জনপ্রিয়তাকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করি না

বিশ্বজিৎ চৌধুরী | শুক্রবার , ২৮ জানুয়ারি, ২০২২ at ৮:২৮ পূর্বাহ্ণ

শিশুসাহিত্য দিয়ে লেখালেখির শুরু। উপন্যাস, ছোটগল্প, কবিতাসহ সৃজনশীল সাহিত্যে তাঁর অবাধ বিচরণ। এপর্যন্ত ত্রিশটির মতো বই বেরিয়েছে। ‘লিন্ডা জনসনের রাজহাঁস’ (কিশোর গল্পগ্রন্থ), ‘সম্ভ্রমহানির আগে ও পরে’ (গল্পগ্রন্থ), ‘মাঠের ওপারে যাবে, লীলা?’ (কাব্যগ্রন্থ) সমালোচকদের প্রশংসা কুড়িয়েছে। তাঁর ‘নার্গিস’ ও ‘বাসন্তী, তোমার পুরুষ কোথায়’ ‘কবি ও রহস্যময়ী’ এসময়রে পাঠকপ্রিয় উপন্যাস। লেখালেখির বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন আহমেদ মুনির।

লেখালেখির শুরু কখন হয়েছিল?

একেবারে কম বয়সে শিশুতোষ ছড়া লেখার মধ্য দিয়ে লেখালেখির শুরু। তখন সপ্তম কি অষ্টম শ্রেণিতে পড়ি। কৈশোরে বিভিন্ন পত্রিকায় ছড়া, কিশোর গল্প পাঠাতাম। ২২ বছর বয়সে প্রকাশিত হয় প্রথম কিশোর গল্প সংকলন ‘লিন্ডা জনসনের রাজহাঁস’। এ সংকলনের গল্পগুলো মাত্র ১২ থেকে ১৪ বছর বয়সে লেখা।

লেখালেখির শুরুটা হলো কীভাবে? এতকিছু থাকতে এমাধ্যমে কেন এলেন?

বড় বোন খুব বই পড়তেন। তার কাছ থেকে বই পড়ার অভ্যাস পেয়েছি। আট বছরের বড় বোন বই কিনতে পাঠাতেন আমাকে। এছাড়া বাড়িতেও কিছু বই ছিল। আমার ঠাকুরদার একজন অকালপ্রয়াত ভাই ছিলেন। নাম বিমল। তাঁর নামেই পতেঙ্গার বাড়িতে ছিল ‘বিমল কুঞ্জ পাঠাগার’ নামের একটি ছোটখাট লাইব্রেরি। লালশালুতে বাঁধাইকরা বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়, তারাশংকরসহ অসংখ্য লেখকের বইয়ের স্মৃতি আজও মনে ভাসে। পতেঙ্গার সেই বাড়ির কিছু বই শহরের আলকরণের বাড়িতে নিয়ে এসেছিলেন বাবা। তবে একাত্তরে আলকরণের বাড়িটি লুট হয়। সেই বইগুলো আর পাওয়া যায়নি। হারিয়ে যাওয়া বইগুলোর জন্য খুব মন খারাপ হতো। দশম শ্রেণিতে ‘সঞ্চয়ন পাঠাগার’ নামে নিজেই একটি বইয়ের সংগ্রহ গড়ে তুলি। এই কাজের প্রধান অনুপ্রেরণা ছিল আমার বড় বোন। ‘দস্যু বনহুর’, ‘দস্যু বাহারাম’ ও ‘স্বপন সিরিজের’ বই পড়ে দিনের পর দিন আচ্ছন্ন হয়ে থেকেছি। সেরকমটাই লিখতে চেয়েছি।

প্রথম লেখা ছাপা হয়েছিল কবে?

প্রথম ছাপা হওয়া লেখাটি ছিল ছড়া। ‘বাংলার মুখ’ নামে একটি পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল। কত সালে মনে নেই। এরপর স্কুলে পড়ার সময় ‘কচিকাঁচার আসর’, ‘কিশোর বাংলা’, ‘পূর্ব দেশ’, ‘খেলাঘর আসর’, ‘নবারুণ’, ‘ধানশালিখের দেশে’ ও ‘শিশু’ নামের সাময়িকী এবং পত্রিকার শিশুদের পাতায় নিয়মিত লেখা ছাপা হয়েছে।

লেখালেখির খুব কি প্রয়োজন ছিল? আজ এত বছর পরে এসে এমন প্রশ্ন মনে জাগে?

দেখুন, আমার খুব আনন্দময় একটি শৈশব ছিল। খুব প্রাণবন্ত পাড়ায় বড় হচ্ছিলাম। বন্ধু উৎপলের সঙ্গে পাবলিক লাইব্রেরিতে পড়তে যেতাম। বই পড়তে পড়তে একটা নিঃসঙ্গতার বোধ তৈরি হতে থাকে। আর নিজেকে নিয়ে পূর্ণাঙ্গ সন্তুষ্টি ছিল না। হয়তো কোথাও ঘাটতি ছিল। পাশাপাশি সে সময় বই পড়ে প্রেমের অনুভূতি হতো। অথচ বন্ধুরা তখনো কেউ প্রেমে পড়েনি। ওই বয়েসে সেই অনুভূতি তৈরি হওয়ার কথাও নয়। কিন্তু আমার প্রেমের প্রতি আকুতি তৈরি হলো। মনে হতো আমি কাউকে ভালোবাসব। সেও আমাকে ভালোবাসবে। আর তখন একটা মেয়ের প্রতি বিশেষ অনুভূতি তৈরি হলো। এসবের টানাপোড়েনেই লেখালেখির শুরু। আসলে একটা শূন্যতার বোধ না থাকলে লেখালেখি হতো না।

তা সেই মেয়েটি কে? প্রেম কি এখনো টিকে আছে?

নাম বলব না। তাকে এখনো দেখি। দেখে নিজের জন্য খারাপ লাগে। নিজের কৈশোরের জন্য খারাপ লাগে। কলেজজীবনে এসে প্রেমরাজনীতি দুটোই আমাকে ভীষণ পেয়ে বসল। বলা যায় জড়িয়ে পড়লাম। ছাত্র ইউনিয়নে যোগ দিয়ে সামরিক সরকার বিরোধী আন্দোলনে জড়িয়ে গেছি। এসবই আসলে লেখক জীবনে ভীষণ ছাপ ফেলেছে।

এই যে লিখছেন, অপরাপর মানুষের চেয়ে একটু ঊর্ধ্বে আছেন বলে মনে হয়?

সত্যি করে বললে একটু শ্লাঘা বোধ করি। চারপাশের জগৎকে, পরিপার্শ্বকে নিজের মতো করে প্রকাশ করতে পারি। এটা যারা পারে না তাদের দুর্ভাগা মনে হয়।

এই বোধটা কি এলিয়েনেশন তৈরি করে? আর লেখক শ্রেয়তর, এই ধারণা কি ঠিক?

লেখক শ্রেয়তর এই ধারণা ঠিক নয়। কেবল বলতে চেয়েছি, সাধারণ মানুষের বিশেষভাবে দেখার ক্ষমতার ঘাটতি রয়েছে। এই বিষয়ে নিজেকে এগিয়ে রাখি। তবে সাধারণ মানুষের বিচিত্র বৈশিষ্ট্য, মানবিকগুণ এসব আমাকে বরাবরই আকৃষ্ট করে। তাদের ক্ষমতা আমাকে মুগ্ধ করে।

সম্ভ্রমহানির আগে ও পরে’, ‘সায়রা বানু সিন্ড্রোম’, ‘আত্মজ ও একটি নীল মনিটর’ আপনার লেখা এসব গল্পের প্রসঙ্গে যখনই আলাপ করি, তখন একটা দীর্ঘশ্বাস লক্ষ করি। আপনি প্রায় বলেন, এ ধরনের গল্প আর লেখা হয় না। কেন লেখা হয় না?

প্রথমে যে গল্পের কথা উল্লেখ করলেন তার মধ্যে ‘কৃষ্ণ গোপালের ভবিষ্যৎ’ ছাপা হয় মিজানুর রহমানের ত্রৈমাসিক পত্রিকায়। এই গল্প ছাপার পর সম্পাদক মিজানুর রহমান আমাকে একটি পোস্টকার্ড পাঠান। সেখানে লেখা ছিল, আমাদের দেশের ছোট গল্পের কারিগরেরা যে হারিয়ে যাননি, আপনার এই গল্প পড়ে তাই মনে হলো। এধরনের গল্প বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় ছাপা হয়েছে। প্রশংসাও পেয়েছি। তবে প্রথম দুটি গল্পগ্রন্থ ‘বিবাহবার্ষিকী ও অন্যান্য গল্প’ এবং ‘সম্ভ্রমহানির আগে ও পরে’ প্রকাশিত হওয়ার পর পাঠক প্রতিক্রিয়া পাইনি। অনেকে পড়েননি। এই উপেক্ষা আমাকে নানাভাবে কষ্ট দিয়েছে। যদি করো সঙ্গে যোগাযোগই করতে না পারলাম তবে লিখে কী লাভ?

কবিতা, ছোটগল্প বা উপন্যাস সব মাধ্যমে কাজ করেছেন। কোন সত্তাকে ধারণ করেন।

সব্যসাচী লেখক বলে একটা বিষয় আছে, আমি তা নই। একই সময়ে দুটো কাজ করতে পারি না। কবিতা লেখার সময় গদ্য আসে না। আবার উপন্যাস, ছোটগল্প লেখার সময় কবিতা যেন একেবারে উধাও হয়ে যায়। যখন কবিতার ঘোরের মধ্যে থাকি তখন মনে হয় আমি কবি, যখন উপন্যাস লিখি নিজেকে ঔপন্যাসিক মনে হয়। তবে একটা কথা, নিজের লেখালেখি নিয়ে আমি সন্তুষ্ট নই একেবারেই।

নজরুলের জীবনীভিত্তিক দুটো উপন্যাস ‘নার্গিস’ এবং ‘কবি ও রহস্যময়ী’ আপনাকে পাঠকদের কাছে নতুনভাবে চিনিয়েছে। দুটি উপন্যাসেই আপনি নজরুলের ব্যক্তি জীবন, প্রেম, বিশেষভাবে বললে তাঁর জীবনে আসা নারীদের ওপর আলো ফেলেছেন। কিন্তু নজরুলের সাহিত্যকীর্তি ও সাহিত্যিক অর্জন নিয়ে কিছু নেই উপন্যাসে। অবশ্য থাকতে হবে এমন কথাও নেই। তবে এক্ষেত্রে নজরুল নিয়ে আপনার মূল্যায়ন জানতে চাইছি। বুদ্ধদেব তাকে কিশোর প্রতিভা হিসেবে দেখতেন। তার সম্পাদিত আধুনিক কবিতা সংকলনে নজরুলের জায়গা হয়নি।

প্রথমদিকে কিন্তু নজরুলকে নিয়ে খুব উচ্ছ্বাস ছিল বুদ্ধদেবের। তাঁর স্ত্রী প্রতিভা বসু, বিয়ের আগে যার নাম রানু সোম ছিল, তিনিও নজরুলের ছাত্রী ছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নজরুল আসার পর বুদ্ধদেব তার সঙ্গে থেকেছেন। নজরুলের সংবর্ধনা কমিটিতেও তিনি ছিলেন। তবেপরে সেই মুগ্ধতা থাকেনি। বুদ্ধদেবের সাহিত্যরুচি পরবর্তী সময়ে বদলে যায়। আসলে নজরুলের প্রতিভা ও সাহিত্যকীর্তি মূল্যায়ন করতে হলে সময়কে বিবেচনায় নিতে হবে। তিনি একাধারে দরদি যৌবনদীপ্ত কবি, সৈনিক, ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী, লেখক, সাংবাদিক, চলচ্চিত্রনির্মাতা। তার কোন পরিচয়কে খাটো করা যাবে? এতকিছু করার পর তার জনপ্রিয়তাও বিস্ময়কর। সমালোচকদের একপাশে ফেলে জনসাধারণের মন জয় করেছেন তিনি। তাকে এক নজর দেখার জন্য ভিড় তৈরি হয়ে যেত। সাধারণ মানুষের ওপর তার বিস্ময়কর প্রভাব ছিল। তিনি হয়ে উঠেছিলেন সেই সময়কার এক ধ্রুবতারা।

লেটোর দলের নজরুল থেকে এমন ধ্রুবতারা হয়ে ওঠার পথরেখাটাও খুব ঘটনাবহুল। এনিয়ে সার্থক উপন্যাস কেউ লিখবেন হয়তো। তবে নজরুলকে নিয়ে সাধারণ মানুষের ভেতরে প্রবল উচ্ছ্বাস থাকলেও তার সমসাময়িক সাহিত্যিকেরা ততটা উচ্ছ্বসিত ছিলেন না। ‘বিদ্রোহী’ কবিতায় মোহিতলাল নিজের ছায়া খুঁজে পেয়েছিলেন।

মোহিতলাল মজুমদার প্রচার করতেন নজরুল তার শিষ্য। অথচ বিষয়টা সেরকম ছিল না মোটেই। নজরুল করো শিষ্য হওয়ার জন্য জন্মাননি। মোহিতলালের ‘আমি’ নামের নিবন্ধ আগে লেখা হলেও সেটির সঙ্গে বিদ্রোহীর কোনো মিলই নেই। বিদ্রোহী বাংলা কবিতায় স্থায়ী আসন করে নিয়েছে। এটি বিশ্ব সাহিত্যেরও অমূল্য সম্পদ। আসলে নিজের জনপ্রিয়তার জন্য মানুষকে মাশুল দিতে হয়। নজরুলকেও তা দিতে হয়েছে। তবে নজরুল নয়, প্রথম উপন্যাসে নার্গিসই ছিলেন আমার লেখার প্রেরণা। স্কুলে পড়ার সময় একবার এক অনুষ্ঠানে নার্গিসকে লেখা নজরুলের একটি চিঠি পাঠ করেছিল আমার ওপরের ক্লাসের কোনো এক ছাত্র। ওই চিঠি পাঠের স্মৃতি আমার মনে স্থায়ী হয়ে গিয়েছিল। তখন থেকেই নার্গিসের কথা ভাবতে শুরু করি। আরও বহুদিন পর এই চিঠি আবার পড়ি। পড়ে চমকে উঠি। ১৭ বছর কবির জন্য তিনি প্রতীক্ষা করেছেন। ১৭ বছর অপেক্ষা সহজ কথা নয়। তখন নার্গিসের জীবন নিয়ে উৎসাহী হই। অসুবিধার বিষয় যেটা, নার্গিস হলো নজরুলজীবনীর মাত্র একটি অধ্যায়। ফলে তাকে নানাদিক থেকে দেখার চেষ্টা করলাম। নজরুলের বিয়ে সংক্রান্ত নানা বই ঘেঁটেছি। পরে নানা বই পড়ে মুজাফফর আহেমদের লেখা নজরুল জীবনী যথার্থ মনে হয়নি। নার্গিস সম্বন্ধে তার ধারণা একপেশে ছিল। ধীরে ধীরে আবিষ্কার করলাম, নার্গিস তেজস্বী দীপশিখার মতো এক নারী। তবে নজরুলের জীবনে আরও নারী এসেছে। এর মধ্যে একজন তাকে প্রত্যাখ্যানের বেদনায় জর্জরিত করেছেন। তিনি ফজিলতুন্নেসা। প্রথম মুসলিম নারী, যিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক হয়েছেন। নজরুল তার প্রেমে পড়েছিলেন। তবে তিনি তো নার্গিস নন। তিনি খুব সহজেই নজরুলকে ফিরিয়ে দিতে পেরেছিলেন। আসলে নজরুলের সাহিত্যের চেয়েও তার বহুবিচিত্র বর্ণিল জীবন আমাকে টেনেছে। সব মিলিয়ে খুব অন্যরকম চরিত্র। আমি তাকে নিয়ে আরও একটি উপন্যাস লিখব। আশালতা বা প্রমিলাকে ঘিরে আবর্তিত হবে এর কাহিনি। এর মধ্য দিয়ে পূর্ণ হবে এই সিকুয়েলটি।

সার্থক উপন্যাস কাকে বলে? আপনার পড়া কোন উপন্যাসগুলিকে মনে হয়েছে সার্থক?

মানিকের ‘পুতুল নাচের ইতিকথা’, বঙ্কিমের ‘কৃষ্ণকান্তের উইল’ মার্কেজের ‘লাভ ইন দা টাইম অব কলেরা’, ‘ক্রনিকেল অব আ ডেথ ফরটোল্ড’ ও ‘ওয়ান হান্ড্রেড ইয়ারস অব সলিচিউড’ দস্তয়েভস্কির ‘ক্রাইম অ্যান্ড পানিশমেন্ট’ এসব উপন্যাস যেন গ্রিক ট্র্যাজেডির মতোই নিয়তি নির্ভর। মানুষের অসহায়ত্ব আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়। বড় মাপের উপন্যাসে এবিষয়টা ঘুরে ফিরে আসতে দেখি। এধরনের লেখা আমাকে নিজের মুখোমুখি করে।

জনপ্রিয় পুরস্কার জয়ী, না বিরলপাঠ সুসাহিত্যিক হতে চান?

এসব নিয়ে ভাবি না। আমি আমার লেখাটা লিখতে চাই। পাঠকের কাছে পৌঁছাতে চাই।

কত সময়ের মধ্যে পৌঁছাতে চান?

সময়কালের কথা কেন আসছে!

ধরুন, আজকে আপনার লেখাটা পাঠক নিল না। অনেক ক্ষেত্রে দেখা গেছে জনপ্রিয় সাহিত্যেরও পাঠক পেতে সময় লেগেছে। মেলভিলের ‘মবিডিক’ সমকালে পাঠকপ্রিয়তা পায়নি।

আপনার কথা শুনে মনে হচ্ছে ৫০ বছর পর পাঠকপ্রিয় হওয়ার সম্ভাবনার কথা মাথায় রেখে আমার চেষ্টা করা উচিত সমকালে কিছুতেই জনপ্রিয় না হওয়া। কিন্তু অনেক সাহিত্যিক তার সমকালে ভালো লিখেছেন, জনপ্রিয়ও হয়েছেন। রুশ সাহিত্যিকদের মধ্যে এমন উদাহরণ অজস্র। গার্সিয়া মার্কেজও তাই ছিলেন। সুতরাং এসব না ভেবে লিখে যাওয়াটাই লেখকের কাজ।

জনপ্রিয়তা কি একটা ফাঁদ?

কোনো কোনো ক্ষেত্রে তাই। অনেক লেখক বেশি পাঠকের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষার জন্য নিজেদের ওপর সুবিচার করতে পারেননি। কিন্তু জনপ্রিয় হওয়াও অন্যায় কিছু নয়।

আপনি কি কখনো নিজেকে হুমায়ূন আহমদের জায়গায় দেখেছেন। সে চেষ্টা কি কখনো করেছেন?

আমি সে চেষ্টা করিনি। প্রশ্নটাতেই বিব্রতবোধ করছি। করলে সমর্থ হতাম কিনা সে ব্যাপারে নিশ্চিত নই। সাহিত্যে জনপ্রিয় হওয়ার এমন কোনো ফর্মুলা নেই। জনপ্রিয়তাকে আমি তুচ্ছতাচ্ছিল্যও করি না।

আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা জানতে চাই।

বেশ কয়েকটা উপন্যাসের বিষয় ঠিক করে রেখেছি। এখনো মনের মতো একটা উপন্যাস লেখা হয়ে ওঠেনি। দেখা যাক লিখতে পারি কিনা। লেখালেখি করেই তো বাঁচতে হবে। পরিত্রাণ পেতে হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধঅভিবাদনেষু
পরবর্তী নিবন্ধচন্দনাইশে জেলি মিশ্রিত গলদা চিংড়ি জব্দ জরিমানা