে চাষ নেমে এসেছে অর্ধেকে।

কৃষক আবু শামা জানান, চাষাবাদের জন্য ধানের বীজ করা হয়েছে। এখন পানি না থাকায় তিনি দুশ্চিন্তায় রয়েছেন। তাছাড়া খাল শুকিয়ে যাওয়ায় বালি দস্যুদের নজর পড়েছে বালির দিকে। বর্তমানে দেদারসে চলছে বালি আহরণ। রামু উপজেলার গর্জনিয়া ইউনিয়নের গর্জন খালে চলছে বালির গাড়ি। এভাবে চলতে থাকলে পরিবেশ ধ্বংস হয়ে যাবে। বাইশারী সদরের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা বলেন, বৃষ্টি না হওয়ায় সর্বত্র পানি সংকট চলছে। অন্যান্য এলাকার মতো রাবার ড্যাম এলাকায়ও পানি কমেছে। ১৬ কোটি টাকার এ ড্যামে প্রায় ৬ কানি চাষের আবাদ হলেও এ বছর হবে মাত্র ২শ একর। তবে কৃষকরা বিকল্প পথে চাষের চেষ্টা করে যাচ্ছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকৌতুক কণিকা
পরবর্তী নিবন্ধ৭৮৬