জোয়ারে ভেসে গেল চেংখালী খালের স্লুইচ গেট

রক্ষা পেল মাছুয়াঘোনা হ্যাচারি, পশ্চিম গড়দুয়ারা ও পূর্ব মেখলে উৎপাদন নিয়ে শঙ্কায় কৃষকেরা

হাটহাজারী প্রতিনিধি | মঙ্গলবার , ১০ মে, ২০২২ at ৬:০৩ পূর্বাহ্ণ

হালদা নদীর সংযোগ চেংখালী খালের স্লুইচ গেট জোয়ারের তোড়ে ভেসে গেছে। এতে করে হাটহাজারী ও রাউজান উপজেলার অংকুরীঘোনা-গড়দুয়ারা হালদা নদীর বেড়িবাঁধ কাম সড়কে চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। দুর্ভোগে পড়েছে এই পথে চলাচলকারী লোকজন। কয়েকদিন আগে স্লুইচ গেট বিলীন হয়ে যাওয়ায় পশ্চিম গড়দুয়ারা ও পূর্ব মেখল এলাকার বিপুল পরিমাণ কৃষি জমিতে ফসল উৎপাদন নিয়ে কৃষকেরা শঙ্কায় আছেন।

অপরদিকে উত্তর মাদার্শা মাছুয়াঘোনা হ্যাচারি হালদার জোয়ারে বিলীন হওয়ার উপক্রম হয়েছিল। তবে পানি উন্নয়ন বোর্ডের দ্রুত পদক্ষেপে হ্যাচারিটি রক্ষা পাওয়ায় হালদার ডিম সংগ্রহকারীদের মাঝে স্বস্তি ফিরে এসেছে।

জানা যায়, বর্ষায় পাহাড়ি ঢলের পানি চেংখালী খালে ঢুকে যাতে বন্যা হতে না পারে, শুষ্ক মৌসুমে হালদা নদীর জোয়ারের পানি খালের ভিতর নিয়ে ইরি, বোরো ও মৌসুমি সবজি চাষাবাদ করার জন্য চেংখালী খালে স্লুইচ গেট নির্মাণ করেছিল পানি উন্নয়ন বোর্ড। বছরখানেক আগে স্লুইচ গেটের পাশে একটি গর্ত হয়। এই গর্ত ক্রমে বড় হয়ে স্লুইচ গেটটি সম্প্রতি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। এতে করে এই সড়ক ব্যবহার করা হাটহাজারী ও রাউজান উপজেলার লোকজন দুর্ভোগে পড়েছেন। এছাড়া জোয়ারের পানি খালের ভিতরে ঢুকে পশ্চিম গড়দুয়ারা ও পূর্ব মেখল এলাকার বিপুল পরিমাণ কৃষি জমির ফসল নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে। মৌসুমি সবজি জোয়ারের পানিতে নষ্ট হয়ে গেছে। এদিকে হালদা নদীর জোয়ারের তোড়ে উত্তর মাদার্শা মাছুয়াঘোনা হ্যাচারি বিলীন হওয়ার উপক্রম হয়েছিল। এই নিয়ে ডিম আহরণকারীরা ছিলেন শঙ্কার মাঝে। কিন্তু পানি উন্নয়ন বোর্ডের পদক্ষেপে হ্যাচারি রক্ষার জন্য সংস্কার ও মেরামতের কাজ শুরু হয়েছে।
কয়েকজন কৃষক জানান, ক্ষতিগ্রস্ত সড়কের পশ্চিমাংশে তাদের কৃষিজমি রয়েছে। স্লুইচ গেট ধসে পড়ায় তাদের জমির সব ফসল জোয়ারের পানিতে নষ্ট হয়ে গেছে। এতে করে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।

কৃষক এয়াকুব জানান, মাসখানেক আগেই ছোট ফাটল দেখা গেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের অফিসারসহ অনেকে পরিদর্শন করে সংস্কারের আশ্বাস দিয়ে গেছেন। কিন্তু সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হয়নি, যার ফলে আজকের এ দশা। শুরুতে সংস্কারের উদ্যোগ নিলে এত বড় ক্ষতি হত না। তারা স্লুইচ গেটসহ সড়কটি দ্রুত সংস্কারে প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের সেকশন অফিসার মো. শহীন বাদশা ও শৈমন সিং গণমাধ্যমকে জানান, মাছুয়াঘোনা হ্যাচারি রক্ষার জন্য পাউবো কাজ শুরু করেছে। সপ্তাহখানেকের মধ্যে হ্যাচারির ভাঙন রোধের কাজ শেষ হবে।

পাউবোর দুই কর্মকর্তা বলেন, স্লুইচ গেট তুলে নিতে গবেষকরা মত প্রকাশ করেছেন। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।

তবে স্থানীয় কৃষকেরা স্লুইচ গেট তুলে দেওয়ার বিপক্ষে মত দিয়েছেন। তারা বলছেন, এটি থাকলে বর্ষায় হালদা নদীর ঢলের পানি ভিতরে ঢুকে বন্যা হবে না। তাছাড়া শুষ্ক মৌসুমে হালদার পানি স্লুইস গেট দিয়ে খালে ঢুকিয়ে চাষাবাদ করা যাবে।

পাউবোর দুই কর্মকর্তা বলেন, এই বর্ষায় অবস্থা দেখে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন স্লুইচ গেট তুলে দেওয়া হবে নাকি নতুন করে নির্মাণ করা হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধএক এজেন্সি থেকে অন্য এজেন্সিতে হজযাত্রী স্থানান্তরের সুযোগ
পরবর্তী নিবন্ধআগামী নির্বাচনে কত আসনে ইভিএম?