জাতীয় শিক্ষা দিবস :

‘হামিদুর রহমান শিক্ষা কমিশন’ এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ

| শনিবার , ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২২ at ৪:১২ পূর্বাহ্ণ

১৭ সেপ্টেম্বর। সংগ্রাম ও ঐতিহ্যের মহান জাতীয় শিক্ষা দিবস। ১৯৬২ সালের এই দিনে পাকিস্তানি শাসন, শোষণ ও শিক্ষা সংকোচন নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করতে গিয়ে শহীদ হন অনেক ছাত্রনেতা। তাদের স্মরণে এই দিনকে শিক্ষা দিবস হিসেবে পালন করা হয়। পাকিস্তানের সামরিক শাসক আইয়ুব খানের শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তানে ব্যাপক জনরোষ রাজপথে গড়ায়। গণবিরোধী শিক্ষানীতিটি বাতিল করা এবং সর্বজনীন গণতান্ত্রিক শিক্ষাব্যবস্থা গড়ে তোলার দাবিতে ‘সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ’-এর ছাত্র আন্দোলন ব্যাপক রূপ নেয়। ১৭ সেপ্টেম্বর পূর্ব পাকিস্তানে পালিত হয় হরতাল। এই দিন সামরিক জান্তার পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারায় আন্দোলনরত কয়েকজন ছাত্র। একটি শিক্ষানীতি প্রণয়নের লক্ষ্যে তদানীন্তন পাকিন্তান সরকার ১৯৬২ সালে পাকিস্তান সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি হামুদুর রহমানকে চেয়্যারম্যান করে চার সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিশন গঠন করে। এটি ‘হামুদুর রহমান শিক্ষা কমিশন’ নামে পরিচিত। এই কমিশন যে রিপোর্ট প্রণয়ন করে তা ছিল সম্পূর্ণ গণবিরোধী। এটি তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তানের ছাত্র সমাজ, বুদ্ধিজীবী সহ সকল সচেতন মানুষের কাছে অগ্রহণযোগ্য ও প্রত্যাখ্যাত হয়। ফলে বিক্ষোভ দানা বাঁধে। ছাত্ররা অবিলম্বে গণবিরোধী শিক্ষানীতিটি বাতিল করে গণমুখী শিক্ষাব্যবস্থা বাস্তবায়নের পক্ষে সুদৃঢ় অবস্থান নেয়, গঠন করে ‘সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ’। আন্দোলনের এক পর্যায়ে ১৭ সেপ্টেম্বর হরতালের দিন মারমুখী পুলিশ ছাত্রদের ওপর গুলি চালালে নিহত হয় ওয়াজিউল্লাহ, মোস্তফা, বাবুল প্রমুখ ছাত্রনেতা।
গ্রেফতার হয় অনেকে। পরবর্তীকালে আন্দোলনের তীব্রতায় আইয়ুব সরকার শিক্ষানীতিটি বাস্তবায়ন স্থগিত করতে বাধ্য হয়। পাকিস্তানি সামরিক শাসকের বিরুদ্ধে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের এই বিজয় ছিল অত্যন্ত গুরুত্ববহ। এই আন্দোলন স্মরণীয় করে রাখতে পাকিস্তান আমল থেকেই প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠন এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক-সামাজিক সংগঠন ১৭ সেপ্টেম্বর ‘শিক্ষা দিবস’ হিসেবে পালন করে আসছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধশিক্ষা দিবস
পরবর্তী নিবন্ধদৈনিক আজাদী স্বাধীন বাংলাদেশের দর্পণ