চট্টগ্রামের ১৬ সংসদীয় আসনের সীমানা অপরিবর্তিত

নির্বাচন কমিশনের চূড়ান্ত গেজেট প্রকাশ

শুকলাল দাশ | রবিবার , ৪ জুন, ২০২৩ at ৫:৫২ পূর্বাহ্ণ

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য ৩০০ সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণের চূড়ান্ত গেজেট প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন। এতে চট্টগ্রামের ১৬ সংসদীয় আসনের (মহানগরী এবং জেলা মিলে) কোনোটিতেই সীমানার পরিবর্তন হয়নি। গতকাল শনিবার নির্বাচন কমিশন সচিব জাহাঙ্গীর আলম স্বাক্ষরিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য ৩০০ আসনের সীমানা নির্ধারণ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন গেজেট আকারে জারি হয়েছে।

নির্বাচন কমিশন থেকে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি খসড়া তালিকা প্রকাশ করা হয়। সে সময় গেজেট বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছিল ১৯ মার্চের মধ্যে আপত্তি থাকলে উত্থাপন করতে হবে। এতে ৩৮টি আসনে মোট ১৮৬টি দাবি ও আপত্তির আবেদন জমা পড়ে। পরবর্তীতে ৩ থেকে ১৪ মে পর্যন্ত চারটি পৃথক দিনে আবেদনগুলোর শুনানি করে নির্বাচন কমিশন। এতে ১০টি আসনের সীমানা পুননির্ধারণের সিদ্ধান্ত নেয় সংস্থাটি।

নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা যায়, চলতি বছর ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকে আগামী জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহের মধ্যে সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এক্ষেত্রে চূড়ান্ত এ সীমানার তালিকা অনুযায়ী নির্বাচন হবে। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সীমানায় চট্টগ্রামের ১৬ সংসদীয় আসনে আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ১৬ সংসদীয় আসনের মধ্যে কোনো আসনেই নির্বাচনী সীমানা কমেনি বা বাড়েনি। তবে চট্টগ্রাম জেলা নির্বাচন অফিসের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, চট্টগ্রামের ১৬ আসনে আগের (একাদশ জাতীয় সংসদের) নির্বাচনী সীমানা ঠিক থাকলেও বেড়েছে ভোটার, বাড়বে ভোট কেন্দ্রের সংখ্যাও। নির্বাচন কমিশন কর্তৃক প্রকাশিত চূড়ান্ত ভোটার তালিকায় চট্টগ্রামের ১৬ আসনে ভোটার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬৫ লাখ ১৫ হাজার ২৫৪ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৩৪ লাখ ৫ হাজার ৪৬১ জন এবং মহিলা ভোটার ৩১ লাখ ৯ হাজার ৭৮৭ জন।

এই ব্যাপারে চট্টগ্রামের সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর হোসাইন আজাদীকে বলেন, সংসদীয় আসনের সীমানার চূড়ান্ত গেজেটে চট্টগ্রামে ১৬ সংসদীয় আসনের সীমানার কোনো পরিবর্তন হয়নি। আগের সীমানায় (একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের) দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতির ব্যাপারে জেলার সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর হোসাইন বলেন, নির্বাচনের প্রাথমিক প্রস্তুতির অংশ হিসেবে আমরা সংসদীয় এলাকার ভোট কেন্দ্রগুলোর একটি প্রাথমিক তালিকা তৈরির জন্য থানা নির্বাচন কর্মকর্তাদের বলেছি। তারা সরেজমিনে গিয়ে আগের ভোট কেন্দ্রগুলোর কি অবস্থা তার একটি তালিকা তৈরি করে আমাদের কাছে পাঠাবেন। আমরা সেগুলো যাচাই বাছাই করব। অনেক সংসদীয় আসনে ভোটার বাড়লে ভোটকেন্দ্রেও বাড়তে পারে। অনেক এলাকায় আগে যেখানে ভোট কেন্দ্র ছিল এখন সেই বিল্ডিং যদি জরাজীর্ণ হয়ে যায়, ভোটের পরিবেশ যদি না থাকে, তাহলে পাশাপাশি ভোট কেন্দ্রের স্থান নির্বাচন করতে হবে। এগুলো আগেভাগে দেখে রাখতে হয়। এখন সেই কাজগুলো করা হচ্ছে।

চট্টগ্রাম জেলা নির্বাচন অফিস থেকে জানা গেছে, চট্টগ্রামের ১৫টি উপজেলা ও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন এলাকা মিলে মোট ১৬টি সংসদীয় আসন রয়েছে। গত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রামে মোট ভোট কেন্দ্রের সংখ্যা ছিল ১ হাজার ৮৯৮টি। আর বুথের সংখ্যা ছিল ১০ হাজার ৬৮৩টি। গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রামে ১৫ উপজেলায় ৫৮টি ভোট কেন্দ্র ও ৮১৬টি ভোট কক্ষ বেড়েছিল। ভোটার সংখ্যা বৃদ্ধি, বিভিন্ন জনপ্রতিনিধি ও বিভিন্নজনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ভোট কেন্দ্র বৃদ্ধি করা হয়েছিল বলে জানান জেলা নির্বাচন অফিসের কর্মকর্তারা। এবারও ভোটার সংখ্যা বৃদ্ধির ফলে কেন্দ্র সংখ্যা বাড়তে পারে বলে ধারণা করছেন নির্বাচন অফিসের কর্মকর্তারা।

ইসি সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলমের বৃহস্পতিবার (১ জুন) স্বাক্ষরিত ওই গেজেট বিশ্লেষণে সারাদেশে মোট ১০টি আসনের সীমানায় পরিবর্তন পাওয়া গেছে। এছাড়াও নতুন করে প্রশাসনিক এলাকায় সৃষ্টি হওয়ায় ৭টি আসনের পুনর্বিন্যাসও হয়েছে। যে আসনগুলো সীমানা পুননির্ধারণ হয়েছে সেগুলো হল পিরোজপুর১ ও ২, গাজীপুর২ ও ৫, ফরিদপুর২ ও ৪, কুমিল্লা১ ও ২ এবং নোয়াখালী১ ও ২ আসন। এদিকে যে আসনগুলোর সীমানা পরিবর্তন না হলেও প্রশাসনিক কারণে পুনর্বিন্যাস হয়েছে সেগুলো হল ময়মনসিংহ, মাদারীপুর, সুনামগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, সিলেট, সিলেট৩ ও কঙবাজার৩ আসন।

কঙবাজার৩ আসন : সদর উপজেলার পাঁচটি ইউপি নিয়ে ‘ঈদগাঁও’ নামে নতুন উপজেলা গঠন হয়েছে। এ আসনটি কঙবাজার সদর ও রামু উপজেলা নিয়ে গঠিত। এক্ষেত্রে তালিকায় ঈদগাঁও নামটি জুড়ে দেওয়া হয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচূড়ান্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে দেওয়া নারাজি খারিজ, রিভিশন দায়ের
পরবর্তী নিবন্ধপায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ থাকবে ২০-২৫ দিন