জীবন কখনও বড় পরীক্ষা হয়ে দাঁড়ায় : কুমার বিশ্বজিৎ

| বৃহস্পতিবার , ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ at ৬:১৪ পূর্বাহ্ণ

কানাডার টরোন্টোতে সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয়ে শিল্পী কুমার বিশ্বজিতের ছেলে নিবিড় কুমার এখনও আইসিইউতে চিকিৎসাধীন। ছেলের এই দুর্ঘটনায় মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন বলে জানিয়েছেন কুমার বিশ্বজিৎ। তার উপলব্ধি হচ্ছে, জীবন কখনও কখনও অনেক বড় পরীক্ষা হয়ে দাঁড়ায়। খবর বিডিনিউজের।

নিবিড়ের দুর্ঘটনার পর থেকে এই ক’দিন সোশ্যাল মিডিয়ায় পাওয়া যায়নি সংগীত শিল্পী কুমার বিশ্বজিৎকে। দেশের কোনো কোনো সংবাদমাধ্যমকে ছেলের শারীরিক অবস্থার কথা জানালেও ফেইসবুকে নিশ্চুপ থেকেছেন তিনি। অবশেষে নীরবতা ভেঙে মঙ্গলবার ফেইসবুকে ছেলের হালনাগাদ অবস্থা ও নিজের মানসিক পরিস্থিতি জানিয়ে দীর্ঘ পোস্ট দিয়েছেন এই শিল্পী। গত ১৩ ফেব্রুয়ারি ঘটে যাওয়া ওই দুর্ঘটনায় গাড়ি চালাচ্ছিলেন নিবিড়। সড়ক বিভাজকে ধাক্কা খেয়ে উল্টে যাওয়ার পর গাড়িতে আগুন ধরে যায়। গাড়িতে থাকা শাহরিয়ার খান মাহির ও আরিয়ান দীপ্ত ঘটনাস্থলেই মারা যান। হাসপাতালে নেওয়ার পর মারা যান এঞ্জেলা শ্রেয়া বাড়ৈ।

কুমার বিশ্বজিৎ তার ফেইসবুক পোস্টে লিখেছেন, ‘‘‘জীবনকখনো কখনো অনেক বড়ো পরীক্ষার অন্য এক নাম। হঠাৎ আসা কোনো ঝড়ের মত গত ১৩ই ফেব্রুয়ারি কানাডার টরন্টো শহরে আমার একমাত্র সন্তান নিবিড় এবং তার তিন বন্ধু আরিয়ান দীপ্ত, শাহরিয়ার খান মাহির ও এঞ্জেলা শ্রেয়া বাড়ৈ এক সড়ক দুর্ঘটনায় পতিত হয়। আরিয়ান, মাহির ও শ্রেয়া আমাদের সবাইকে ছেড়ে অন্য দুনিয়ায় চলে গেছে।”

নিবিড়ের মতোই বাকি তিনজনকে আমি আমার সন্তানই মনে করি। তারা আমার পরিবারেরই একটা অংশ। তাদের সবার সাথেই আমার সম্পর্ক ছিল বন্ধুতুল্য। আমি মেনে নিতে পারছি না তারা নেই। সন্তান হিসেবেই তাদের স্মৃতি আমার হৃদয়ে থাকবে চিরজাগ্রত। আমি তাদের আত্মার শান্তি কামনা করি আর ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করি তিনি যেন আমাদের এই শোক সহ্য করবার শক্তি দেন।’

সৃষ্টিকর্তার কাছে ছেলেকে ফিরে পাওয়ার আকুতি ঝরেছে কুমার বিশ্বজিতের কথায়। ‘আমি ঈশ্বরের কাছে আরও প্রার্থনা করি, তিনি যেন আমাকে ও আমার পরিবারের প্রতি দয়াপরবশ হয়ে আমার ‘নিবিড়’কে আমাদের কাছে ফিরিয়ে দেন। নিবিড় এখনো আইসিইউতে শয্যাশায়ী। এই আকস্মিক ঘটনায় আমি মানসিকভাবে ভীষণ বিপর্যস্ত।’

এই কঠিন সময়ে পরিবারের পাশে থাকার জন্য সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন কুমার বিশ্বজিৎ। ‘আমি আমার সকল বন্ধু, পরিচিতজন এবং ভক্তবৃন্দের কাছে ‘নিবিড়’ এর জন্য দোয়া/আশীর্বাদ কামনা করছি। আর যারা ইতোমধ্যে নিবিড়ের সুস্থতা কামনা এবং আমার পরিবারের এ দুঃসহ অবস্থা কাটিয়ে ওঠার জন্য দোয়া/আশীর্বাদ করেছেন ও করছেন তাদের কাছে আমি চিরঋণী।’ কুমার বিশ্বজিৎ ও নাইমা সুলতানা দম্পতির একমাত্র সন্তান নিবিড়। দুর্ঘটনায় তার আহত হওয়ার খবর পেয়েই কানাডায় ছুটে যান কুমার বিশ্বজিৎ। হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর নিবিড়ের শরীরে দুইবার অস্ত্রোপচার হয়েছে। প্রথমটা মস্তিষ্কে; সেখানে যে রক্ত জমাট ছিল, তা বের করা হয় অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে। আর দ্বিতীয় অস্ত্রোপচার হয় পাকস্থলিতে। তবে প্রয়োজনে চিকিৎসকরা আরও একটি অস্ত্রোপচার করতে পারেন বলেও জানিয়েছিলেন কুমার বিশ্বজিৎ।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসামনে এলো শনিবার বিকেলের ঝলক
পরবর্তী নিবন্ধক্ষুদ্র জাতিসত্তার ভাষা রক্ষার আকুতি জয়ার