কক্সবাজারের চকরিয়ায় এক ব্যবসায়ীকে দোকানে ঢুকে নির্মমভাবে মরিচের গুঁড়া ছিটিয়ে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। হত্যাকাণ্ডের শিকার ওই ব্যবসায়ী বিকাশের এজেন্ট। এ সময় ক্যাশে রক্ষিত বিপুল পরিমাণ টাকাও লুট করে দুর্বৃত্তরা। হত্যাকাণ্ডের পর দোকানের পাশ দিয়ে থাকা অন্ধকার গলি দিয়ে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায় বলে ধারণা করছে পুলিশ।
এর আগে ওই গলিয়ে ওঁৎ পেতে ছিল সংঘবদ্ধ দুর্বৃত্তের দল। এই ঘটনায় পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার করে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি শেষে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেছে। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা হয়েছে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ধারালো একটি দা এবং মরিচের গুঁড়া।
গতকাল সোমবার দিবাগত রাত সাড়ে দশটার দিকে চকরিয়া পৌরশহরের সরকারি হাইস্কুল সড়কের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। পুলিশ জানায়, এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত অজ্ঞাত দুর্বৃত্তদের ধরতে পুলিশের একাধিক দল অভিযানে নেমেছে। একইসাথে সঠিক কী কারণে এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে তাও তদন্ত করা হচ্ছে। পূর্ব শত্রুতা না-কী ব্যবসায়ীক টাকা লুটের উদ্দেশ্যে এই হত্যাকাণ্ড তাও বের করার চেষ্টা করছে পুলিশ।
খুনের শিকার ব্যবসায়ীর নাম লতিফ উল্লাহ (৩৮)। তিনি চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার আধুনগর ইউনিয়নের সাত নম্বর ওয়ার্ডের সুফী মিয়াজী পাড়ার মৃত মোহাম্মদ ইলিয়াছ সওদাগরের পুত্র। তিনি পৌরশহরের বালিকা বিদ্যালয় সড়কেরও একজন পরিচিতি ব্যবসায়ী ছিলেন। বাড়ি লোহাগাড়ায় হলেও দীর্ঘ ২০ বছরের বেশি সময় ধরে চকরিয়ায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান খুলে ব্যবসা করে আসছিলেন।
নিকটাত্মীয় ব্যবসায়ীরা জানান, বালিকা বিদ্যালয় সড়কের পাশাপাশি হাইস্কুল সড়কেও তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। ওই প্রতিষ্ঠানটি বিকাশেরও এজেন্ট। সোমবার দিবাগত রাতে ব্যবসায়ীক হিসাব-নিকাশ সেরে বাসায় ফিরতে দোকান বন্ধ করার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। সেই মুহূর্তে কয়েকজনের দুর্বৃত্ত দোকানে ঢুকে চেহারা লক্ষ্য করে প্রথমে মরিচের গুঁড়া ছিটিয়ে দেয়। এ সময় ক্যাশবাক্স থেকে টাকা লুট এবং মাথা লক্ষ্য করে ধারালো দা দিয়ে উপর্যপুরি তিনটি আঘাত করে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। এ সময় তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করে।
এ ব্যাপারে চকরিয়া থানার ওসি মুহাম্মদ ওসমান গনি জানান, খবর পেয়ে পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার এবং সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি শেষে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেছে। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত একটি ধারালো দা এবং মরিচের গুঁড়া জব্দ করা হয়েছে। পূর্ব শত্রুতা না-কী টাকা লুটের উদ্দেশ্যে এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে তা বের করার চেষ্টা চলছে। একইসাথে হত্যাকাণ্ডে জড়িত অজ্ঞাত দুর্বৃত্তদের শনাক্তপূর্বক গ্রেপ্তারে পুলিশের একাধিক দল অভিযান শুরু করেছে।
ওসি জানান, এই ঘটনায় এখনো (মঙ্গলবার দুপুর বারোটা) পর্যন্ত পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়নি। অভিযোগ পেলে মামলা রুজু করা হবে।
