টানেলের গাড়ি কোন পথে যাবে কক্সবাজার

আনোয়ারা প্রতিনিধি | সোমবার , ১৬ জানুয়ারি, ২০২৩ at ৭:৫৩ পূর্বাহ্ণ

১০ হাজার কোটি টাকার বেশি ব্যয়ে নির্মিত দেশের প্রথম টানেল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল। দুয়েক মাসের মধ্যে যান চলাচলের জন্য এই টানেল খুলে দেয়া হবে। টানেল পার হয়ে যানবাহন ও ভারী পরিবহনগুলো কোন পথে কক্সবাজার যাবে বা এশিয়ান সড়ক নেটওয়ার্কে কিভাবে যুক্ত হবে?

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বঙ্গবন্ধু টানেলে চলাচলকারী গাড়ি শিকলবাহা ওয়াই জংশনপটিয়া ঘুরে কক্সবাজার যাবে। এশিয়ান সড়ক নেটওয়ার্ক তৈরির পরিকল্পনা কয়েক ধাপে বাস্তবায়ন করছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ)

সওজ সূত্র জানায়, বঙ্গবন্ধু টানেলের কাজ শেষ পর্যায়ে। শিকলবাহা ওয়াই জংশন থেকে আনোয়ারা কালাবিবির দীঘি পর্যন্ত ৬ লেনের সংযোগ সড়কের কাজও দুই মাসের মধ্যে শেষ হবে। কর্ণফুলী বড় উঠান এলাকার কালভার্টের কাজ চলতি মাসে এবং চাতরী অংশের কালভার্টের কাজ ১৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে শেষ হলে পুরো সড়ক প্রস্তুত হয়ে যাবে। আপাতত এই সংযোগ সড়কটিই হবে টানেলের সাথে এশিয়ান সড়ক নেটওয়ার্কে যুক্ত হওয়ার মাধ্যম।

সূত্র জানায়, টানেল সংযোগ সড়ক বাঁশখালীপেকুয়া হয়ে কক্সবাজারের সাথে যুক্ত হলে দূরত্ব অন্তত ১৫ কিলোমিটার কমে যেত। কিন্তু তাতে জমি অধিগ্রহণ, রাস্তা সম্প্রসারণসহ নানা কাজে খরচ কয়েক গুণ বেড়ে যাবে। এ কারণে শিকলবাহা ওয়াই জংশন হয়ে কক্সবাজার পর্যন্ত সড়কটি প্রাধান্য দিয়ে এশিয়ান সড়ক নেটওয়ার্কের কাজ চলছে। ১৮ ফুটের সড়কটি ৩৪ ফুট পর্যন্ত প্রশস্ত করে স্টান্ডার্ড দুই লেনে উন্নীত করা হচ্ছে। ছয়টা প্যাকেজে ভাগ করে এই সড়কের কাজ চলছে। শিকলবাহা ক্রসিং থেকে মনসা বাদামতল অংশের কাজ শেষ হবে ফেব্রুয়ারি মাসে। বাদামতল থেকে পটিয়া বাইপাস পর্যন্ত অংশের কাজ শেষ হবে জুন মাসে।

বাইপাস পরের অংশ থেকে মক্কা পেট্রোল পাম্প ও পেট্রোল পাম্প থেকে সাতকানিয়া মৌলভির দোকান পর্যন্ত দুটি প্যাকেজের টেন্ডার প্রক্রিয়া চলছে। মৌলভির দোকান থেকে কেরানিহাট পর্যন্ত অংশে টেন্ডার হবে জুলাই মাসে। এছাড়া ভবিষ্যতে শিকলবাহা জংশন থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ১২৯ কিলোমিটারের সড়কটি ৬ লেন করতে ইতোমধ্যে জাইকার কাছে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন সওজের এক কর্মকর্তা।

তবে এর মধ্যে জাইকার অর্থায়নে পটিয়া বাইপাস, দোহাজারী বাইপাস, কেরানিহাট ফ্লাইওভার, লোহাগাড়া বাইপাস ও চকরিয়া বাইপাসের মোট ২৪ কিলোমিটার অংশ ৬ লেইনে প্রশস্ত করা হচ্ছে। ৬ লেনের সড়ক মাথায় রেখে পটিয়া ইন্দ্রপুল সেতু, গাছবাড়িয়া বরগুনি সেতু, দোহাজারী সেতু ও চকরিয়া মাতামুহুরী সেতু ৬ লেইনে উন্নীত করা হচ্ছে। সবকিছুই হচ্ছে টানেল সড়ক পটিয়া হয়ে কক্সবাজার ও এশিয়ান হাইওয়েতে যুক্ত করার পরিকল্পনা হিসাবে।

এর বাইরে কালাবিবির দিঘি থেকে আনোয়ারা পর্যন্ত প্রায় আড়াই কিলোমিটার সড়ক ১৮ ফুট থেকে বাড়িয়ে ২৪ ফুট করা হচ্ছে। এই কাজ চলতি বছরের মধ্যে শেষ হবে। এছাড়া আনোয়ারাগাছবাড়িয়া সড়কটি ১৮ ফুট থেকে ৩৪ ফুট করার প্রস্তাবনা রয়েছে।

৬ লেনের টানেল সংযোগ সড়ক প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ও সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী সুমন সিংহ বলেন, বঙ্গবন্ধু টানেল হয়ে চলাচলকারী গাড়ি ৬ লেইনের সংযোগ সড়ক হয়ে কক্সবাজার পর্যন্ত যাবে। এটিই হবে এশিয়ান সড়ক নেটওয়ার্ক। সড়কটির নম্বর এএইচ৪১। ছয় লেইনের সংযোগ সড়কের মধ্যে ৪ লেনের কাজ শেষ পর্যায়ে। শিকলবাহা ওয়াই জংশন থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত সড়কটির প্রশস্ততা কয়েকটি প্যাকেজে বাড়ানো হচ্ছে। এর মধ্যে পটিয়া বাইপাস পর্যন্ত সড়কের কাজ এই বছর জুনের মধ্যে শেষ হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচট্টগ্রাম বন্দরে ইতিহাস
পরবর্তী নিবন্ধসেই মোস্তাকিম পাঁচ দিন পর কারামুক্ত