ক্ষুধার রাজ্যে পৃথিবী গদ্যময়

শিউলী নাথ | রবিবার , ২০ মার্চ, ২০২২ at ৮:২৪ পূর্বাহ্ণ

‘ওরা না হয় না খেয়ে থাক, দু’এক বেলা করে/ তুমি খাচ্ছো, আমি খাচ্ছি মহা সাড়ম্বরে’! -সত্যিই ওদের কথা ভেবে কী লাভ? আমরাতো সুখে আছি এই হলো বড় কথা। বর্তমান বাজার পরিস্থিতির দিকে তাকালে মনে হবে স্বাধীন বাংলাদেশের উন্নয়ন এত উচ্চে পৌঁছে গেছে যেখানে সকল শ্রেণির মানুষের অভাব বোধ বলে কোনো বিষয়ই নেই। সকলেই যেন খেয়ে পরে দিব্যি আছে। অথচ বাস্তব চিত্র যে কত কঠিন, কত নির্মম তা বোঝার ক্ষমতা যাদের, তারা বুঝেও বোঝেন না, দেখেও দেখেন না। ধরা যাক এক রিক্সাচালকের কথা। তিনি বললেন, ‘ঘরে বাচ্চা-কাচ্চা নিয়ে ৬ জন। বাজারে গিয়ে যেখানে হাত দিই সেখানেই আগুন দাম। মালিকের ভাড়ার টাকা দিয়ে অল্প যা কিছু থাকে তা দিয়ে সবার পেট ভরে না। সরকার ব্যবস্থা নিতে পারেনা’? হয়ত একজন সাধারণ মানুষের কষ্টের কথা শুনলাম কিন্তু কোটি কোটি মানুষ আজ সেই দলে। তাকে লজ্জায় বলতে পারিনি-আমিও তোমাদের দলে। হয়ত প্রতিদিন না খেয়ে থাকতে হচ্ছেনা কিন্তু কীভাবে খেয়ে বেঁচে আছি তা নিম্নমধ্যবিত্ত ঘরের মানুষই জানে। যারা বাজারে গিয়ে লজ্জায় মাথা নিচু করে থাকে। শেষে অনেক দরদাম করে হয়ত সামান্য কিছু নিয়ে ঘরে ফেরেন। এত কথা বলার পেছনে একটাই কারণ তা হলো- দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধে সত্যিই কোনো ব্যবস্থা নেই? পুরো বাজার কি একশ্রেণির হাতে কুক্ষিগত হয়ে থাকবে? সামনে রমজানের বাজার। লোভী শ্রেণি মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে। সাধারণ মানুষের নিত্যদিনের আহারে ছাই ঢালছে তারা। আমাদের বিশ্বাস অচিরেই সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ, মধ্যবিত্ত, নিম্নমধ্যবিত্ত মানুষের কথা চিন্তা করে বাজার দর নাগালের মধ্যে আসবে। আমার দেশের সকল মানুষ খেয়ে পরে বাঁচতে পারলেই দেশের শান্তি ও সমৃদ্ধি দুই-ই আসবে। সুকান্তের ভাষায় ‘ক্ষুধার রাজ্যে পৃথিবী গদ্যময়, পূর্ণিমার চাঁদ যেন ঝলসানো রুটি’। লেখক: কবি ও শিক্ষক

পূর্ববর্তী নিবন্ধকষ্টে আত্মহনন নয়, ঘুরে দাঁড়ান
পরবর্তী নিবন্ধদেশ হতে দেশান্তরে