চারুকলার জায়গায় চারুকলা চর্চাই হোক

সচেতন নাগরিক সমাজের মানববন্ধন

| শুক্রবার , ১৩ জানুয়ারি, ২০২৩ at ৯:৪৩ পূর্বাহ্ণ

বর্তমান চারুকলা ইনস্টিটিউটের (পূর্বে যা চারুকলা কলেজ ছিল) জায়গায় শুধুমাত্র চারুকলা চর্চার দাবিতে মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছে সচেতন নাগরিক সমাজ, চট্টগ্রাম। বুধবার বিকেলে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব চত্বরে এ মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।

শিল্পী মুহাম্মদ ইউনুসের সভাপতিত্বে তাৎক্ষণিক সমাবেশে বক্তারা বলেন, চারুকলা ইনস্টিটিউট চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি শিল্প-শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। তাই শহরে রাখা বা না রাখা তা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের একান্ত নিজস্ব। তবে চারুকলা কলেজের নিজস্ব জায়গায় চারুকলা চর্চা যেন বন্ধ না হয়। চারুকলা কলেজের প্রতিষ্ঠাকালীন থেকে নগরীতে এই প্রতিষ্ঠানকে কেন্দ্র করে একটি সাংস্কৃতিক বলয় গড়ে উঠেছিল।

যেমন-ফুলকী ফটোগ্রাফ সোসাইটি, থিয়েটার-৭৩, অরিন্দম, তির্যক ও গণায়ন নাট্য সম্প্রদায়, সোলস ব্যান্ডসহ আরো একাধিক প্রতিষ্ঠান এখান থেকেই যাত্রা শুরু করে। বিদগ্ধ জনের পদচারণায় মুখরিত এই চারুকলা কলেজকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারিকরণ করেছিলেন। এই কলেজ প্রতিষ্ঠার সাথে জহুর আহমদ চৌধুরী, এম.এ মান্নান, এ.বি.এম. মহিউদ্দিন চৌধুরী সংশ্লিষ্ট ছিলেন। আরো যুক্ত ছিলেন সাহিত্যিক ও শিক্ষাবিদ আবুল ফজল, বইঘরের প্রতিষ্ঠাতা সফি আহমেদ, আবু ইউসুফ, শিল্পপতি একে খান, দৈনিক আজাদী সম্পাদক এম এ মালেক, শিল্পী রশিদ চৌধুরী ও শিল্পী সবিহ উল আলম।

বক্তারা আরো বলেন, তৎকালীন চারুকলা কলেজের প্রাতিষ্ঠানিক জায়গাটুকু মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শুধুমাত্র চারুকলা শিক্ষার জন্যই চবিকে হস্তান্তর করেন। তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, অত্যন্ত দুঃখজনক হলেও সত্য যে, কি করে চারুকলা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গেস্ট হাউজ বা টিচার্স ক্লাব প্রতিষ্ঠিত হয় তা আমাদের বোধগম্য নয়। আমরা মনে করি যে, এধরণের অপরিণামদর্শী প্রক্রিয়াটি সৃজনশীল চর্চার পরিপন্থী।

এসব গেস্ট হাউজ বা ক্লাব শিল্প চর্চার পরিবেশকে যেমন ব্যাহত করে, তেমনি বেমানানও। বক্তারা এধরণের অপরিণামদর্শী প্রক্রিয়া অবিলম্বে বন্ধ করার জন্য শিক্ষা উপমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

বক্তব্যে চট্টগ্রাম পোর্ট সিটি ইউনিভার্সিটির মানবিক ও কলা অনুষদের প্রাক্তন ডিন মুহাম্মদ ইউনুস বলেন, মূল ক্যাম্পাসে যদি এই প্রতিষ্ঠানকে স্থানান্তর করতেই হয়, তাহলে পূর্বে বিলুপ্ত চারুকলা চালুকরণের জোর দাবি জানাচ্ছি। বিনয়ের সাথে আমরা এ দাবি জানাই। এখানে অন্যকোনো বিভাগ বা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা অফিস/কোনো ক্লাব ও অন্যকোনো স্থাপনা নির্মাণ করা যাবে না। এখানে শুধুমাত্র চারুকলা চর্চাই পরিচালিত হবে।

মানবন্ধনে সচেতন নাগরিক সমাজের দাবির প্রতি সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক প্রশাসক ও মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন, বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. মাহফুজুর রহমান, প্রকাশক নুরুল আবছার, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক গবেষক জামাল উদ্দীন, শ্রমিক নেতা আবুল হোসেন আবু, মশিউর রহমান।

বাচিক শিল্পী দিলরুবা খানমের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে আরো বক্তব্য রাখেন, শিল্পী আব্দুল লতিফ টিপু, শিল্পী প্রণব দাশ, বিজন মজুমদার, নাট্যজন জোবায়ের আহমেদ, ফওজুল আজিম, সিআরবি বাঁচাও আন্দোলনের সংগঠক মোরশেদ আলম, চট্টগ্রাম চারুকলা কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক সহ-সভাপতি মাহবুব চৌধুরী প্রমুখ।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচন্দনাইশ ও রাঙ্গুনিয়ায় শর্ট সার্কিটের আগুনে পুড়লো ছয় বসতঘর
পরবর্তী নিবন্ধনগরীতে সাত রেস্টুরেন্টকে জরিমানা