টার্মিনালেও চালকদের ডোপ টেস্ট হবে : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

‘দেশে চাদর-বালিশ যথেষ্ট হচ্ছে’

| সোমবার , ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ at ৫:৫৪ পূর্বাহ্ণ

মাদকাসক্ত অবস্থায় গাড়ি চালানো ঠেকাতে টার্মিনালগুলোতেও চালকদের ডোপ টেস্টের ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। রোববার সড়কে শৃঙ্খলা আনার জন্য গঠিত টাস্ক ফোর্স কমিটির চতুর্থ সভা শেষে তিনি এ কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা সরকারি সব জায়গায় ডোপ টেস্ট বাধ্যতামূলক করতে যাচ্ছি, প্রধানমন্ত্রীর দিক-নির্দেশনা আছে। চালকদেরও আমরা ডোপ টেস্টের আওতায় নিয়ে আসছি। বিআরটিএ (বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ) যখন লাইসেন্স দিচ্ছে, তখনও ডোপ টেস্ট করা হচ্ছে। শুধু লাইসেন্সের সময়ই নয়, আমরা টার্মিনালগুলোতে পর্যায়ক্রমে ডোপ টেস্টের ব্যবস্থা করব। গাড়ি যখন তারা চালাবে, তার আগেই টেস্ট করে চালাবে- এ ধরনের একটি সিদ্ধান্ত আমরা নিতে যাচ্ছি এবং সে অনুযায়ী কাজ করা হচ্ছে।’ বিআরটিতে গত ৩০ জানুয়ারি থেকে লাইসেন্স নেওয়ার জন্য চালকদের ডোপ টেস্ট করতে হচ্ছে। খবর বিডিনিউজের।
সড়ক আইনে চালক এবং সুপারভাইজারকে গাড়ির মালিকদের পক্ষ থেকে নিয়োগপত্র দেওয়ার কথা বলা হলেও তা করা হয়নি জানিয়ে দুই মাসের মধ্যে বাস্তবায়নের নির্দেশ দেন আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। দু’মাসের মধ্যে মালিক এবং শ্রমিক যারা আছেন, তারা বসে কখন কীভাবে শুরু করবেন- এটা ঠিক করবেন। এটা বাধ্যতামূলক, আমরা দু’মাস পরে রাস্তায় সেটা চেক করব। নিয়োগপত্র ছাড়া কোনো ড্রাইভার গাড়িতে উঠতে পারবে না। ড্রাইভিং লাইসেন্সের বিষয়ে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি- পর্যায়ক্রমে যাতে সবাই আরও সহজে লাইসেন্স পায়, সেটারও সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সড়কে যে যানবাহনগুলো চলে, সেগুলো অনেক পুরাতন হয়ে গেছে। এগুলো কতদিন চলতে পারবে, তার জন্য বিআরটিএ চেয়ারম্যানকে সভাপতি করে একটি কমিটি করে তার সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রস্তাব এসেছে। বেসরকারিই শুধু নয়, সরকারি গাড়িগুলোও কীভাবে চলবে? কতদিন চলবে? তা আলোচনা হয়েছে। ফিটনেসবিহীন গাড়ি দুর্ঘটনা বাড়াচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা দেখেছি, এই গাড়িগুলো এতই পুরাতন, সারা দেশে চলাচল করে এবং সময় সময় দুর্ঘটনার কারণ হয়ে যাচ্ছে। এ কারণেই এই কমিটি গঠন করা হয়েছে। পরিবহনখাতে চাঁদাবাজি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নির্ধারিত টার্মিনাল বা জায়গা ছাড়া রাস্তায় কোনো রকমের চাঁদা বা সার্ভিস চার্জ- আমরা যেটাই বলে থাকি, তুলতে দেব না এটাই সিদ্ধান্ত হয়েছে। এটা আইজিপিকে জানিয়ে দিয়েছি, তিনি অ্যাকশনে থাকবেন। পৌরসভাসহ বিভিন্ন ধরনের করও আদায় করা হয়। এগুলোও যাতে স্ট্যান্ড বা টার্মিনাল ছাড়া যত্রতত্র তোলা না হয়, সে ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে।
‘ফোনালাপ ফাঁসের তদন্ত হবে’ : সমপ্রতি আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের কথিত ফোনালাপ ফাঁসের বিষয়ে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এটা তদন্তের বিষয়। এটা কীভাবে রেকর্ড হলো, সেটা দেখার বিষয় আছে। নিশ্চিত না হয়ে আমি কিছু বলতে চাচ্ছি না।
আমাদের সরকারিভাবে এ রকম রেকর্ড করার কোনো সিস্টেম নেই। অন্য কোনো প্রযুক্তি বের হয়েছে কী না দেখার বিষয় আছে। এনটিএমসি একটি মাত্র প্রতিষ্ঠান, যেখানে ‘ল ফুল’ ইন্টারসেপশন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমতি ছাড়া মনিটর বা প্রকাশ করতে পারে না। কাজেই অনুসন্ধানের ব্যাপার আছে। সমপ্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান এবং আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের কথিত টেলিফোন আলাপের একটি অডিও ছড়িয়ে পড়ে।
‘আইজিপির জার্মানি সফর নিয়ে কিছু বলার নেই’ : পুলিশ প্রধানের জার্মানি সফর প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, জার্মানিতে বালিশ আনতে আইজিপি কেন যাবেন? তিনি রি-জয়েন্ডার দিয়েছেন, এখানে আমাদের কিছু বলার নেই। আমাদের দেশে চাদর-বালিশ যথেষ্ট হচ্ছে, আমরা বিদেশেও রপ্তানি করছি। গুমের প্রসঙ্গ উঠলে মন্ত্রী বলেন, আমরা সব সময় বলে আসছি, অনেকে নিজেকে সরিয়ে রাখেন। অনেকে ব্যবসায় ফেইল করে, মামলা এড়াতে বা সামাজিকভাবে হেয় হওয়ার ভয়ে আত্মগোপন করেন। জেনেভায় আমাদের যে নামগুলো দেওয়া হয়েছিলে, তাদের অনেকের নামেই ১২ থেকে ১৩টি মামলা ছিল কিংবা জেলে আছে বা জামিনেও বের হয়েছে- এমনও হয়েছে। আমরা আবারও বলছি, গুমের কথা যেগুলো বলা হচ্ছে- খুঁজলে অনেককেই আমরা উদ্ধার করতে পারছি বা পারব। তিনি বলেন, পুলিশের প্রতিবেদন লক্ষ্য রাখবেন, প্রতিবছর যদি মিসিং এ রকম এক হাজার হয়, দেখা যায় ৯৫০ জনই আবার রিঅ্যাপিয়ার করা যাবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধইনোসেন্ট কনভারসেশনকে পুঁজি করা হচ্ছে
পরবর্তী নিবন্ধভবিষ্যতের নির্বাচন ‘আরও সুষ্ঠু হবে’ আশা রাষ্ট্রপতির