হাটহাজারী উপজেলার চৌধুরীহাটে বসা কোরবানি পশুর অস্থায়ী বাজার থেকে গতকাল শনিবার পূর্ব ঘোষিত খাস আদায়ের মাধ্যমে হাসিল আদায় করেনি চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক)। এর আগে শুক্রবার বাজারটিতে হাসিল আদায়ের ঘোষণা দিয়ে মাইকিং করা হয়েছিল। যার প্রতিবাদ জানান স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দসহ বাজারটির উদ্যোক্তারা। বিষয়টি নিয়ে গতকাল শনিবার কয়েক দফা বৈঠক শেষে আজ রোববার থেকে খাস আদায়ের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
জানা গেছে, দক্ষিণ পাহাড়তলী ওয়ার্ডের শতবর্ষী চৌধুরীহাটে বসা কোরবানি পশুর অস্থায়ী বাজারটি থেকে এবারই প্রথম হাসিল আদায়ের উদ্যোগ নেয় চসিক। খাস আদায়ের মাধ্যমে এ হাসিল আদায়ে ভূ–সম্পত্তি কর্মকর্তা চসিক তিন সদস্যের একটি কমিটিও গঠন করে। স্থানীয় লোকজন এর প্রতিবাদ জানিয়ে দাবি করেন, যে স্থানে বাজারটি বসে তা রেলওয়ের জায়গা। ইজারা ও হাসিলবিহীন পশু বিকিকিনিই এ বাজারের ঐতিহ্য। পরে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ চসিকের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদের সমাবেশের ডাক দেয়। এতে ‘শান্তিবিঘ্নে’র শঙ্কা থাকায় বিষয়টি মীমাংসার উদ্যোগ নেয় স্থানীয় প্রশাসন।
বিষয়টি নিয়ে গতকাল স্থানীয় কাউন্সিলর, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, চসিকের ভূ–সম্পত্তি কর্মকর্তাসহ দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা বৈঠক করেন। পরে রাতে বহাদ্দারহাটে মেয়রের বাসভবনে আরেকটি বৈঠক হয়েছে। এতে সিদ্ধান্ত হয়, খাস আদায় করা হবে। যা তদারকিতে থাকবেন স্থানীয় কাউন্সিলর। নাম প্রকাশ না করার শর্তে বৈঠকে উপস্থিত এক কর্মকর্তা দৈনিক আজাদীকে তা নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, খাস কালেকশন চলবে। তবে দক্ষিণ পাহাড়তলী ওয়ার্ড কাউন্সিলর গাজী মো. শফিউল আজিম আজাদীকে বলেন, হাসিল আদায় করা হবে না। তবে সিটি কর্পোরেশনকে রাজস্ব হিসেবে টাকা দেয়া হবে।
জানা গেছে, গত ১১ মে জেলা প্রশাসন বরাবর ২৩টি অস্থায়ী হাট বসানোর অনুমতি চেয়ে আবেদন করে চসিক। এতে হাটহাজারী থানার চৌধুরীহাটের বাজারটিও অন্তর্ভুক্ত ছিল। পরবর্তীতে ১৪ জুন জেলা প্রশাসন চসিককে ৯টি হাট বসানোর অনুমতি দেয়। সেখানে চৌধুরীহাটের পশুর বাজারটি ছিল না। এর কারণ হিসেবে জানা গেছে, জেলা প্রশাসন সিএমপি থেকে চসিকের প্রস্তাবিত বাজারগুলোর বিষয়ে মতামত সংগ্রহ করে। কিন্তু মেট্রোলপলিটন এলাকায় না হওয়ায় বাজারটি নিয়ে সিএমপি মতামত দেয়নি। সর্বশেষ জেলা পুলিশের মতামত পাওয়ার পর ২১ জুন চৌধুরীহাটে পশুর বাজার বসানোর জন্য চসিককে অনুমতি দেয় জেলা প্রশাসন।
এদিকে ২০ জুন থেকে কোরবানি পশুর হাটগুলো শুরু হয়। এ অবস্থায় সময় না থাকায় দরপত্রের মাধ্যমে ইজারাদার নিয়োগের সুযোগ নাই। তাই চৌধুরীহাটের পশুর বাজার থেকে খাস আদায়ের মাধ্যমে হাসিল আদায়ের সিদ্ধান্ত নেয় চসিক।