জলধর সেন : সাংবাদিক ও শিশুসাহিত্যিক

| বুধবার , ১৫ মার্চ, ২০২৩ at ৬:০৭ পূর্বাহ্ণ

রায়বাহাদুর জলধর সেন (১৮৬০১৯৩৯)। সাহিত্যিক, সাংবাদিক, পর্যটক। ১৮৬০ সালের ১৩ মার্চ কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালি গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। বঙ্গবিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সাপ্তাহিক গ্রামবার্তা প্রকাশিকার সম্পাদক কাঙাল হরিনাথ ছিলেন তাঁর শিক্ষাগুরু। তিনি ১৮৭৮ সালে কুমারখালি স্কুল থেকে এন্ট্রান্স পাস করে জলধর কলকাতার জেনারেল এসেমব্লিজ ইনস্টিটিউশনে ভর্তি হন, কিন্তু এফএ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারেননি। পেশাগত জীবনে তিনি প্রথমে ফরিদপুরের রাজবাড়িস্থিত গোয়ালন্দ স্কুলে শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন (১৮৮১)। পরে তিনি দেরাদুন ও মহিষাদল রাজস্কুলে (১৮৯১) শিক্ষকতা করেন।

১৮৯৯ সালে কলকাতা গিয়ে তিনি বঙ্গবাসী পত্রিকার সম্পাদকের দায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং ১৯০৭০৯ পর্যন্ত হিতবাদী পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন। ১৯০৯১১ পর্যন্ত তিনি সন্তোষের রাজার দেওয়ান হিসেবে কাজ করেন। সেখান থেকে পুনরায় কলকাতায় ফিরে জলধর সুলভ সমাচার (১৯১১) ও ভারতবর্ষ (১৩২০১৩৪৬) পত্রিকা সম্পাদনা করেন। তিনি দুপর্বে (১৯১২১৩, ১৯৩৬৩৮) বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদের সহসভাপতি ছিলেন। জলধরের প্রকৃত প্রতিষ্ঠা একজন লেখক হিসেবে। তিনি পাঠ্যপুস্তক, জীবনী, শিশুসাহিত্য, অনুবাদ, ভ্রমণকাহিনী, উপন্যাস ও ছোটগল্প মিলিয়ে প্রায় ৪২টি গ্রন্থ রচনা করেন। সেগুলির মধ্যে জীবনীগ্রন্থ কাঙাল হরিনাথ (দুই খণ্ড, ১৯১৩, ১৯১৪); ছোটগল্প নৈবেদ্য (১৯০০), কাঙ্গালের ঠাকুর (১৯২০), বড় মানুষ (১৯২৯); উপন্যাস দুঃখিনী (১৯০৯), অভাগী (৩ খণ্ড, ১৯১৫৩২), উৎস (১৯৩২) এবং ভ্রমণবৃত্তান্ত প্রবাসচিত্র (১৮৯৯) ও হিমালয় (১৯০০) প্রধান।

এ ছাড়াও তিনি হরিনাথ গ্রন্থাবলী ও প্রমথনাথের কাব্য গ্রন্থাবলি সম্পাদনা করেন। যাপিত জীবনের সুখদুঃখ ও প্রেমবিরহের এক অনুপম চিত্র জলধর সেনের কথাসাহিত্যের বিশেষ বৈশিষ্ট্য। জলধর সেন তৎকালীন সাহিত্যিকসমাজে বিশেষভাবে জনপ্রিয় ছিলেন। ১৯২২ সালে ব্রিটিশ সরকার তাঁকে ‘রায়বাহাদুর’ উপাধিতে ভূষিত করে। ১৯৩৯ সালের ১৫ মার্চ তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধএই দিনে
পরবর্তী নিবন্ধচট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শব্দদূষণ বন্ধ হোক