জনসমাগমের সংজ্ঞা বিএনপি বুঝবে শনিবার : কাদের

| শনিবার , ২৯ অক্টোবর, ২০২২ at ১০:১৯ পূর্বাহ্ণ

সমাবেশে মানুষের উপস্থিতি নিয়ে দুই দলের নেতাদের মধ্যে কয়েকদিন ধরে পাল্টাপাল্টি বক্তব্যের মধ্যে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, জনসমাগম কাকে বলে শনিবার বিএনপিকে তা বুঝিয়ে দেওয়া হবে। তার দল আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজপথ দখলে রাখতে শনিবার (আজ) থেকেই মাঠে নামবে বলেও জানান তিনি।

গতকাল শুক্রবার নিজের সরকারি বাসভবনে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, বিএনপির তিনটা সমাবেশ দেখেই নাকি সরকারের কাঁপাকাঁপি শুরু হয়ে গেছে, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে বলতে চাই, এখানে সরকারের কাঁপাকাঁপির কি আছে? কোনো কোনো সমাবেশে দশ লাখের টার্গেট করেও এক লাখ হয়নি, আবার কোথাও পাঁচ লাখ টার্গেট করেও এক লাখেরও অর্ধেকও হয়নি। এটাই তো বিএনপির সমাবেশের চেহারা। জনসমাগম কাকে বলে তা আগামীকাল থেকে বিএনপিকে বুঝিয়ে দেওয়া হবে। খবর বিডিনিউজের। বিএনপিকে চ্যালেঞ্জ করে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের ঢাকা মহানগরীতে ওয়ার্ড ও থানার সম্মেলনে কত হাজার লোক হয়েছে তা দেখুন, যা পত্রপত্রিকা ও মিডিয়ায় প্রচারিত হয়েছে। যারা ১৭ কোটি মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে চায়- তাদের বিরুদ্ধে খেলা হবে বলেছি। খেলা হবে হাওয়া ভবন, লুটপাট, অর্থপাচারের বিরুদ্ধে, খেলা হবে দুর্নীতি, বিদ্যুৎবিহীন খাম্বার বিরুদ্ধে। খেলা সোয়া এক কোটি ভুয়া ভোটার সৃষ্টিকারী, ভোটচুরি আর জালিয়াতির বিরুদ্ধে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, খেলা হবে দেশের উন্নয়ন বিরোধীদের বিরুদ্ধে এবং সাম্প্রদায়িক অপশক্তির লালন ও পালনকারীদের বিরুদ্ধে, খেলা হবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় যারা বিশ্বাস করে না তাদের বিরুদ্ধে।

নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা না দিলে কোনো নির্বাচন হবে না, বিএনপি মহাসচিবের এমন বক্তব্য প্রসঙ্গে কাদের বলেন, তার কাছে জানতে চাই, আপনাদের দৃষ্টিতে নিরপেক্ষতার মানদণ্ড কি? সেটা প্রমাণ তো আপনারা ক্ষমতাসীন হয়ে বারবার দেখিয়েছেন। বিএনপির নেত্রীই তো একসময়ে বলেছিলেন পাগল আর শিশু ছাড়া কেউই নিরপেক্ষ নয়, তাহলে আপনারা কি পাগল ও শিশু দ্বারা পরিচালিত তত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন চান? ক্ষমতার মোহে অন্ধ বিএনপি নেতারা সেটাই চাইতে পারেন। দেশে সাংবিধানিকভাবে গঠিত নির্বাচন কমিশন রয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, যার অধীনে যথাসময়ে আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, সরকার শুধু নির্বাচন কমিশনকে সহায়তা দিবে। নির্বাচন কোনো ব্যক্তি বিশেষ বা কোনো দলের খেয়াল খুশি মত হবে না। পৃথিবীর অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশে যেভাবে নির্বাচন হয়, একইভাবে বাংলাদেশেও নির্বাচন হবে।

দেশের রিজার্ভ নিয়ে বিএনপি কথা বলে কোন মুখে? এটা জনগণের প্রশ্ন- এমন দাবি করে কাদের বলেন, রিজার্ভের টাকা সরকার গিলে ফেলেছে না কি আমদানি ব্যয়ে দেশের উন্নয়ন এবং জনগণের কল্যাণে ব্যয় করেছে? রিজার্ভের টাকা তো গিলে ফেলেছে ফখরুল সাহেবরা। রিজার্ভ কত রেখে গিয়েছিলেন মনে আছে? যখন ক্ষমতা ছেড়েছেন তখন যা রেখে গিয়েছিলেন, তা পাঁচ বিলিয়নেরও কম। বিএনপির আমলে রিজার্ভ তো শূন্যই ছিল, সেখান থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের আমলে ৪৮ বিলিয়ন ডলার পর্যন্ত আমাদের রিজার্ভ উঠেছিল। বলেন আজ বৈশ্বিক সংকটের কারণে রিজার্ভ ৪৮ বিলিয়ন থেকে ৩৬ বিলিয়নে এসে ঠেকেছে। এ সংকট শুধু বাংলাদেশের নয়, দুনিয়ার সব উন্নত দেশ হিমশিম অবস্থায় রয়েছে। বর্তমানে যে রিজার্ভ রয়েছে তা দিয়ে আগামী ৫ থেকে ৬ মাস সরকার আমদানি করতে পারবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

পরিবহন ধর্মঘটের জন্য মালিক শ্রমিকদের নিয়ে মির্জা ফখরুলের বক্তব্যের বিষয়ে কাদের বলেন, ২০১৩-১৪ সালে যখন শত শত গাড়ি বিএনপি ভাঙচুর করেছিল, পেট্রোল নিক্ষেপ করে গাড়ি ও পরিবহন শ্রমিকদের পুড়িয়ে মেরেছিল, পরিবহন শ্রমিকদের রিজিকের উপর হাত দিয়েছিল এবং মালিক শ্রমিক পরিবারকে নিঃস্ব করেছিল তারা সেটা এখনও ভুলে যায়নি। ভুলে যায়নি বিএনপির সেই আগুন সন্ত্রাস ও জ্বালাও পোড়াও রাজনীতি। পরিবহন মালিক শ্রমিক নির্দিষ্ট কোনো দলের নন, এখানে সকল দলেরই লোক আছে। বিএনপির বড় নেতা শিমুল বিশ্বাসও বাংলাদেশ শ্রমিক ফেডারেশনের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট। তাকেই জিজ্ঞেস করুন কেন ধর্মঘট করেছে?

মালিক সমিতি সব দলের সমন্বয়ে গঠিত জানিয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী কাদের বলেন, সমিতির সভাপতি জাতীয় পার্টির ও সাধারণ সম্পাদক আওয়ামী লীগ সমর্থিত। অন্যান্য সব দলেরই প্রতিনিধিত্ব রয়েছে। বিএনপি নেতাদের তাদের সঙ্গে কথা বলার আহ্বান জানিয়ে কাদের বলেন, তাদের জিজ্ঞেস করুন কেন তারা আপনাদের ভয় পায়, কেন ২০১৩-১৪ সালের দুঃসহ স্মৃতি আজও ভুলতে পারেনি, তাদের জিজ্ঞেস করুন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসরকার খুব কঠিন অবস্থায় পড়েছে : ফখরুল
পরবর্তী নিবন্ধচট্টগ্রামে ডেঙ্গুতে আরও একজনের মৃত্যু আক্রান্ত ১৮