ছয় বছরের ভোগান্তির অবসান

খুলে দেয়া হলো আরাকান সড়কের বন্ধ অংশ

আজাদী প্রতিবেদন | শনিবার , ২৬ মার্চ, ২০২২ at ৭:১১ পূর্বাহ্ণ

অবশেষে সংস্কার কাজ শেষে যান চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হলো আরাকান সড়কের (বহদ্দারহাট-কালুরঘাট) বন্ধ থাকা অংশটি। সড়কটির বহাদ্দারহাট ফ্লাইওভারের র‌্যাম্পের সামনে থেকে খতিব বাড়ির মুখ পর্যন্ত ৭৬১ মিটার অংশের একপাশ (বাম দিকে) গত ছয় বছরের বেশি সময় ধরে বন্ধ ছিল। এতে সেখানে জনভোগান্তি ছিল তীব্র। সর্বশেষ নগরে জলাবদ্ধতা নিরসনে চলমান মেগা প্রকল্পের আওতায় সংস্কার শেষে গত রাতে তা খুলে দেয়া হয়। এর মধ্য দিয়ে অবসান ঘটলো দীর্ঘ অর্ধযুগের বেশি সময়ের ভোগান্তির।
জানা গেছে, ২০১৬ সালের শুরুতে চট্টগ্রাম ওয়াসা পানি সরবরাহ প্রকল্পের পাইপলাইন বসানোর জন্য সড়কের বহাদ্দারহাট থেকে কালুরঘাট পর্যন্ত চার কিলোমিটার পর্যন্ত বামপাশের পুরোটাই বন্ধ রাখে। পাইপ লাইন বসানো শেষ হলে তা ২০১৮ সালে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনকে (চসিক) বুঝিয়ে দেয় ওয়াসা। এরপর একই বছরের শেষ দিকে ৭২ কোটি টাকায় ঠিকাদার নিয়োগ দেয় চসিক। ২০১৯ সালের জুলাই মাসে আনুষ্ঠানিকভাবে কাজ শুরুও হয়। তবে কাজ শেষ হওয়ার আগে কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন লিমিটেড সড়কটির কিছু অংশে আবার কাটে। এর কিছুদিন পর খোঁড়াখুঁড়ি করে বিটিসিএল। ফলে নির্দিষ্ট সময়ে কাজ শেষ করতে পারেনি চসিক।
পরবর্তীতে ২০২০ সালে সড়কের সিংহভাগ কাজ শেষ হলেও বহাদ্দারহাট ফ্লাইওভারের র‌্যাম্পের সামনে থেকে খতিব বাড়ির মুখ পর্যন্ত অংশে কাজ আটকে যায়। তবে তার আগে মেকাডম করে ঢালাই দেয়ার প্রস্তুতি নেয় চসিক। কিন্তু ঢালাই দেয়ার আগ দিয়ে সিডিএ’র জলাবদ্ধতা নিরসনের মেগা প্রকল্পের জন্য পুনরায় কাজ বন্ধ করে দিতে হয় চসিককে।
মেগা প্রকল্পের আওতায় রাস্তার বাম পাশে ডোমখালে রিটেইনিং ওয়াল, ব্রিজ ও কালভার্ট নির্মাণ কাজ শুরু করে প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। এ কাজ করতে গিয়ে চসিক পূর্বে যে মেকাডম করে সেটা নষ্ট হয়ে যায়। তাই মেগা প্রকল্পের আওতায় অংশটি সংস্কার করে দেয় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। সংস্কার শেষ হওয়ায় গত রাতে তা যান চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রকল্প পরিচালক লে. কর্নেল শাহ আলী দৈনিক আজাদীকে বলেন, আমরা গত বছর (২০২১) রিটেইনিং ওয়ালের কাজ শুরু করেছিলাম। সেটা শেষ হয়েছে। এ কাজ করতে গিয়ে সড়কটির এক পাশ বন্ধ রাখতে হয়েছিল। সেটাও আমরা সংস্কার করে দিয়েছি।
তিনি বলেন, গত বছরই আমরা রাস্তার কাজ শেষ করে দিতাম। কিন্তু বর্ষা শুরু হওয়ায় পারিনি। তবে তখনি আমরা বিভিন্ন মালামাল এনে রেখে দিয়েছিলাম। চলতি শুষ্ক মৌসুমে কাজ শুরু করি। আজ (গতকাল) সেটা সম্পন্ন হয়েছে। রাত থেকে গাড়ি চলবে। তিনি বলেন, খালের পাশে সড়কটি আমরা উঁচু করেছি। এতে অপর পাশ নিঁচু হয়ে যায়। তাই আমরা সে পাশটিও উঁচু করে দিয়েছি। ৩৫০ মিটার দুই লেন এবং ৪১১ মিটার চার লেন করে দিয়েছি আমরা। ফুটপাতসহ মোট ৭৬১ মিটার সড়ক আমরা মেরামত করে দিয়েছি। মেগা প্রকল্পের আওতায় ডোমখালে একাট কালভার্ট এবং ৫টি ব্রিজ নির্মাণ করা হয় বলেও জানান তিনি। এর মধ্য কালভার্টটি করা হয় ওয়াসার রির্জাভারের সামনে। চারটি ব্রিজ করা হয় বাস টার্মিনালে প্রবেশের মুখে।
এদিকে দীর্ঘ ছয় বছরের ভোগান্তির অবসান ঘটায় সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা। তারা বলছেন, এতদিন বন্ধ থাকা অংশটিতে উভয়মুখী যান চলাচল করতে হয়েছে রাস্তার একপাশ দিয়ে। দুই লেন রাস্তায় চার লেনের গাড়ি চলাচল করতে গিয়ে প্রতিদিনই রাস্তাটিতে ভয়াবহ যানজট তৈরি হতো। ধুলোবালিতে মানুষের জীবন অতিষ্ট হয়ে উঠেছিল। এখন সেই ভোগান্তি কমবে বলে আশা তাদের।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপাঁচ দিন পর চালু রেলের কম্পিউটার টিকেটিং সিস্টেম
পরবর্তী নিবন্ধবিএনপি স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তির রক্ষাকবচ ও প্রধান পৃষ্ঠপোষক : তথ্যমন্ত্রী