ছোট ভাই হত্যার প্রতিশোধ নিতে পরিকল্পনা ও খুন

র‌্যাবের অভিযানে মূলহোতাসহ গ্রেপ্তার ৩

আজাদী প্রতিবেদন | সোমবার , ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২২ at ১০:২১ পূর্বাহ্ণ

কারাগারে থাকা মামুন মুক্তি পেয়েই ছোট ভাই হত্যার প্রতিশোধ নিতে শহিদুল ইসলাম আকাশকে হত্যার পরিকল্পনা করে। তার সেই পরিকল্পনায় যোগ দেন মুকেশসহ কয়েকজন। পরিকল্পনা অনুযায়ী নিজ দোকানেই আকাশকে হত্যা করেন তারা। অভিযানে মামুনসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। রোববার দুপুরে নগরীর চান্দগাঁও ক্যাম্পে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন র‌্যাব-৭ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এমএ ইউসুফ ।
এর আগে, গত শনিবার বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তাররা হলেন মীরসরাই উপজেলার জোরারগঞ্জ থানার ইসলামপুর এলাকার মিন্টু মিয়ার ছেলে মো. মামুন ও মো. ইকবাল এবং একই থানার পশ্চিম পরাগপু এলাকার তপন কুমার দাসের ছেলে মুকেশ চন্দ্র দাস ওরফে সৌরভ দাস। র‌্যাব জানায়, ঘটনার দিন (সোমবার) বাবার সঙ্গে নিজেদের ফার্নিচার দোকানে বসে ছিলেন আকাশ। সন্ধ্যায় অস্ত্রসহ সহযোগীদের নিয়ে দোকানটিতে যান মামুন। ওই সময় মামুনসহ সবাই আকাশকে উদ্দেশ্য করে গালাগাল করতে থাকেন। এর প্রতিবাদ করলে আকাশকে টেনে দোকানের বাইরে নিয়ে যান মামুন। একই সঙ্গে কিরিচ দিয়ে মাথার পেছনে আঘাত করেন। এতে আকাশ মাটিতে লুটিয়ে পড়লে নিজ হাতে থাকা ধামা দিয়ে গলায় ও থুতনিতে আঘাত করেন মোতালেব। ছেলেকে বাঁচাতে এগিয়ে গেলে আকাশের বাবাকেও ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে দেন মামুন। এরপর তার বুকের ওপর বসে বেশি নড়াচড়া করলে গলা কেটে হত্যার হুমকি দেন। এতেও ক্ষান্ত হননি মামুনরা। তারা ছুরি, কিরিচ ও বিভিন্ন ধারালো অস্ত্র দিয়ে আকাশকে এলোপাতাড়ি আঘাত করেন। একপর্যায়ে স্থানীয়রা এগিয়ে গেলে তারা পালিয়ে যান। পরে গুরুতর অবস্থায় আকাশকে উদ্ধার করে মীরসরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেঙে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরবর্তীতে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ৯টার দিকে তিনি মারা যান। ওই ঘটনায় বুধবার জোরারগঞ্জ থানায় ১৪ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরো ৭-৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন আকাশের বোন।
লেফটেন্যান্ট কর্নেল এমএ ইউসুফ জানান, ৯ সেপ্টেম্বর ব্যবসায়িক দ্বন্দ্বের জেরে দুর্বৃত্তের হাতে খুন হন মামুনের ছোট ভাই আফজাল হোসেন। ওই সময় মামুন এবং তার আরেক ভাই ইকবাল নারী ও শিশু নির্যাতন আইনের মামলায় জেলে ছিলেন। গত ১৩ সেপ্টেম্বর জামিনে মুক্তি পান মামুন। মুক্তি পেয়েই ভাই হত্যার প্রতিশোধ নিতে সহযোগীদের নিয়ে শহিদুল ইসলাম আকাশকে হত্যার পরিকল্পনা নেন। তিনি আরো বলেন, ঘটনার পর আত্মগোপনে চলে যান জড়িতরা। তাদের ধরতে নজরদারি অব্যাহত রাখে র‌্যাব। এরই ধারাবাহিকতায় শনিবার বিকেলে নগরের পাহাড়তলী থানার সিডিএ মার্কেট এলাকা থেকে মূলহোতা মামুনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তার দেওয়া তথ্যে রাতে চাঁদপুরের পুরান বাজার এলাকা থেকে মুকেশ চন্দ্র দাস ওরফে সৌরভ দাস ও সন্ধিগ্ধ আসামি মো. ইকবালকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নিতে তাদের সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবাবার লাশ বাড়িতে রেখে পরীক্ষা দিতে গেল মেয়ে
পরবর্তী নিবন্ধশেষ দিনে ১২ জনের মনোনয়ন প্রত্যাহার