চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হলো ধোপাছড়ির কাঠের সেতুটি

চন্দনাইশ প্রতিনিধি | শনিবার , ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ at ৯:৪৭ পূর্বাহ্ণ

চন্দনাইশের ধোপাছড়ি ইউনিয়নের ধোপাছড়ি খালের ওপর নির্মিত কাঠের সেতুটি পুনঃসংস্কার শেষে চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার সকালে সেতুটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রাজিব হোসেন। চলতি বছরের মে মাসে প্রবল বর্ষণ আর পাহাড়ি ঢলে সেতুটির মাঝখানে ভেঙে নদীতে ভেসে যায়। সেতুটি ভেঙে যাওয়ার পর যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ায় দু’পাড়ের মানুষদের সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছিল।

জানা যায়, ২০২৩ সালের অক্টোবর মাসের দিকে চন্দনাইশ উপজেলা পরিষদ থেকে ১৬ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়ে ১০০ মিটার লম্বা ও ৭ ফুট প্রস্থের দৃষ্টিনন্দন কাঠের সেতু নির্মাণ করা হয়। তখন থেকেই সেতুটি দিয়ে মানুষ পায়ে হেঁটে পারাপারসহ মোটরসাইকেল, সিএনজি টেক্সি, ব্যাটারি রিকশা ও টমটমসহ ছোট ছোট যানবাহন অবাধে চলাচল শুরু হয়। স্বাধীনতার ৫৩ বছর পর কাঠের সেতুতেই স্বপ্ন পূরণ হওয়ায় খুশি হয়ে ধোপাছড়ির বাসিন্দারা সেতুটিকে ‘ধোপাছড়ির পদ্মা সেতু’ হিসেবেও অবহিত করেন।

কিন্তু নির্মাণের পর সেতুটি পাহাড়ি ঢলে দুইবার ভেঙে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়। সেতুটি নির্মাণের ঠিক এক বছর পর গত ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসের প্রবল বর্ষণে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সেতুটির মাঝখানে হেলে পড়ে। তখন মেরামত করে চলাচল উপযোগী করা হয়। এরপর চলতি বছরের ২২ মে অবিরাম বর্ষণের ফলে সেতুর মাঝখানে পুরোপুরি ভেঙে যায়। ধোপাছড়িবাসীর স্বপ্নের কাঠের সেতুটি ভেঙে যাওয়ায় দুর্ভোগ বেড়ে যায় এ ইউনিয়নের দু’পাড়ের বাসিন্দাদের। স্থানীয়রা জানান, ধোপাছড়ি ইউনিয়নটি শঙ্খ নদী ও পাহাড় পরিবেষ্টিত পর্যটন এলাকা। এই ইউনিয়নটিতে যুগ যুগ ধরে একসাথে বসবাস করে আসছে বাঙালি, মারমা, ত্রিপুরাসহ বিভিন্ন সমপ্রদায়ের লোকজন। সড়ক যোগাযোগের অপ্রতুলতায় ইউনিয়নটি পিছিয়ে রয়েছে। ধোপাছড়ি ইউনিয়নের মধ্যদিয়ে প্রবাহিত ধোপাছড়ি খালের জলধারা এই ইউনিয়নের মানুষকে দু’ভাগে বিভক্ত করে রেখেছে যুগের পর যুগ। পাহাড় থেকে সৃষ্টি হয়ে খালটি মিশেছে খরস্রোতা শঙ্খ নদীর সাথে। খালটি দিয়ে প্রতি বর্ষা মৌসুমে পাহাড়ি ঢলের পানি তীব্র গতিতে প্রবেশ করে শঙ্খ নদীতে।

বাঁশের সাঁকোতেই ঝুঁকিপূর্ণভাবে খালটি পারাপার করতে হতো ইউনিয়নের ১নং ও ২নং ওয়ার্ড শঙ্খকুল, চেমিরমুখ এলাকার প্রায় আড়াই শতাধিক পরিবারসহ দুই পাড়ের মানুষকে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রাজিব হোসেন বলেন, ধোপাছড়িবাসীর যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম ধোপাছড়ি খালের ওপর নির্মিত কাঠের সেতুটি। চলতি বছরের মে মাসের প্রবল বর্ষণে সেতুটি দ্বিতীয় দফায় ভেঙে যাওয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েন তারা। ধোপাছড়ির মানুষের যাতায়াত সুবিধার জন্য ৬ লাখ টাকা ব্যয় ধরে সেতুটি গত নভেম্বর মাসের শুরুর দিকে পুনরায় সংস্কার কাজ শুরু করা হয়। সংস্কার শেষে গত বৃহস্পতিবার ধোপাছড়ির জনগণের চলাচলের জন্য সেতুটি খুলে দেয়া হয়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধদেশনেত্রী খালেদা জিয়া আবারও ফিরে আসবেন জনতার মঞ্চে
পরবর্তী নিবন্ধপ্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটিতে যৌন হয়রানি প্রতিরোধে সচেতনতা সেশন