গ্যাস সংকটের নেপথ্যে নীরব খনির দেশ বাংলাদেশ

সাইদুন্নিছা তোহফা | শুক্রবার , ৭ অক্টোবর, ২০২২ at ৮:০৪ পূর্বাহ্ণ

সারাবিশ্বে জ্বালানি সংকটের ধাক্কা লেগেছে বাংলাদেশেও। রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর থেকে বিশ্ববাজারে জ্বালানির মূল্য অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়ায় এ সংকট হয়েছে। ফলে অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশকেও উচ্চমূল্যে গ্যাস আমদানি করতে হচ্ছে। ইতোমধ্যে, গ্যাস সংকটের কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদন হ্রাস পেয়ে দফায় দফায় লোডশেডিং এর হার যেনো বেড়েই চলেছে। এতে জন দুর্ভোগের পাশাপাশি শিল্পখাতে বিপর্যয়ের আশঙ্কাও রয়ে যায়। দেশে গ্যাসের চাহিদার সাথে গ্যাস উত্তোলন এবং সরবরাহের অসামঞ্জস্যতাই এই সংকট সৃষ্টি করেছে বলে বিশেষজ্ঞদের ধারণা। শিল্পায়ন ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বেড়ে যাওয়ায় দেশে প্রাকৃতিক গ্যাসের চাহিদা ক্রমান্বয়ে বাড়ছে।
একটি জরিপে উঠে এসেছে, বাংলাদেশে দৈনিক গ্যাসের চাহিদা প্রায় ৩৭০০ মিলিয়ন ঘনফুট। যেখানে দেশীয় গ্যাসের উৎপাদন মাত্র ২৫৭০ মিলিয়ন ঘনফুট। এক্ষেত্রে প্রশ্ন হচ্ছে, সংকট সমাধানে দেশীয় গ্যাস অনুসন্ধানে কতটুকু এগিয়েছে বাংলাদেশ? বাংলাদেশকে বলা হয় নীরব খনির দেশ। দেশে গ্যাস অনুসন্ধানের ক্ষেত্রে তিনটি কূপ খনন করলে একটি তে গ্যাস পাওয়া যায়। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত, এই নীরব খনির দেশেই গত ২২ বছরে নামমাত্র কিছু গ্যাসক্ষেত্র অনুসন্ধান হয়েছে। যেখানে সমুদ্র বিজয়ের পর মিয়ানমার ও ভারত সাগরে তেল-গ্যাস আবিষ্কারে এগিয়েছে অনেক পথ। তাছাড়া বর্তমানে গ্যাস সংকটের নেপথ্যে ভূমিকা রাখছে গ্যাসের অবৈধ সংযোগ। এভাবে নানা কারণে দিন দিন ফুরিয়ে যাচ্ছে দেশের মজুদ গ্যাস। গ্যাস সংকটের এমন কঠিন বাস্তবতায় অনুসন্ধান কার্যক্রম বাড়ানোর কোনো বিকল্প নেই। এছাড়া সংকট নিরসনে নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনে জোর দিতে হবে সরকারকে। এছাড়াও বঙ্গোপসাগরে গ্যাস অনুসন্ধানের প্রতি জোর দেওয়া এখন সময়ের দাবি। স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে নামতে হবে সংশ্লিষ্ট সকলকেই। সর্বোপরি রাষ্ট্র হিসেবে উন্নত হতে হলে বিদ্যুৎ ও জ্বালানির সাশ্রয়ে দেশের সর্বস্তরের জনগণকে সচেতন হতে হবে। তবেই এই সংকটের আশু সমাধান সম্ভব।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমাদক সেবন বন্ধে জোরালো পদক্ষেপ নিন
পরবর্তী নিবন্ধএকটা স্যামসাং মোবাইল ও ডেবিট কার্ডের গল্প