জোরারগঞ্জ আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের জায়গা দখলের প্রতিবাদ

প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

মীরসরাই প্রতিনিধি | বৃহস্পতিবার , ১ অক্টোবর, ২০২০ at ৫:৩৭ পূর্বাহ্ণ

মীরসরাইয়ের শতবর্ষী বিদ্যাপীঠ জোরারগঞ্জ আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের জায়গা দখল ও শিক্ষকের নামে মামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছে বিদ্যালয়ের বর্তমান ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা। গতকাল বুধবার দুপুরে বিদ্যালয়ের সড়কে শতাধিক শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণে এই বিক্ষোভ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়।

জানা গেছে, ১৯১৪ সালে প্রতিষ্ঠিত এই বিদ্যালয়ের আরএস খতিয়ান নং২৪৫৯/৭ ও বিএস নং২৮৯৮, আরএস দাগ নং৪৪০০, বিএস দাগ নং৫৪১৪, ৭ শতকের মধ্যে ২ শতকের জায়গায় পুরাতন পাঠাগারের একটি কক্ষে ১৯৯৬ সাল থেকে তৎকালীন স্কুল কমিটির সুপারিশে মীরসরাই উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা একে এম জাহাঙ্গীর আলম ও আব্দুল হাই বসবাস করে আসছেন। কিন্তু বর্তমানে এই জায়গাটিতে নতুনভাবে পাঠাগার নির্মাণের জন্য প্রয়োজন হলে তাদেরকে এই জায়গাটি খালি করে দিতে ২০১৮ সালের ২৮ এপ্রিল বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ একটি চিঠি প্রেরণ করেন। এরপর কয়েকবার চিঠি দিয়েও তাদের কোনো সদুত্তর পাননি বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তারই প্রেক্ষিতে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ উচ্ছেদের মামলার প্রক্রিয়া করাকালীন সময়ে এই জায়গাটি মীরসরাই উপজেলা কৃষি অফিসের আওতাধীন জোরারগঞ্জ বীজাগার দাবি করে গত ২৭ আগস্ট মীরসরাই কৃষি কর্মকর্তা রঘুনাথ নাহা চট্টগ্রাম আদালতে জোরারগঞ্জ আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সভাপতির নাম উল্লেখ পূর্বক ১৪৫ ধারায় একটি দেওয়ানি মামলা দায়ের করেন। এই জায়গাটি কৃষি অফিসের পক্ষে কোনো বৈধ কাগজপত্র পেশ করেননি বলে দাবি করেছেন বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এরই পরিপ্রেক্ষিতে বিদ্যালয়ের সম্পত্তি কোনো প্রকার সরকারি অধিগ্রহণ এবং কোনো প্রকার বৈধ কাগজপত্র ছাড়া দখল করার প্রতিবাদে বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীসহ স্থানীয় জনগণ ফুসে উঠে।

এ বিষয়ে জোরারগঞ্জ আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি আশরাফ উদ্দিন ভূঁইয়া জানান, বিদ্যালয়ের সম্পত্তি অবৈধভাবে দখলের প্রতিবাদে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছে প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা। শীঘ্রই বিদ্যালয়ের সম্পত্তি উদ্ধারে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

জোরারগঞ্জ আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাং সাইফুল আলম জানান, আরএস, বিএস খতিয়ান দলিল মূলে এই সম্পত্তি বিদ্যালয়ের। এই স্থানে একটি পাঠাগার ছিল। তৎকালীন সময়ে ইউনিয়ন ভিত্তিক কৃষি বীজাগারের জন্য স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদে কোনো ভবন না থাকায় ১৯৯৬ সালের দিকে পাঠাগারের এই রুমে তৎকালীন কৃষি ব্লক অফিসারকে অস্থায়ীভাবে থাকতে দেয়া হয়। কিন্তু এই জায়গাটি অন্যায়ভাবে তারা দাবি করছে। তাদের দাবির প্রেক্ষিতে যথাযথ দলিল দস্তাবেজ দেখানোর জন্য বললেও তারা তা দেখাতে ব্যর্থ হন। বর্তমানে বিদ্যালয়ের সম্পত্তি দখলমুক্ত করতে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান তিনি ।

মীরসরাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রঘুনাথ নাহা জানান ১৯৬১ সালে সারাদেশে কৃষি বিভাগ ৪ হাজার সীড স্টোর (বীজাগার) সড়ক ও জনপদের জায়গায় নির্মাণের জন্য ঘোষণা দেন। তখন দ্বিতীয় তালিকায় জোরারগঞ্জ বীজাগার নির্মাণের কথা উল্লেখ করা হয়। এতোদিন বসবাস করার পরিপ্রেক্ষিতে এবং উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে আমি মামলা দায়ের করেছি। বর্তমানের জোরারগঞ্জ বীজাগারটির জায়গার কোনো বৈধ কাগজপত্র আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি কোনো কাগজপত্র দেখাতে পারেননি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধআওয়ামী লীগের সম্ভাব্য মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা সরব
পরবর্তী নিবন্ধসন্ত্রাসবাদ মোকাবেলায় একযোগে কাজ করতে হবে : মোশাররফ