চাল-ডালে অস্থির ভোগ্যপণ্যের বাজার

অভিযানের দাবি ভোক্তাদের

আজাদী প্রতিবেদন | শনিবার , ২৬ জুন, ২০২১ at ৬:৪৪ পূর্বাহ্ণ

দীর্ঘদিন ধরে তেলের বাজার অস্থির। এছাড়া উঠানামা করছিল চাল-ডাল ও পেঁয়াজ রসূনের দাম। এই ক’দিনে নতুন করে বাড়তে শুরু করেছে আদার ঝাঁজ। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে চীনা আদার দাম কেজিতে বেড়েছে ৬০ টাকা পর্যন্ত। এছাড়া পাইকারী বাজারে দাম বাড়ার প্রভাবে খুচরা পর্যায়ে প্রায় সব ধরনের চালের দাম কেজিতে ২-৩ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, করোনা শুরু হওয়ার পর থেকে ভোগ্যপণ্যের বাজারে অস্থিরতা শুরু হয়। যদিও সম্প্রতি আন্তর্জাতিক বাজারে ভোজ্যতেলের দাম কমার প্রভাবে পাইকারিতে দাম কমলেও খুচরা বাজারে এর প্রভাব নেই।
গতকাল নগরীর বেশ কয়েকটি খুচরা বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চীনা আদার দাম গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ৬০ টাকা বেড়ে গিয়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ১৭০ টাকায়। এছাড়া চীনা রসূন কেজিতে টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১২৫ টাকায়। অন্যদিকে মোটা মশুর ডাল কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়। এছাড়া বর্তমানে রূপচাদা ব্র্যান্ডের সয়াবিন তেল এক লিটার বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকা, ২ লিটার বিক্রি হচ্ছে ২৯০ টাকা, ৩ লিটার ৪৩৫ টাকা এবং ৫ লিটার সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ৭২০ টাকায়। তেলের পাশাপাশি বেড়েছে চিনির দামও। বর্তমানে প্রতি কেজি চিনির দাম ৩ টাকা বেড়ে গিয়ে বিক্রি হচ্ছে ৭৩ টাকায়। অন্যদিকে খুচরা বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪৫ টাকায়। অপরদিকে সম্প্রতি কৃষকের ঘরে বোরো উঠলেও পাইকারী বাজারে চালের দাম বেড়েই চলেছে। পাইকারিতে দাম বাড়ার প্রভাবে খুচরা বাজারে চালের দাম ২-৩ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। বর্তমানে বাজারে জিরাশাইল সিদ্ধ চাল কেজিতে ২ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৬৫ টাকা, নাজিরশাইল সিদ্ধ ৩ টাকা বেড়ে ৭০ টাকা, মিনিকেট আতপ ২ টাকা বেড়ে ৬০ টাকা, মোটা সিদ্ধ চাল ৩ টাকা বেড়ে ৫৩ টাকা এবং পাইজাম সিদ্ধ ৩ টাকা বেড়ে গিয়ে হচ্ছে ৬২ টাকায়। কাজীর দেউরি এলাকার ভান্ডার স্টোরের খুচরা বিক্রেতা মো. মিজানুর রহমান জানান, তেলের দাম অনেক দিন বাড়তি। এছাড়া গত কিছুদিন ধরে চাল, ডাল ও আদার দাম বাড়ছে। বেসরকারি চাকরিজীবী তারেক নেওয়াজ পলাশ বলেন, করোনাকালে এমনিতেই দুই বছর ধরে আমাদের ইনক্রিমেন্ট (বেতন বৃদ্ধি) হচ্ছে না। এরমধ্যে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে ভোগ্যপণ্যের দাম।
কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম বিভাগীয় সভাপতি এসএম নাজের হোসেন দৈনিক আজাদীকে বলেন, ব্যবসায়ীরা একেক সময় একেক অজুহাত দাঁড় করিয়ে ক্রেতাদের পকেট কাটায় ব্যস্ত রয়েছে। কখনো তারা পেঁয়াজ নিয়ে খেলে, কখনো তেল-চিনি নিয়ে। কোনো পণ্যের দাম আন্তর্জাতিক বাজারে ১ ডলার বাড়লেও সাথে সাথে তারা দাম বাড়িয়ে দেন। অথচ যেসব পণ্যের দাম তারা বাড়িয়ে দেন, সেগুলো কিন্তু আগে আমদানি করা। অন্যদিকে আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যের বুকিং রেট কমে গেলে তখন কিন্তু তারা পাইকারি বাজারে দাম কমিয়ে দেয় না। এতে বুঝা যায়, ভোগ্যপণ্যের বাজার ব্যবসায়ীদের মর্জিতেই চলে। পাইকারি ও খুচরা বাজারে চিত্র অনেকটা একই। অন্যদিকে যাদের বাজার মনিটরিং করার কথা, তারা সেভাবে মাঠে নেই। এতে কিন্তু ভোগ্যপণ্যের ব্যবসায়ীরা সুবিধাটা নিয়ে থাকে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচট্টগ্রাম শহীদ মিনার আপাতত সরানোর প্রস্তাব
পরবর্তী নিবন্ধপরিচয় তার বন্দরের ঝাড়ুদার করেন নগরজুড়ে ছিনতাই