চট্টগ্রাম জেলার সাত লাখ শিক্ষার্থীর তথ্য মাউশিতে

১২-১৭ বছর বয়সীদের করোনার টিকা দিতে খোঁজা হচ্ছে ভিন্ন কেন্দ্র

আজাদী প্রতিবেদন | সোমবার , ১৮ অক্টোবর, ২০২১ at ৭:৪২ পূর্বাহ্ণ

রাজধানীতে ১২ থেকে ১৭ বছরের স্কুল শিক্ষার্থীদের পরীক্ষামূলকভাবে করোনার টিকার প্রয়োগ শুরু হয়েছে। পরীক্ষামূলক এই টিকা প্রয়োগ বেশ কিছুদিন পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। পর্যবেক্ষণ সময় অতিবাহিত হলে আরো বড় পরিসরে স্কুল শিক্ষার্থীদের টিকাদান কার্যক্রম শুরু করার কথা জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। এর প্রেক্ষিতে ১২ থেকে ১৭ বছরের স্কুল শিক্ষার্থীদের টিকাদানে প্রস্তুতি চলছে চট্টগ্রামেও।
ইতোমধ্যে জেলার সবকয়টি মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ৬ষ্ঠ থেকে চলতি বছরের এসএসসি পরীক্ষার্থী পর্যন্ত শিক্ষার্থীর মোট সংখ্যা মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরে (মাউশি) পাঠানো হয়েছে। জেলার মাধ্যমিক পর্যায়ের ৭৩০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সব মিলিয়ে প্রায় ৭ লাখ শিক্ষার্থীর তথ্য পাঠানো হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রামের জেলা শিক্ষা অফিসার মো. জিয়াউল হায়দার হেনরী। তিনি বলেন, মাউশির নির্দেশনা অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের সংখ্যাটা চূড়ান্ত করে পাঠিয়েছি। এদিকে, স্কুল শিক্ষার্থীদের টিকাদান কার্যক্রম হাসপাতালের পরিবর্তে ভিন্ন কোনো প্রতিষ্ঠানে পরিচালনার সিদ্ধান্ত রয়েছে বলে জানান চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী। তিনি বলেন, স্কুল শিক্ষার্থীদের টিকাদান কার্যক্রম শুরুর বিষয়ে এখনো পর্যন্ত সুনির্দিষ্ট সময় আমাদের জানানো হয়নি। তবে জেলা প্রশাসন ও জেলা শিক্ষা অফিসারের সাথে আলাপের মাধ্যমে আমাদের প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে বলা হয়েছে। আমরা সেভাবেই প্রস্তুতি নিচ্ছি। টিকা প্রয়োগে শিক্ষার্থীদের হাসপাতালে আনা হবে না। হাসপাতালের পরিবর্তে কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বা ভিন্ন কোনো কেন্দ্র নির্ধারণের নির্দেশনা রয়েছে। শিক্ষার্থীদের ফাইজারের টিকা দেওয়া হবে। এর জন্য শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কেন্দ্র লাগবে।
কেন্দ্র নির্ধারণের বিষয়ে জেলা শিক্ষা অফিসার জিয়াউল হায়দার হেনরী আজাদীকে বলেন, সরকারি ও এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ সুবিধা সম্বলিত প্রতিষ্ঠান আমরা পাচ্ছি না; যার কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বাইরে ভিন্ন কোনো প্রতিষ্ঠান হয়ত দেখতে হবে। বিকল্প হিসেবে কমিউনিটি সেন্টারের বিষয়টি চিন্তা-ভাবনা করছি। তবে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের আলোচনার ভিত্তিতে কেন্দ্র চূড়ান্ত করা হবে।
জেলা শিক্ষা অফিসারের কার্যালয় থেকে মাউশিতে পাঠানো তথ্যে দেখা যায়, জেলায় ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১ লাখ ১৭ হাজার ৪৩১ জন। ৭ম শ্রেণির ১ লাখ ১৮ হাজার ৫ জন, ৮ম শ্রেণিতে ১ লাখ ২০ হাজার ২৯২ জন, নবম শ্রেণিতে ১ লাখ ২৪ হাজার ৩৩৩ জন, দশম শ্রেণিতে ১ লাখ ১১ হাজার ৫২ জন এবং ২০২১ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থী রয়েছে ১ লাখ ২ হাজার ৬৫ জন। সব মিলিয়ে মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মোট ৬ লাখ ৯৩ হাজার ১৭৮ জন শিক্ষার্থীর তথ্য পাঠানো হয়েছে। এর মাঝে সরকারি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৩৩ হাজার ৫৬২ জন। ৬ লাখ ৫৯ হাজার ৬১৬ জন শিক্ষার্থী বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের।
জেলা শিক্ষা অফিসারের কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, চট্টগ্রাম জেলায় মাধ্যমিক ও নিম্ন মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৭৩০টি। এর মাঝে স্কুলের সংখ্যা ৬৮২টি। স্কুল অ্যান্ড কলেজের সংখ্যা ৪৮টি। মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বাইরে ১০৪টি কলেজ ও ৩১৪টি মাদ্রাসা রয়েছে চট্টগ্রাম জেলায়।
এদিকে সংখ্যা পাঠানো হলেও স্কুল শিক্ষার্থীদের জন্মনিবন্ধন সনদের মাধ্যমে সুরক্ষা প্লাটফর্মে নিবন্ধন সম্পন্ন করতে হবে। সুরক্ষায় নিবন্ধন সম্পন্ন হলেই টিকা নেওয়ার সুযোগ পাবে শিক্ষার্থীরা। এক্ষেত্রে শিক্ষার্থীর জন্মনিবন্ধন অনলাইনে থাকতে হবে বলে জানান সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী। জন্মনিবন্ধন অনলাইনে সম্পন্ন করা থাকলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই তাদের সুরক্ষা প্লাটফর্মে নিবন্ধন করিয়ে দেওয়া হবে।
অবশ্য আগেই ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করায় অধিকাংশ শিক্ষার্থীর জন্মনিবন্ধন অনলাইনে সম্পন্ন করা আছে বলে মনে করেন জেলা শিক্ষা অফিসার মো. জিয়াউল হায়দার হেনরী। এরপরও কোনো শিক্ষার্থীর জন্মনিবন্ধন অনলাইনে করা না থাকলে তাদের দ্রুত অনলাইনে সম্পন্ন করার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবাবাকে দেখতে গিয়ে লাশ হলেন ফারুক
পরবর্তী নিবন্ধসকলকে সাথে নিয়ে মোবাইল কোর্ট