চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডে কার্যক্রম চালাতে হিমশিম

সচিব নেই আড়াই মাস, শিক্ষা ক্যাডারের আরো ৪ পদ শূন্য

আজাদী প্রতিবেদন | শনিবার , ১৪ জানুয়ারি, ২০২৩ at ৫:৪৪ পূর্বাহ্ণ

গত বছরের ২৬ অক্টোবর অবসরোত্তর (পিআরএল) ছুটিতে যান চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের তৎকালীন সচিব প্রফেসর আবদুল আলীম। এরপর ওই পদে নতুন কাউকে নিয়োগ দেয়া হয়নি। ফলে আড়াই মাস ধরে শিক্ষাবোর্ডের দ্বিতীয় শীর্ষ পদটি শূন্য। বোর্ড সংশ্লিষ্টরা বলছেন, শিক্ষাবোর্ডের সচিবের পদটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সচিব সংস্থাপন ও হিসাব শাখার প্রধান। পাশাপাশি অন্যান্য শাখার কার্যক্রমও দেখভাল করে থাকেন। তাছাড়া আর্থিকসহ বিভিন্ন সিদ্ধান্ত গ্রহণের সুবিধার্থে চেয়ারম্যানকে তথ্য-উপাত্ত সরবরাহ ছাড়াও প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে থাকেন সচিব। কিন্তু নতুন পদায়ন না হওয়ায় গত আড়াই মাস ধরে সচিবের কাজও করতে হচ্ছে বোর্ডের চেয়ারম্যানকে। সচিবের পদ ছাড়াও শিক্ষাবোর্ডে প্রেষণের পদ হিসেবে স্বীকৃত শিক্ষা ক্যাডারের আরো চারটি পদ শূন্য রয়েছে প্রায় ৬ মাস ধরে। প্রথম সারির এসব পদে জনবল না থাকায় কার্যক্রম চালাতে হিমশিম অবস্থায় শিক্ষাবোর্ড। বিশেষ করে সচিব ও হিসাব শাখার গুরুত্বপূর্ণ দুটি পদে কর্মকর্তা না থাকায় আর্থিক সংক্রান্ত বিভিন্ন সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে শিক্ষাবোর্ড অনেকটা বেকায়দায়।

সচিবসহ প্রথম সারির ৫টি পদ শূন্য থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করে শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মুস্তফা কামরুল আখতার আজাদীকে বলেন, শূন্য পদগুলোর বেশ কয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এসব পদে জনবল থাকলে কার্যক্রম পরিচালনায় সুবিধা হতো। পদগুলো শূন্য থাকায় এখন নিয়মিত কার্যক্রম পরিচালনা অনেকটা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে।

শিক্ষা ক্যাডারের আরো ৪ পদ শূন্য প্রায় ৬ মাস : শিক্ষাবোর্ডে প্রেষণে (শিক্ষা ক্যাডারের) পদ রয়েছে মোট ১৫টি। সরকারি কলেজের শিক্ষা ক্যাডারের শিক্ষকরাই এসব পদে প্রেষণে নিয়োগ পেয়ে থাকেন।

শিক্ষাবোর্ড সূত্রে জানা গেছে, প্রেষণের পদ হিসেবে স্বীকৃত শিক্ষা ক্যাডারের ১৫টি পদের মধ্যে সচিবসহ মোট ৫টি পদ বর্তমানে শূন্য রয়েছে। সচিব না থাকার সময়কাল আড়াইমাস হলেও বাকি চারটি পদ শূন্য রয়েছে প্রায় ৬ মাস ধরে।

শূন্য পদগুলোর মধ্যে রয়েছে সংস্থাপন শাখার সহকারী সচিব ও সহকারী মূল্যায়ন কর্মকর্তা এবং হিসাব শাখার হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা ও অডিট অফিসার। এর মাঝে হিসাব শাখার গুরুত্বপূর্ণ দুটি পদের (হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা ও অডিট অফিসার) একজনও নেই। গতবছরের আগস্টের প্রথম সপ্তাহ থেকে পদ দুটি শূন্য। এর বাইরে সংস্থাপন শাখার সহকারী মূল্যায়ন কর্মকর্তার পদটি শূন্য প্রায় এক বছর। সর্বশেষ এ পদে কর্মরত ছিলেন ড. শুক্লা রক্ষিত। গতবছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি তিনি অবসরোত্তর (পিআরএল) ছুটিতে যান। এরপর থেকে প্রায় বছর ধরে পদটি শূন্য রয়েছে। এছাড়া সংস্থাপন শাখার সহকারী সচিবের একটি পদ শূন্য রয়েছে চার মাসের বেশি সময় ধরে। গত বছরের ৪ আগস্ট জারিকৃত এক প্রজ্ঞাপনে সহকারী সচিব পদে নতুন এক কর্মকর্তাকে পদায়ন করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। তিনি যোগদানও করেন। তবে দুই মাসের মধ্যে ওই কর্মকর্তা শিক্ষাছুটিতে বিদেশ চলে যান। এরপর থেকেই সহকারী সচিবের পদটি শূন্য।

বোর্ড সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, সচিব না থাকা এবং হিসাব শাখা নিয়ে খুবই বেকায়দায় রয়েছে শিক্ষাবোর্ড। দ্বিতীয় শীর্ষ কর্মকর্তা হিসেবে সচিবের পদটি শূন্য থাকায় বিভিন্ন সিদ্ধান্ত গ্রহণে অনেক ক্ষেত্রে সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে চেয়ারম্যানকে। সচিব থাকলে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সহজে যে সিদ্ধান্তটি নেয়া যেত, এখন সে সুযোগটি হচ্ছে না। তাছাড়া বর্তমানে অতিরিক্ত হিসেবে সচিবের দাপ্তরিক বিষয়গুলোও দেখতে হচ্ছে চেয়ারম্যানকে।

এর বাইরে সহকারী সচিব ও সহকারী মূল্যায়ন কর্মকর্তার পদ দুটিও সংস্থাপন শাখার। এসব পদে জনবল না থাকায় নিয়মিত কার্যক্রম পরিচালনায় বেগ পেতে হচ্ছে। সংস্থাপনের পাশাপাশি হিসাব শাখা নিয়েও বেশ বেকায়দায় রয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। হিসাব শাখার হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা ও অডিট অফিসার পদ দুটি ভাইটাল (মূল) পদ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কিন্তু প্রায় ৬ মাস ধরে গুরুত্বপূর্ণ পদ দুটি শূন্য। এছাড়া হিসাব শাখার অন্যতম আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ পদ উপ-পরিচালক (হিসাব ও নিরীক্ষা)। বর্তমানে পদটিতে যিনি আছেন, তিনিও নতুন। আগস্টে জারিকৃত প্রজ্ঞাপনে তাকে এ পদে পদায়ন করা হয়। সবমিলিয়ে হিসাব শাখার কার্যক্রম নিয়ে নিত্য দুশ্চিন্তায় থাকতে হচ্ছে বোর্ড কর্তৃপক্ষকে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধডিমের দাম ডজনে ১০ টাকা বাড়ল
পরবর্তী নিবন্ধদুয়েকটির বিচারকাজ শুরু বাকিগুলো হিমাগারে