গণতন্ত্র ও মানবাধিকার : রহস্যাবৃত অপাঙক্তেয় সবক

ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী | শনিবার , ২৭ আগস্ট, ২০২২ at ৭:৩৮ পূর্বাহ্ণ

এটি সর্বজনবিদিত যে ‘মানবাধিকার’ গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির অন্যতম বিশেষ অনুষঙ্গ। স্বাধীন-সার্বভৌম জাতিরাষ্ট্রের নাগরিকবৃন্দ সংবিধান সম্মত অনায়াসে সকল অধিকার ভোগ করা সর্বত্রই সুনিশ্চিত। আমাদের পবিত্র সংবিধানে জনগণকে রাষ্ট্রের সকল ক্ষমতার উৎস-মালিকানা প্রতিষ্ঠা সুদৃঢ়ভাবে ঘোষিত। মৌলিক অধিকার সমুন্নতসহ নানাবিধ ধর্মীয়-আর্থসামাজিক-রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক কর্মযজ্ঞে জনগণের অবাধ-স্বাধীন অংশগ্রহণ ও সার্বিক উপভোগের নিশ্চয়তা সুরক্ষিত। দুঃখজনক হলেও সত্য; নিরন্তর-অবারিত মানবাধিকার সংশ্লিষ্ট বিষয়সমূহ দেশবাসীর চাহিদা অনুসারে সমধিক প্রতিফলিত হলেও কতিপয় দুই-একটি অনাকাঙ্খিত ঘটনার জন্য চলমান সরকারকে দায়ী করার অপচেষ্টার আশ্রয় নেওয়া হয়। অযাচিত-অগ্রহণযোগ্য এমন কিছু ব্যবস্থা-সবক-পরামর্শপত্র চাপিয়ে দেওয়া হয় যাতে মানবাধিকার লঙ্ঘনে দেশ-সরকার পরিপূর্ণ কলুষিত চরিত্রে অনুভূত। উন্নত বিশ্বে সংঘটিত ঘৃণ্য ঘটনাপ্রবাহকে আড়াল করে অনুন্নত বিশ্বের দেশসমূহের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে অনর্থক এ ধরনের উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হস্তক্ষেপ কোনভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়।
অতিসম্প্রতি বাংলাদেশ সফর করেছেন জাতিসংঘ মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল ব্যাচেলেট। বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি, গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ড, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিয়ে সরকারের মন্ত্রীদের নিকট বহুবিধ বিষয়ে ব্যাখ্য চেয়েছেন। চার দিনের সফর শেষে সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে দেওয়া বিবৃতিতে তিনি প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারকে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য বাংলাদেশ সরকারকে আন্তরিক ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। বাংলাদেশের মানবাধিকারসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোকপাত করে তিনি বলেন, ‘ধারাবাহিকভাবে উপস্থাপিত বিভিন্ন মানবাধিকার প্রতিবেদনে নাগরিক সমাজের গুরুত্ব সীমিত করা, ক্রমবর্ধমান নজরদারি, ভয়ভীতি প্রদর্শন ও প্রতিশোধমূলকভাবে বাকস্বাধীনতা হরণ করার বিষয়গুলো প্রতিফলিত হয়েছে। বিভিন্ন আইনি ও নীতিমালার মাধ্যমে এনজিওসমূহের উপর অতিরিক্ত নিয়ন্ত্রণমূলক ব্যবস্থা আরোপ এবং ব্যাপকভাবে বাকস্বাধীনতা হরণের ফলে তাদের জন্য ফলপ্রসূভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করা কঠিন এবং কখনো কখনো ঝুঁকিপূর্ণ হয়েছে।’ বাকস্বাধীনতা, রাজনৈতিক কর্মী, বিরোধী দল এবং সাংবাদিকদের সংগঠন ও শান্তিপূর্ণ সমাবেশের স্বাধীনতার পাশাপাশি নাগরিক ও রাজনৈতিক সমাজের ভূমিকা জোরদার করার লক্ষ্যে বাংলাদেশের জন্য নির্বাচনের সময়টি একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রেক্ষাপট বিবেচনায় আইন প্রয়োগকারী বাহিনীর সদস্যরা অতিরিক্ত বল প্রয়োগ করা ছাড়াই যাতে প্রতিবাদ সমাবেশসমূহ নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন, সে জন্য তাদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ প্রদানের উপর তিনি গুরুত্বারোপ করেন।
তিনি হিন্দু সম্প্রদায় ও ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মতো সংখ্যালঘু সম্প্রদায়সমূহকে সহিংসতা ও তাদের ভূমি বেদখল থেকে সুরক্ষা প্রদানের উপর জোর দিয়েছেন। জাতিসংঘ মানবাধিকার সংস্থা বাংলাদেশে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, নির্যাতনের অভিযোগের ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করে নিরাপত্তা খাতের সংস্কারের পাশাপাশি এসব অভিযোগের বিষয়ে একটি নিরপেক্ষ, স্বাধীন ও স্বচ্ছ তদন্তের সুপারিশ করেন। তিনি অনলাইন স্পেসের উপর নিয়ন্ত্রণ, আনলাইনে ঘৃণ্য উদ্রেককারী বক্তব্য প্রচারের সুযোগ না রাখা, মিথ্যা তথ্য প্রদান ও সাইবার ক্রাইম মোকাবিলা করার প্রয়োজনীয়তা স্বীকার করলেও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের সমালোচনা করে বলেন, ‘আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন ও মানদন্ডের সঙ্গে সাযুজ্য রাখার এবং ইচ্ছেমতো আইনের প্রয়োগ অথবা অপব্যবহার রোধ করার লক্ষ্যে এই আইনের কতক বিধি রদ ও পুনর্বিবেচনা করা সংক্রান্ত বিভিন্ন সুপারিশ অমরা উপস্থাপন করেছি। আমরা এ ক্ষেত্রে সরকারের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় সাড়া এবং আইনটি পুনর্বিবেচনা করার প্রক্রিয়া গতিশীল করার লক্ষ্যে সময়সীমা নির্ধারণের প্রত্যাশা করি।’
১৫ আগস্ট ২০২২ সফররত জাতিসংঘ মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ও বাংলাদেশের মানবাধিকারকর্মী-নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের মধ্যে অনুষ্ঠিত বৈঠকে বাংলাদেশের মানবাধিকার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশের তীব্র সমালোচনা করেছেন সম্মানিত আইনমন্ত্রী। জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘তাঁরা বলেছেন, বাংলাদেশ জনগণের রাষ্ট্র নয়, পুলিশি রাষ্ট্র। আমার প্রশ্ন, বাংলাদেশ যদি পুলিশি রাষ্ট্র হয়ে থাকে, তাহলে এই যে আপনারা বললেন, এটা বলতে কি কেউ আপনাদের বাধা দিয়েছে? দেয়নি। মিটিং করলেন, কেউ বাধা দিয়েছে? সরকার দেয়নি। সেই বক্তব্য খবরের কাগজে ছাপালেন, আমরা কি রাতের বেলা গিয়ে খবরের কাগজকে গলা চিপে ধরেছি যে ছাপানো যাবে না? তা করা হয়নি। টক শোতে বিরোধী দলের লোক যা খুশি তা-ই বলেন, কিন্তু সরকার বাধা দেয় না। এটাই সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা, বাকস্বাধীনতা।’ এছাড়াও জাতিসংঘ মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার মিশেলের সঙ্গে বৈঠকের পর তিনি সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মানবাধিকারকে সাংঘাতিক মূল্য দেন। তার কারণ তিনি বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের একজন ভিকটিম। সেজন্য জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকার মানবাধিকারকে সবসময় সমুন্নত রাখবে এবং আইন দ্বারা মানবাধিকার লঙ্ঘন বন্ধ করার ব্যাপারে সচেষ্ট থাকবে।’
সচেতন মহলের জানা যে, গণতন্ত্র ও মানবাধিকার একে অপরের পরিপূরক হিসেবে একটি অপরটিকে অধিকতর সমৃদ্ধ করে তোলে। গণতন্ত্র ব্যতিরেকে মানবাধিকার যেমন কল্পনা করা যায় না, তেমনি মানবাধিকার লঙ্ঘন করে সাবলীল-স্বাভাবিক গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রাকে রুদ্ধ করাও দুরূহ ব্যাপার। তথাপিও উন্নত বিশ্বের বহু গণতান্ত্রিক দেশে মানবাধিকার পদে পদে লঙ্ঘিত হচ্ছে। ১৯৪৮ সালের ১০ ডিসেম্বর ব্যক্তিগত-সামাজিক-রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক-ধর্মীয় অধিকার নিশ্চিতকল্পে গৃহীত মানবাধিকার ঘোষণাটি কালের বিবর্তনে আজ বিশ্বব্যাপী প্রচন্ড হুমকির সম্মূখীন। মানবাধিকার আজ মুখরোচক কথা হিসেবে পরিগনিত। ক্ষমতালিপ্সু কতিপয় হিংস্র দানবরূপী মানুষ আধিপত্য বিস্তারে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে চালাচ্ছে পরিকল্পিত গণহত্যা ও জাতিগত নিধন। পশ্চিমা বিশ্ব তথাকথিত মানবাধিকারের তকমা লাগিয়ে ফিলিস্তিন, আফগানিস্তান, ইরাক, সিরিয়া ও ইয়েমেনে প্রতিনিয়ত মানবাধিকার লঙ্ঘন করে যাচ্ছে। সিরিয়া ও ইয়েমেনের লাখ লাখ নাগরিকের ক্ষুধা ও দুর্ভিক্ষের অসহনীয় কাতরতার দোলাচলে ঘোরপাক খাচ্ছে মানবতা। বিশ্বময় মানবতার ফেরিওয়ালারই সবচেয়ে বেশি মানবাধিকার হরণে ব্যতিব্যস্ত-লিপ্ত রয়েছে।
ইসরাইল অধিকৃত ফিলিস্তিন ভূখন্ডে মানবাধিকার পরিস্থিতি আজ চরমভাবে বিপর্যস্ত। ১৯৪৮ সাল থেকে বহু ফিলিস্তিনিরা দেশ থেকে জোরপূর্বক বিতাড়নের মুখে স্বাভাবিক জীবনধারণের অধিকার বঞ্চিত হয়ে বিভিন্ন রাষ্ট্রে উদ্বাস্তু হয়েছে। দেশে অবস্থানকারী ফিলিস্তিনিরা প্রায়শ আগ্রাসী ইসরায়েলি বাহিনীর বর্বরতার শিকার হচ্ছে। ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ১৫ বছর ধরে দখলদার ইসরাইলের অবরোধের কারণে অবকাঠামো ধ্বংসসহ গাজার মানুষ অতি প্রয়োজনীয় সেবা ও চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। পশ্চিমা রাষ্ট্রের দ্বিমুখী নীতির জন্য অদ্যাবধি ইসরায়েল-ফিলিস্তিন পরিস্থিতির উন্নতি দৃশ্যমান নয়। বিশ্লেষকদের মতে, একমাত্র ইসরাইলের দখলদারিত্বের অবসানই ফিলিস্তিনে শান্তি আসবে এবং মানবাধিকারের সকল শর্ত পালন সম্ভব হবে। মিয়ানমারেও কয়েক দশক ধরে চলমান মুসলিম রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর উপর অপরিমেয় নির্যাতন অতীতের সকল রেকর্ড ছাড়িয়ে বর্তমানে আরও ভয়াবহরূপ পরিগ্রহ করেছে। দেশটির জান্তা সরকার তাদের নাগরিকত্ব বাতিল ঘোষণা করে জাতিগতভাবে নির্মূলের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের অত্যচারে অতিষ্ঠ হয়ে লক্ষ লক্ষ রোহিঙ্গা জীবন ঝুঁকি নিয়ে বিভিন্ন দেশে পালিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশেও দুই দফায় ১০ লক্ষাধিক রোহিঙ্গার আশ্রয়ের বিষয়টি সমগ্র বিশ্ববাসীর অজানা নয়। রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী মিয়ানমারে বৈষম্য ও সংখ্যাগুরু বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী উগ্রবাদীদের বর্বর সহিংসতার চিত্র বিশ্ববিবেকখ্যাত কথিত দেশগুলোর দৃষ্টিগোচরে আনছে বলে মনে হচ্ছে না।
জানুয়ারি ২০২২ প্রকাশিত গণমাধ্যম সূত্রমতে, বিশ্বের সবচেয়ে বড় গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে বিবেচ্য খোদ যুক্তরাষ্ট্রের গুম, খুন, পুলিশি নির্যাতন নিত্য নৈমিত্তিক বিষয়ে পরিণত হয়েছে। পরিস্থিতি দিন দিন বেগতিক রূপ নিচ্ছে। বিশ্বে মানবাধিকারের সবক দেওয়া দেশটিতে নড়বড়ে হয়েছে মানবাধিকার পরিস্থিতি। কুইনিপিয়াক বিশ্ববিদ্যালয়ের সমীক্ষা মতে প্রায় ৫৮ শতাংশ নাগরিক মনে করেন যুক্তরাষ্ট্রে গণতন্ত্র দিনে দিনে ধ্বংসের ঝুঁকিতে যাচ্ছে। ১৯৯০ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত নিখোঁজ ব্যক্তিদের তালিকা বিশ্লেষণ অনুসারে, দেশটিতে প্রতি বছর গড়ে গুম হচ্ছে সাড়ে ৫ থেকে ৬ লাখ মানুষ। কোনো কোনো সময় এই সংখ্যা ৭ লাখের উপর থাকলেও ১৯৯৭ সালে সর্বোচ্চ ৯ লাখ ৮০ হাজারেরও বেশি। যা নিয়ে উদ্বিগ্ন মার্কিন নাগরিকরাই।
১৭ আগস্ট গণভবনে মিশেল ব্যাচেলেট এর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতকালে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ১৯৭৫ এর পরে দীর্ঘ সময় দেশে সামরিক শাসন থাকায় মানুষের মৌলিক ও মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে বলে মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ‘নৃশংসতার সময় আমি ও আমার ছোট বোন শেখ রেহানা দেশের বাইরে থাকায় প্রাণে বেঁচে যাই। ওরা ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করেছিল বলে আমরা যখন দেশে ফিরে আসি তখন বিচারও চাইতে পারিনি। পঁচাত্তরের পর জাতির পিতার খুনি ও যুদ্ধাপরাধীদের রাজনীতিতে প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছিল।’ ১৫ আগস্ট ১৯৭৫ মুক্তির মহানায়ক জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে সপিরবারে বর্বরতম হত্যাযজ্ঞের ধারাবাহিকতায় কারাবন্দী জাতীয় চারনেতাকে হত্যা এবং পরবর্তী পর্যায়ে একুশ আগস্ট বঙ্গবন্ধু কন্যাকে প্রাণনাশের বর্বরতায় মানবাধিকার লঙ্ঘনের দৃশ্যপট সহজেই অনুমেয়। একই পরিক্রমায় তাঁকে বহুবার হত্যার পরিকল্পনা এবং সেনা-স্বৈশাসকদের যাঁতাকলে বিপুল সংখ্যক মহান মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যা-সামরিক ও বেসমারিক ব্যক্তি-রাজনীতিকদের নির্মম-নির্দয় নিপীড়ন-নির্যাতন-গুম-খুন ইত্যাদি পর্যালোচনায় মানবাধিকার নিধনের দুঃসহ চিত্র বাংলার প্রতিটি মানুষের হৃদয় এখনও গভীর ক্ষত-যন্ত্রণাদগ্ধ। সত্য-বস্তুনিষ্ঠ মানদণ্ডে মানবাধিকার বিষয়টি যথাযথ মূল্যায়ন করা হলে দেশ-জাতি-বিশ্ব প্রকৃত অর্থেই উপকৃত হবে।

লেখক : শিক্ষাবিদ, সাবেক উপাচার্য, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

পূর্ববর্তী নিবন্ধহল্যান্ড থেকে
পরবর্তী নিবন্ধঅভিনেত্রী বিজেপি নেত্রীকে ধর্ষণ করে হত্যার অভিযোগ!