নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা রক্ষায় মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনসার নিয়োজিত থাকলেও এতদিন ধরে জেলা সদর হাসপাতাল ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এই ব্যবস্থা ছিল না। তবে এবার জেলা–উপজেলা হাসপাতালেও আনসার নিয়োগ হচ্ছে। এখন থেকে নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা বিধানে আনসার সদস্যরা জেলা–উপজেলা
হাসপাতালেও দায়িত্ব পালন করবেন। সম্প্রতি এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে তা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিবকে (প্রশাসন) বাস্তবায়নে নির্দেশনা দিয়েছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়। গত ২৭ ফেব্রুয়ারি মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে স্বাস্থ্য মন্ত্রী জাহিদ মালেকের সভাপতিত্বে
অনুষ্ঠিত এক সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৬ জন এবং জেলা সদর হাসপাতালে ৯–১২ জন আনসার সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন। মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত ওই সভার কার্যবিবরণী (রেজুলেশন) সূত্রে এ তথ্য পাওয়া গেছে। এদিকে, মন্ত্রণালয়ের এমন সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ
জানিয়েছেন স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা। তাঁরা বলছেন, এটি মাঠ পর্যায়ের চিকিৎসক–কর্মকর্তাদের দীর্ঘদিনের দাবি। আনসার নিয়োগের মাধ্যমে জেলা–উপজেলা হাসপাতালগুলোতে নিরাপত্তা কিছুটা হলেও বাড়বে।
সংখ্যায় অল্প হলেও জেলা–উপজেলা হাসপাতালে আনসার নিয়োগের নতুন এ সিদ্ধান্তকে ইতিবাচক হিসেবেই দেখছেন চট্টগ্রাম জেনারেল (জেলা সদর) হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. সেখ ফজলে রাব্বি। তিনি চট্টগ্রাম জেলার সিভিল সার্জনের দায়িত্বেও ছিলেন। আর এটি খুবই ভালো সিদ্ধান্ত বলে মন্তব্য করেছেন চট্টগ্রামের বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক পদে সম্প্রতি যোগদান করা ডা. মোহাম্মদ মহিউদ্দিন।
ডা. সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, জেলা–উপজেলা হাসপাতালগুলো বলতে একরকম অরক্ষিত থাকে। নিরাপত্তার তেমন কোনও ব্যবস্থা নেই। বিশেষ করে রাতে হাসপাতালে জনবল কম থাকে। ওই সময় নারী চিকিৎসকদেরও ডিউটি করতে হয়। পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা না থাকায় হাসপাতালের ডাক্তার–নার্স, স্টাফ
সকলের মাঝে এক ধরনের নিরাপত্তাহীনতা কাজ করে। অনেক সময় চুরির ঘটনাও ঘটে। আবার রোগীর স্বজন বা তৃতীয় কোনও পক্ষের হাতে চিকিৎসক ও হাসপাতালের স্টাফরা নিগ্রহের শিকারও হয়ে থাকেন। এ ধরনের বহু ঘটনার নজির আছে। তাই হাসপাতালেগুলোতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারের দাবি অনেক
আগে থেকেই ছিল। এখন মন্ত্রণালয় এমন সিদ্ধান্ত নেয়ায় তা অবশ্যই সাধুবাদযোগ্য। যদিও আনসারের সংখ্যা কম। এরপরও প্রাথমিকভাবে আগে শুরুটা হচ্ছে, সেটাই বড় বিষয় বলে মনে করেন চট্টগ্রাম জেলা সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. সেখ ফজলে রাব্বি।
মন্ত্রণালয়ের এ সিদ্ধান্ত খুবই যুগোপযোগী মন্তব্য করে চট্টগ্রামের বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. মোহাম্মদ মহিউদ্দিন আজাদীকে বলেন, নিরাপত্তা ব্যবস্থা না থাকায় হাসপাতালের ডাক্তার–নার্স ও অন্যান্য স্টাফরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতেন। বিভিন্ন সময় হাসপাতালে অনাকাঙ্ক্ষিত অনেক ঘটনাও ঘটেছে। সবমিলিয়ে
হাসপাতালে অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ব্যবস্থা বাড়ানো খুবই প্রয়োজন। তাই মন্ত্রণালয় এখন যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা খুবই সময়োপযোগী বলে মনে করেন বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. মোহাম্মদ মহিউদ্দিন।