বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনরি বলেছেন, জাপান বাংলাদেশের স্ট্র্যাটেজিক পার্টনার হিসেবে ঢাকা মেট্রোরেল, ঢাকা বিমানবন্দরের টার্মিনাল নির্মাণসহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্পের কাজ করে যাচ্ছে। অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদারের অংশ হিসেবে ইকোনমিক পার্টনারশিপ এগ্রিমেন্টের জন্য আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে জাপান সরকার। এছাড়া জাপান সবসময় দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক আরো দৃঢ় করতে সহযোগিতার ক্ষেত্রগুলো চিহ্নিত করছে। এরই অংশ হিসেবে আমরা জিটুবি যোগাযোগের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছি।
গতকাল বুধবার ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে চট্টগ্রামের ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দের সাথে মতবিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন। ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে চট্টগ্রামকে বাংলাদেশ এবং দক্ষিণ এশিয়ার স্ট্র্যাটেজিক হাব হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, চট্টগ্রামে জাপানের অনেক খ্যাতনামা কোম্পানি রয়েছে। যারা ৩০ বছরেরও অধিক সময় ধরে কাজ করছে। তিনি চট্টগ্রামে বিদেশি বিনিয়োগ সম্প্রসারণের ক্ষেত্রে পণ্যের বহুমুখীকরণ এবং মানবসম্পদ উন্নয়নে সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেন।
চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) ও চিটাগাং চেম্বারের প্রশাসক মুহাম্মদ আনোয়ার পাশার সভাপতিত্বে চেম্বারের প্রাক্তন সিনিয়র সহ–সভাপতি এরশাদ উল্লাহ, সহ–সভাপতি সৈয়দ মোহাম্মদ তানভীর, তুরস্কের অনারারি কনসাল জেনারেল সালাহ্উদ্দীন কাসেম খান, জাপান এঙটার্নাল ট্রেড অর্গনাইজেশন ( জেটরো)’র ঢাকাস্থ কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টিটিভ ইউজি অ্যান্ডো, চট্টগ্রামস্থ জাপানের সাবেক অনারারি কনসাল জেনারেল নুরুল ইসলাম, লুব– রেফ’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ ইউসুফ, জাপানস্থ জাতিসংঘ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. ইমাম উদ্দিন, জাপান–বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি’র সাবেক সভাপতি আবদুল হক ও চট্টগ্রাম চেম্বারের যুগ্ম সচিব নুরুল আবছার চৌধুরী বক্তব্য রাখেন।
চেম্বার প্রশাসক মুহাম্মদ আনোয়ার পাশা বলেন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অংশীদার হিসেবে জাপানের সাথে রয়েছে গভীর সম্পর্ক। দেশের বড় বড় মেগা প্রকল্পগুলোতে রয়েছে জাপানের অর্থনৈতিক ও কারিগরি সহায়তা। এছাড়াও দেশের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, জ্বালানি এবং লজিস্টিক সেক্টরে রয়েছে জাপানের সার্বিক সহযোগিতা। তিনি ভবিষ্যতেও এ ধরণের সাহায্য ও সহায়তা অব্যাহত থাকবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তিনি চট্টগ্রামের ভৌগোলিক সুবিধা কাজে লাগিয়ে অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে জাপানি বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগের আহবান জানান।
জেটরোর ঢাকাস্থ কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টিটিভ ইউজি অ্যান্ডো বলেন, চট্টগ্রামে জাপানের অনেক ব্যবসায়ী রয়েছে। চট্টগ্রাম থেকে সরাসরি কোন ফ্লাইট না থাকায় জাপানের সাথে যোগাযোগের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তিনি জাপানি বিনিয়োগকারী এবং ব্যবসায়ীদের জন্য সহজ যোগাযোগের লক্ষ্যে চট্টগ্রাম–ব্যাংকক সরাসরি ফ্লাইট চালু করার বিষয়ে চিটাগাং চেম্বারের সহযোগিতা কামনা করেন। দু দেশের ব্যবসায়ীদের মধ্যে যোগাযোগ, তথ্য বিনিময় এবং ব্যবসায়িক ক্ষেত্র অনুসন্ধানের লক্ষ্যে জেটরোর পক্ষ থেকে কর্মসূচি নেয়ারও আশ্বাস প্রদান করেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন জাপানি দূতাবাসের ফার্স্ট সেক্রেটারি ও হেড অব ইকোনমিক অ্যাফেয়ার্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট মোছিদা ইয়াত্রাও, সেকেন্ড সেক্রেটারি কোবেই ইয়াশি মামি, চেম্বারের সাবেক পরিচালক আমজাদ হোসেন চৌধুরী, ফিলিপাইনের অনারারি কনসাল এম. এ. আউয়াল, বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ের সিনিয়র সহকারী কমিশনার মো. ফখরুল ইসলাম প্রমুখ।
ব্যবসায়ীরা বলেন, জাপানে অনেক কারিগরি কাজের ক্ষেত্র রয়েছে। সেখানে প্রচুর ভিয়েতনামি এবং চাইনিজ নাগরিক কাজ করছে। দেশের তরুণ যুবকদেরকে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ কর্মী হিসেবে গড়ে তুলে জাপানে শ্রমশক্তি রপ্তানির উপর গুরুত্বারোপ করেন ব্যবসায়ীরা। একই সাথে তারা চট্টগ্রামের অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে বিভিন্ন সেক্টরে জাপানের বিনিয়োগের আহবান জানান।