সংস্কার হলেও রাখা হয়নি ড্রেনেজ ব্যবস্থা, জলকাদায় ভোগান্তি

কাপ্তাই সড়ক

রাঙ্গুনিয়া প্রতিনিধি | বৃহস্পতিবার , ১০ আগস্ট, ২০২৩ at ৪:৫২ পূর্বাহ্ণ

উত্তর চট্টগ্রামের যোগাযোগের অন্যতম প্রধান মাধ্যম চট্টগ্রামকাপ্তাই সড়ক। এই সড়কের রাঙ্গুনিয়া অংশের ভোবানিমিল থেকে পূর্বে কাপ্তাই পর্যন্ত ১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ৪০ মিলি ডেন্স কার্পেটিং দ্বারা সংস্কার কাজ অব্যাহত রয়েছে। তবে সড়কটির সংস্কার কাজ করা হলেও কোথাও রাখা হয়নি ড্রেনেজ ব্যবস্থা। এতে সড়কজুড়ে খানাখন্দ রোধ হলেও থেকে গেছে জলাবদ্ধতা।

গত কয়েকদিনের টানা বর্ষণে কাপ্তাই সড়কের শুধুমাত্র রাঙ্গুনিয়া অংশে অন্তত ১০টি স্পটে হাঁটু সমান জলকাদায় একাকার হয়ে ওঠেছে। এতে কাদামাটি মিশ্রিত পিচ্ছিল সড়কে প্রায়শই আটকে যাচ্ছে যানবাহন। ফলে দুই পাশে দীর্ঘ যানজট লেগে তীব্র ভোগান্তি সৃষ্টি হচ্ছে। এছাড়া দ্রুতগতির যানবাহন যেকোনো সময় এসব কাদাপানিতে উলটে গিয়ে দুর্ঘটনার আশংকা দেখা দিয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, চট্টগ্রামকাপ্তাই সড়কের রাঙ্গুনিয়ার লিচু বাগান, রোয়াজারহাট, ইছাখালী, গোডাউনের কয়েকটি স্পট, আজিজনগর, ভোবানিমিল, গোচরা, শান্তিরহাট, সত্যপীর দরগাহ, তাপবিদ্যুৎ এলাকাসহ বেশ অল্প বৃষ্টিতেই পানির ঢল নামে। পাশের পাহাড় থেকে মাটি নেমে কাদার সৃষ্টি হয়। এতে যানবাহন আটকে গিয়ে দীর্ঘ ভোগান্তিতে পড়েন যাতায়াতকারীরা। সড়কটি বার বার সংস্কার করা হয়। কিন্তু কোথাও করা হয় না ড্রেনেজ ব্যবস্থা। এতে বছরের পর বছর সড়কের এই পরিস্থিতি চলে এলেও স্থায়ী কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না সংশ্লিষ্টরা।

শুধুমাত্র বৃষ্টি এলেই সড়কের কাদামাটি অপসারণ করেই দায় সারেন তারা। এতে ক্ষোভ বাড়ছে যাত্রী ও যানবাহন চালকদের মাঝে।

সরেজমিনে দেখা যায়, মঙ্গলবার দিনের পর রাতেও হয় প্রবল বৃষ্টি। এতে গোডাউন কাদের নগর থেকে নোয়াগাও এলাকা পর্যন্ত সড়কে পানির ঢল নামে। আবার গোডাউনের আজিজ নগর এলাকায় দুই পাশের পাহাড় থেকে মাটি নেমে সড়কে অন্তত এক ফুট পুরুত্বের কাদার আস্তরণ পড়েছে। এতে বেশ কয়েকটি সিএনজি টেঙি আটকে গিয়ে কয়েক কিলোমিটার দীর্ঘ যানজট লেগে যায়। স্থানীয়দের সহায়তায় একটি গাড়ি সরিয়ে নিতেই আটকে যায় আরেকটি গাড়ি। ফলে সামান্য ১০ মিনিটের পথটি পাড়ি দিতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে দেখা গেছে যাত্রী ও চালকদের। এসময় সওজ কর্তৃপক্ষ বোল্ডডোজারের সাহায্যে কয়েকদিন ধরে সড়ক থেকে মাটি অপসারণ করার কাজ করলেও এক বৃষ্টিতেই তা আবার একই অবস্থা হচ্ছে বলে জানান চলাচলকারীরা।

নুরুল আজিম মনু নামে এক সিএনজি টেঙি চালক বলেন, সামান্য বৃষ্টিতে কাপ্তাই সড়কের জলাবদ্ধতা শুধু গোডাউন এলাকাতেই নয়, সড়কের তাপবিদ্যুৎ গেট থেকে সত্যপীর মাজার, সৌদিয়া প্রজেক্ট এলাকা, গোচরা, নোয়াগাও, ইছাখালী, পৌরসভা কার্যালয় থেকে পূর্বদিকে পল্লী বিদ্যুৎ অফিস পর্যন্ত সড়কের বিভিন্ন স্পটে এই সমস্যা রয়েছে। তবে গোডাউন এলাকায় এই জলাবদ্ধতার সমস্যাটি খুবই প্রকট।

গোডাউন এলাকার ব্যবসায়ী মো. আবু জাফর বলেন, কাপ্তাই সড়কের গোডাউন এলাকায় সামান্য বৃষ্টিতেই পানির ঢল নামে। পাশের পাহাড় থেকে এই পানির ঢলের সাথে নেমে আসে কাদা। ড্রেনেজ সমস্যার কারণে এই সমস্যা চলে আসছে। সড়কটি সংস্কার করা হলেও দীর্ঘদিনেও এই সমস্যার সমাধানে কোনো উদ্যোগ নেয়নি সংশ্লিষ্টরা। মো. ইউনুস নামে এক চালক বলেন, কাপ্তাই সড়কের এই দুর্ভোগ দীর্ঘদিনের। এখানে সারাবছর ধরে সড়কের পাশের গাছ ধসে পড়ে। সংস্কারের ফলে খানাখন্দ রোধ হলেও ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় যে লাউ সেই কদু অবস্থাই থেকে গেছে।

এ বিষয়ে সড়ক ও জনপথ বিভাগের ওয়ার্ক সুপারভাইজার রাসেল দেওয়ান বলেন, ভারী বৃষ্টি হলেই সড়কের গোডাউনসহ কিছু কিছু এলাকায় পানি জমে যায়। তবে কিছুক্ষণ পর আবার চলেও যায়। এ কারণে সাময়িক জনদুর্ভোগ হয়। সড়কে কাদার আস্তরণ পড়লেও আমাদের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় তা পরিষ্কার করে দেয়া হয়। তবে পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা সুন্দরভাবে সম্পন্ন করতে ইতিমধ্যেই পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচসিক না পারায় সিডিএকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে
পরবর্তী নিবন্ধসিএমপির সাত অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনারকে বদলি