চসিক না পারায় সিডিএকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে

প্রকল্পের আওতায় থাকা খাল পরিষ্কার রয়েছে ।। নালা-ড্রেন পরিষ্কার না করায় জলাবদ্ধতা হচ্ছে, এগুলো পরিষ্কারের কাজ সিডিএ’র না, সিটি কর্পোরেশনের ।। যেটা সত্য সেটাই বলছি, কাউকে দোষারোপ করছি না

আজাদী প্রতিবেদন | বৃহস্পতিবার , ১০ আগস্ট, ২০২৩ at ৪:৫১ পূর্বাহ্ণ

নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনের কাজ সিডিএর (চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ) না। চসিক (চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন) না পারায় সিডিএকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে আমরা কাজ করছি। সে অনুযায়ী কাজ চলমান রয়েছে। প্রকল্পের আওতায় থাকা খালে কোনো ময়লা নেই, পরিষ্কার রয়েছে। নালাড্রেন পরিষ্কার না করায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে। নালাড্রেন পরিষ্কারের কাজ তো সিডিএ’র না। এটি সিটি কর্পোরেশনের কাজ। যেটা সত্য, সেটাই বলছি। আমরা কাউকে দোষারোপ করছি না।

গতকাল সিডিএ ভবনে নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসন সংক্রান্ত আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সিডিএ চেয়ারম্যান জহিরুল আলম দোভাষ এসব কথা বলেন। জলাবদ্ধতার জন্য শুধু সিডিএকে দায়ী করা হচ্ছে উল্লেখ করে সিডিএ চেয়ারম্যান বলেন, নগরীর জলাবদ্ধতা নিয়ে সিডিএ’র পাশাপাশি কাজ করছে তিনটি সংস্থা। এর মধ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ডও রয়েছে। প্রকৃত পক্ষে আমাদের কোন গাফিলতি নেই। আমরা কাজ করছি। স্লুইস গেট হওয়াতেই চাক্তাই, খাতুনগঞ্জে জলাবদ্ধতা দেখা যায়নি বলেও জানান তিনি।

জলাবদ্ধতা নিয়ে দৈনিক আজাদীতে প্রকাশিত প্রতিবেদনের প্রসঙ্গ টেনে চশমা খাল সম্পর্কে তিনি বলেন, খালটি পরিষ্কার রয়েছে। আসলে ড্রেনগুলো পরিষ্কার না করলে, আর মানুষ যদি ড্রেনে লেপ, তোষকসহ বিভিন্ন ধরনের ময়লা ফেলে তাহলে ড্রেনের পানি খালে কিভাবে যাবে। এর দায় কি আমাদের? এছাড়া আমাদের প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৩৪ ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন ব্রিগেড।

যারা বলছেন, জলাবদ্ধতা প্রকল্পের অগ্রগতি নেই, আমি মনে করি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে অপমান করার জন্য এটা বলছেন। তিনি বলেন, সিডিএ যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে সেটির নাম হলোচট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনকল্পে খাল পুনঃখনন, সম্প্রসারণ, সংস্কার ও উন্নয়ন। এ নাম দেওয়ার কারণে সবাই মনে করে, পুরো চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা নিরসনের কাজ সিডিএর। প্রকৃত সত্য হচ্ছে, নগরীতে ৫৭টি খাল রয়েছে। এর মধ্যে ৩৬টি খালের কাজ প্রকল্পের আওতার মধ্যে। বাকী খালগুলোসহ নালাগুলোতে আমাদের কাজ নেই। সিটি কর্পোরেশনের অযোগ্যতার কথা উল্লেখ করে সিডিএ চেয়ারম্যান বলেন, সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মনজু (মনজুর আলম) থাকার সময় বারইপাড়া খালের প্রকল্প দেওয়া হয়। তারা সেই প্রকল্পটি ঠিকভাবে এখনও করতে পারে নাই। বিষয়টি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর তৎকালীন মূখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস অবগত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের পরিচালক লে. কর্নেল শাহ আলী। প্রকল্পের অগ্রগতি বিষয়ে তিনি বলেন, প্রকল্পের কাজ ৭৬ শতাংশ শেষ হয়েছে। এর মধ্যে ৫টি রেগুলেটর বসানো হয়েছে। ২৫টি খালের কাজ সম্পূর্ণভাবে শেষ হয়েছে। ১১টি খালের কাজ অধিগ্রহণ জটিলতায় আটকে আছে। প্রকল্পের কাজ কবে শেষ হবে তা জানেন না বলেও জানান তিনি। প্রকল্পের কাজ শেষে কতটুকু সুফল পাওয়া যাবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, চট্টগ্রামে মোট ৫৭টি খাল রয়েছে। আমরা কাজ করছি ৩৬টি খালের। এ ৩৬টি খাল প্রকল্পভুক্ত। বাকী খালগুলোর কি অবস্থা আমরা বলতে পারব না। পুরোপুরি সুফল পেতে এসব খালও সম্প্রসারণ করতে হবে। প্রকল্প পরিচালক আরো বলেন, জলাবদ্ধতা কমাতে হলে খাল, নালায় ময়লা ফেলা বন্ধ করতে হবে। নগরীতে ১৬০০ নালা রয়েছে। বেশির ভাগই আমাদের আওতায় নেই। এসব নালাও সম্প্রসারণ করতে হবে। উল্লেখ্য, নগরীর জলবদ্ধতা নিরসনে ৫ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে সিডিএ।

পূর্ববর্তী নিবন্ধদোষারোপ করার সংস্কৃতি বিশ্বাস করি না : মেয়র
পরবর্তী নিবন্ধসংস্কার হলেও রাখা হয়নি ড্রেনেজ ব্যবস্থা, জলকাদায় ভোগান্তি