রাউজান সদর ইউনিয়নের নতোয়ানবাগিছা গ্রামের শাহানা আকতার(২৮) নামের এক গৃহবধূকে পাহাড়ে নিয়ে হত্যা করেছে। দুর্বৃত্তরা এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে পুলিশ ২ জনকে আটক করেছে। তারা হল- সুজন বড়ুয়া ও গৃহবধূর স্বামী সাইদুল আলম। দুর্বৃত্তরা শাহানাকে মেরে মুমূর্ষু অবস্থায় ফেলে যায় পাশের উপজেলা কাউখালির মনাইর টেক পাহাড়ে। খবর পেয়ে কাউখালি থানার পুলিশ গত ৫ এপ্রিল রাতে তাকে উদ্ধার করে রাউজান উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নেয়ার পথে শাহানা মারা যান। কাউখালি থানার ওসি মো. শহিদ উল্লাহ জানান, দীর্ঘদিন ধরে রাউজান জয়নগর এলাকার বাসিন্দা সিএনজি চালক মো. সাইদুলের স্ত্রী শাহানা আক্তারের (৩২) সাথে পূর্ব জয়নগর বড়ুয়া পাড়ার কালু বড়ুয়ার ছেলে সুজন বড়ুয়ার পরকীয়া প্রেম চলে আসছিলো। আটককৃতরা জিজ্ঞাসাবাদে এ তথ্য জানায়। শাহানা রাউজান পৌরসভার ছত্রপাড়া গ্রামের মান্নান উল্লাহ সিকদার বাড়ির হাছি মিয়া সিকদারের কন্যা ও নাতোয়ান বাগিচার শমসের নগর গুচ্ছ গ্রামের সাইদুল আলমের স্ত্রী।
জানা যায়, নির্জন পাহাড়ে শাহানাকে মুমূর্ষু অবস্থায় দেখেন দুই পাহাড়ি যুবক। তারা শাহানার সাথে কথা বলে জানতে পারেন- সুজন বড়ুয়া তাকে পাহাড়ে এনে মারধর করে ফেলে গেছে। এসময় শাহানা তার বাপের ও শ্বশুর বাড়ির ঠিকানা তাদেরকে জানায়। পাহাড়ি দুই যুবক ঘটনার বিষয়ে কাউখালী থানা ও শাহানার স্বজনদের জানান। এ বিষয়ে কাউখালি থানার পরিদর্শক মহিবুল ইসলাম বলেন- শাহানার সাথে তাঁর শ্বশুর বাড়ির প্রতিবেশি সুজন বড়ুয়ার স্ত্রীর সখ্যতা ছিল। তাঁর স্বামী সাইদুল ও সুজনের মধ্যেও বন্ধুত্ব ছিল।
এমন সম্পর্কের সূত্রধরে শাহানার কাছ থেকে সুজন বড়ুয়া ৩০ হাজার টাকা ধার নেয়। শাহানা ওই টাকা ধার দিয়েছিল এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে। পরে ধার দেয়া টাকা আদায় করতে গিয়ে তাদের মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়। স্ত্রীর সাথে সুজনের বিরোধে সবসময় নীরবতা পালন করে আসছিল স্বামী সাইদুল। ধারণা করা হচ্ছে, এ ঘটনার জের ধরেই সুজন কৌশলে শাহানাকে হত্যার জন্য পাহাড়ে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় স্বামীর সাইদুলের ভূমিকা রহস্যজনক।
জানা যায়, গতকাল মঙ্গলবার শাহানার বাবা বাদি হয়ে সুজন বড়ুয়া ও সাইদুল আলমের নাম উল্লেখ করে কাউখালি থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। উল্লেখ্য, ১৩ বছর আগে রাউজান পৌরসভার ছত্রপাড়ার হাছি মিয়ার কন্যা শাহানার সঙ্গে রাউজানের শমসের নগর গুচ্ছ গ্রামের মো. সুলতান আহমদের পুত্র সাইদুলের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। তাদের দুই ছেলে রয়েছে।