চট্টগ্রাম অঞ্চলে এক সপ্তাহে তিন হাতির মৃত্যু

এবার মরা হাতি পাওয়া গেল বাঁশখালীতে ধানক্ষেতে

আজাদী প্রতিবেদন | শনিবার , ১৩ নভেম্বর, ২০২১ at ৬:৪৮ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম অঞ্চলে গত এক সপ্তাহে তিনটি বন্য হাতির মৃত্যু হয়েছে। সর্বশেষ গতকাল শুক্রবার দক্ষিণ চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার চাম্বল ইউনিয়নের পূর্ব চাম্বল এলাকার একটি ধান ক্ষেত্রের পাশ থেকে একটি হাতির মরদেহ উদ্ধার করেছে বনবিভাগ। তবে বনবিভাগ বলছে, শুক্রবার চাম্বল থেকে উদ্ধার করা হাতিটির স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। ময়নাতদন্তকারী টিমকে উদ্ধৃত করে চট্টগ্রাম বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম চৌধুরী এ কথা জানান। এর আগে গত মঙ্গলবার ভোরে কঙবাজারের চকরিয়ার সংরক্ষিত বনাঞ্চলের ভেতরে একটি এশিয়ান বুনো হাতিকে গুলি করে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। মঙ্গলবার ভোরে চকরিয়ার খুটাখালী ইউনিয়নের পূর্ণগ্রাম বন বিটের হাইথারা ঘোনায় বন্য শূকর শিকার করতে গিয়ে হাতিটি সামনে এসে পড়লে দুর্বৃত্তরা মাথা লক্ষ্য করে গুলি ছুড়লে ঘটনাস্থলেই মারা যায় হাতিটি। এর আগে গত শনিবার চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় আরেকটি মৃত বুনো হাতি উদ্ধার করে স্থানীয়রা। হাতিটি বিদ্যুতায়িত হয়ে মারা যায় বলে জানিয়েছে বনবিভাগ। এ নিয়ে গত ৭ দিনে চট্টগ্রাম অঞ্চলেই তিনটি হাতির মৃত্যু হলো।
বাঁশখালীর জলদী অভয়ারণ্য রেঞ্জ কর্মকর্তা আনিসুজ্জামান শেখ বলেন, ‘স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে মৃত হাতিটি উদ্ধার করা হয়েছে।’ চাম্বল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুল হক চৌধুরী দৈনিক আজাদীকে বলেন, ‘হাতিটি পাহাড়ে নয় বনবিভাগের অফিসের কাছেই মারা যায়। শুক্রবার সকালে খবর পেয়ে মরা হাতিটি উদ্ধার করেছে বনবিভাগ।’
এদিকে চকরিয়ার খুটাখালীতে হাতি হত্যার ঘটনায় দুজনকে আসামি করে মামলা করেছে বনবিভাগ। ওই মামলায় দুজনের নামে আদালতে মামলা করা হয়েছে। ওই মামলা মংহ্লা মার্মা (৪২) নামের একজনকে আটক করে বনবিভাগ। পরে তাকে থানায় সোপর্দ করা হলে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। গ্রেপ্তার হওয়া মংহ্লা মার্মা হাতি হত্যায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন।
বন বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, ২০০৪ সাল থেকে গত ১৭ বছরে মানুষের হাতে হত্যার শিকার হয়েছে ১১৮টি হাতি। এর মধ্যে গত ছয় বছরে হত্যা করা হয়েছে ১৯টি প্রাণীকে, যাদের মধ্যে ১১টি বৈদ্যুতিক শট সার্কিট ও ৬টি সরাসরি গুলি খেয়ে মারা গেছে। চলতি মাসের ৬ থেকে ১২ তারিখ পর্যন্ত মাত্র ছয় দিনে চারটি হাতি হত্যার ঘটনা ঘটেছে। এরমধ্যে চট্টগ্রাম অঞ্চলে তিনটি ও শেরপুরে একটি হাতি মারা গেছে।
এ ব্যাপারে চট্টগ্রাম বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম চৌধুরী দৈনিক আজাদীকে বলেন, ‘বাঁশখালীর মৃত হাতিটির ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। ময়নাতদন্তকারী টিমের সদস্যরা জানিয়েছেন হাতিটির বয়স প্রায় ৫৫-৬০ বছর হতে পরে। ময়নাতদন্তের সময় তার ফুসফুস ডেমেজ অবস্থায় পাওয়া গেছে। এতে বুঝা যাচ্ছে, এটির স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। তাছাড়া খুটাখালীতে হাতি হত্যার ঘটনায় মামলা হয়েছে। একজনকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধগেজেট প্রকাশের অপেক্ষায় রাউজানে বিনাভোটে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা
পরবর্তী নিবন্ধবৈদ্যুতিক ফাঁদ আর গুলিতে মারা যাচ্ছে বন্যহাতি