চট্টগ্রামে টিকার অপেক্ষায় ১৬ লাখের বেশি নিবন্ধনধারী

দুই ডোজের আওতায় সাড়ে ৯ লাখ মানুষ সাড়ে ১৩ লাখ পেয়েছেন এক ডোজ

আজাদী প্রতিবেদন | সোমবার , ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২১ at ৬:০২ পূর্বাহ্ণ

গত ৭ ফেব্রুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে করোনার টিকাদান কার্যক্রমের উদ্বোধন হয় চট্টগ্রামে। টিকাদান শুরুর পর ১৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সাড়ে ৭ মাসে মহানগরসহ চট্টগ্রাম জেলার সাড়ে ৯ লাখ মানুষ দুই ডোজ টিকার আওতায় এসেছেন। এছাড়া এক ডোজ টিকা পেয়েছেন সাড়ে ১৩ লাখ। সবমিলিয়ে ২৩ লাখ ডোজ করোনার টিকা দেয়া হয়েছে চট্টগ্রামে। হিসেবে আরো ৪ লাখ টিকা গ্রহীতা দ্বিতীয় ডোজের অপেক্ষায় আছেন। চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। সিটি কর্পোরেশন এলাকায় ১১টি ও উপজেলাগুলোর ১৪টি স্থায়ী কেন্দ্রে এ টিকাদান কার্যক্রম চলমান রয়েছে। শুরুতে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রেজেনেকার টিকা দিয়ে টিকাদান কার্যক্রম উদ্বোধন হয় চট্টগ্রামে। তবে পরবর্তীতে মডার্না এবং সিনোফার্মের টিকাও আসে। বর্তমানে অ্যাস্ট্রেজেনেকা ও মডার্নার দ্বিতীয় ডোজ এবং প্রথম ডোজ হিসেবে সিনোফার্মের টিকার প্রয়োগ চলছে।
সবমিলিয়ে ২৫ লাখের কিছু বেশি ডোজ টিকা পাওয়া গেছে জানিয়ে সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি আজাদীকে বলেন, এর মাঝে গতকাল ১৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রায় ২৩ লাখ ডোজ টিকার প্রয়োগ করা হয়েছে। এর মাঝে সাড়ে ৯ লাখ মানুষ দুই ডোজ টিকা পেয়েছেন। আর এক ডোজ পেয়েছেন সাড়ে ১৩ লাখ টিকা গ্রহীতা। প্রসঙ্গত, গত ৭ সেপ্টেম্বর গণ টিকার ২য় দফা ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে দুই ডোজ টিকা গ্রহীতার সংখ্যা ৮ লাখ পার হয় চট্টগ্রামে। হিসেবে পরবর্তী ১০/১১ দিনে প্রায় দেড় লাখ মানুষ দুই ডোজের আওতায় এসেছেন। টিকা প্রদানের সংখ্যা বাড়াতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে জানিয়ে সিভিল সার্জন বলেন, কেন্দ্রগুলোতে বুথ বাড়ানো হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন কেন্দ্রের ৯ম পৃষ্ঠার ১ম কলাম
অধীনে উপ কেন্দ্র চালু করা হচ্ছে। যাতে আরো বেশি সংখ্যক মানুষকে টিকার আওতায় আনা যায়।
সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে প্রাপ্ত তথ্য (১৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত) অনুযায়ী, চট্টগ্রামে এ পর্যন্ত অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রেজেনেকার টিকার প্রয়োগ হয়েছে বেশি। সবমিলিয়ে ৯ লাখ ২ হাজার ৪০৮ ডোজ অ্যাস্ট্রেজেনেকার টিকা দেয়া হয়েছে চট্টগ্রামে। এর মধ্যে প্রথম ডোজ পেয়েছেন ৪ লাখ ৭১ হাজার ৯৬৫ জন। আর এ টিকার দুই ডোজ পেয়েছেন ৪ লাখ ৩০ হাজার ৪৪৩ জন। অ্যাস্ট্রেজেনেকার পর প্রয়োগের দিক থেকে দ্বিতীয় শীর্ষে রয়েছে চীনের তৈরি সিনোফার্মের টিকা। এ পর্যন্ত সিনোফার্মের ৮ লাখ ৯৭ হাজার ৪২৯ ডোজ টিকা প্রয়োগ হয়েছে চট্টগ্রামে। এর মাঝে প্রথম ডোজ পেয়েছেন ৬ লাখ ২৩ হাজার ১৯৯ জন। আর ২ লাখ ৭৪ হাজার ২৩০ জন টিকা গ্রহীতা এ টিকার পূর্ণ (দুই) ডোজ পেয়েছেন।
মডার্নার টিকা প্রয়োগ করা হয় কেবল সিটিকর্পোরেশন এলাকায়। মডার্নার এ পর্যন্ত ৪ লাখ ৮১ হাজার ৪১৯ ডোজ টিকা প্রয়োগ করা হয়েছে চট্টগ্রামে। এর মাঝে প্রথম ডোজ গ্রহিতার সংখ্যা ২ লাখ ৪৬ হাজার ৪৪ জন। আর পূর্ন (দুই) ডোজ পেয়েছেন ২ লাখ ৩৫ হাজার ৩৭৫ জন। অবশ্য, গতকাল প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ হিসেবে প্রায় ২০ হাজার ডোজ টিকার প্রয়োগ হয়েছে চট্টগ্রামে।

প্রসঙ্গত, ৭ আগস্ট প্রথম দফা গণটিকা ক্যাম্পেইনে মহানগরসহ জেলায় দেড় লাখের বেশি মানুষকে প্রথম ডোজ দেয়া হয়। এর মাঝে মহানগরে ৩৬ হাজার ৭৩৫ জনকে দেয়া হয় মডার্নার টিকা। আর উপজেলা পর্যায়ে সিনোফার্মের টিকা পান ১ লাখ ২১ হাজার ১০৯ জন।
পরবর্তীতে ৭ সেপ্টেম্বর দ্বিতীয় দফা গণটিকার মাধ্যমে এসব প্রথম ডোজ গ্রহিতাদের দ্বিতীয় ডোজের আওতায় আনা হয়। সে হিসেবে কেবল গণটিকা ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে মহানগরসহ জেলায় দেড় লাখের বেশি মানুষ দুই ডোজ টিকার আওতায় এসেছেন।
কত টিকা পেল চট্টগ্রাম : সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ১৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সবমিলিয়ে ২৫ লাখ ২৫ হাজার ৯৫০ ডোজ টিকা পেয়েছে চট্টগ্রাম। এর মাঝে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রেজেনেকার ৯ লাখ ১৮ হাজার ৭৯০ ডোজ, মডার্নার ৪ লাখ ৫০ হাজার ৮৬০ ডোজ এবং সিনোফার্মের ১১ লাখ ৫৬ হাজার ৩০০ ডোজ টিকা এসেছে চট্টগ্রামে।
নিবন্ধন ৩০ লক্ষাধিক : টিকা গ্রহনে ১৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চট্টগ্রামের ৩০ লক্ষাধিক (৩০ লাখ ১৬ হাজার ৫৬৮ জন) মানুষ সুরক্ষা প্লাটফর্মে নিবন্ধন করেছেন। এর মাঝে মহানগরের বাসিন্দা ১৩ লাখ ৪৫ হাজার ৪৬৫ জন। আর উপজেলা পর্যায়ে ১৬ লাখ ৭১ হাজার ১০৩ জন এ নিবন্ধন সম্পন্ন করেছেন।
টিকার অপেক্ষায় ১৬ লাখের বেশি নিবন্ধনকারী :
চট্টগ্রামে টিকা পেতে অনলাইনে নিবন্ধন করেছেন ৩০ লাখের বেশি মানুষ। কিন্তু গতকাল পর্যন্ত সাড়ে ১৩ লাখ নিবন্ধনধারী টিকার প্রথম ডোজ গ্রহনের সুযোগ পেয়েছেন। হিসেবে অনলাইনে নিবন্ধন করে ১৬ লাখের বেশি মানুষ এখন পর্যন্ত টিকার প্রথম ডোজের অপেক্ষায় আছেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধঅটোমেশন সিস্টেমেই যত দুর্ভোগ
পরবর্তী নিবন্ধসরকার চাইলে নির্বাচনে সহায়তা দিতে প্রস্তুত জাতিসংঘ