ক্ষমতার রাজনীতি ও সাম্প্রদায়িক সমাজ মানস

কানাই দাশ | মঙ্গলবার , ২ আগস্ট, ২০২২ at ৭:১৩ পূর্বাহ্ণ

রাজনৈতিক ক্ষমতা চর্চার সাথে আদর্শ বাস্তবায়নের তাগিদ থাকে কিন্তু ক্ষমতার রাজনীতি যে কোন দলকে নেতিবাচক পথে নিয়ে যায়, স্পর্শকাতরতাহীন, বোধহীন, স্থবিরতায় স্তদ্ধ করে দেয়। মনে হয় এই ক্ষমতার রাজনীতির কারণে গত বেশ কিছুদিন ধরে দেশে বার বার সাম্প্রদায়িক সহিংসতা, শিক্ষক লাঞ্চনা ও হত্যার মত চরম মর্মপীড়াদায়ক ঘটনা ঘটে চলেছে। সাম্প্রদায়িকতা হলো ক্ষমতার রাজনীতির এক কুৎসিত রূপ। ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের সংখ্যাল্পতাও দূর্বলতার কারণে আমাদের দেশে সাধারণত সাম্প্রদায়িক ঘটনাগুলো একতরফা সহিংসতার রূপ নেয়। সাম্প্রতিক ঘটনাগুলোর মধ্যে নতুনত্ব হল সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ভুক্ত শিক্ষক নির্যাতন। ফেসবুক আইডি হ্যাক করে বা ভুয়া আইডি থেকে নিরীহ ধর্মীয় সংখ্যালঘু কোন ব্যক্তির নামে ধর্মীয়ভাবে স্পর্শকাতর কোন পোষ্ট দিয়ে ধর্মীয় অনুভুতিতে আঘাতের ধূয়া তুলে রামু থেকে সম্প্রতি নড়াইল পর্যন্ত গত ১২ বছরে সব সাম্প্রদায়িক হামলাগুলো সংঘঠিত হয়েছে। প্রশ্ন হলো গত শারদীয় দূর্গোৎসবের সময় কিভাবে টানা ৫ দিন ব্যাপী সহিংসতা চলে শক্তিশালী একটি দল, সরকার ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সামনে। শুধু তাই নয় প্রত্যেক ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পর্যায়ে মেম্বার চেয়ারম্যান ছাড়াও আওয়ামী লীগের অসংখ্য নেতা-কর্মী রয়েছে। কোথাও কখনো তারা প্রতিরোধে এগিয়ে আসেনা। আগে থেকে নেতৃত্বের কঠোর নির্দেশ থাকলে এসব ঘটনা ঘটতে পারে না। তা হলে ধরে নেয়া যায় নেতৃত্ব এ বিষয়ে নির্বিকার। প্রত্যেকটি ঘটনা মূল অপরাধী চিহ্ন হওয়ার পরও একটি ঘটনারও কোন বিচার না হওয়া তারা সাহসী হয়ে উঠেছে। এসব হামলাকারীরা তো এখানে থামবে না। আজ সংখ্যালঘুদের বাড়ী পুড়ছে আগামীতে রতন ছিদ্দিকীর মত সুস্থ বিবেক সম্পন্ন মুসলিমরা এর শিকার হবে। ধর্মীয় সংখ্যালঘু শূন্য পাকিস্তানে প্রতি শুক্রবারে মসজিদে বোমা হামলা চলে, মারা যায় অসংখ্য মুসল্লী। একসময়ে পাকিস্তান সরকার এবং সশস্ত্র বাহিনী সৃষ্ট তালেবানরা এখন উল্টো সেনাবাহিনীকে আক্রমণ করছে। সরকার বাধ্য হয়ে তাদের সাথে যুদ্ধ বিরতির চুক্তি করেছে। আমরা কি সেই পথে চলেছি? ইতিমধ্যে ভারতে চরম সাম্প্রদায়িক শক্তি মোদি-অমিত জুটির নেতৃত্বে ক্ষমতায় এসে ভারতের বহুত্ববাদী ঐতিহ্যকে ধ্বংস করে দিয়েছে। পুরো উপমহাদেশেকে তারা বিভেদ ও সাম্প্রদায়িতকতার অন্ধকারে নিয়ে যাচ্ছে। এর চেয়ে দুঃসময় গত ৭০ বছরে উপমহাদেশে দেখা যায়নি।

একটু চিন্তা করলে দেখা যাবে, ধর্মের নামে অর্ধমের এই বিকারগ্রস্থ উন্মত্ততা, উগ্র সাম্প্রদায়িকতা বা পরপর ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো কোন বিছিন্ন কিছু নয় বরং ১৯৯০ সাল থেকে সুসংবদ্ধ ও পরিকল্পিতভাবে এসব ঘটনা সংঘটিত হচ্ছে। হতাশার ব্যাপার হলো এই সরকারের আমলে মাত্রাটা বেড়েছে ব্যাপকভাবে। এসব ঘটনার সামাজিক ও রাজনৈতিক পটভূমিও বেশ পুরানো। ১৯৭৫ সালের পর থেকে শাসক গোষ্ঠীর অনুসৃত স্বেচ্ছাচারি ও কর্তৃত্ববাদী গণবিরোধী অগণতান্ত্রিক ধর্মান্ধ রাজনৈতিক সংস্কৃতি, শিক্ষার সাম্প্রদায়িকীকরণ, অর্থনীতির দূর্বৃত্তায়ন, দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতার সর্বোচ্চ পর্যায়ের জবাবদিহিতাবিহীন শাসন ব্যবস্থা দেশে জন্ম দিয়েছে স্বেচ্ছাচারিতা, লাগামহীন দূর্নীতি, নীতিহীন রাজনীতি ও সামাজিক অনাচার। দুঃখজনকভাবে সেই ক্ষমতার রাজনীতি ধারা এখনো নির্বিঘ্নে চলছে। ইতোমধ্যেই এ সব কারণে সৃষ্ট ধর্মীয় ও সমাজিক বৈষম্যের প্রভাবে ধীরে ধীরে আমাদের দেশে সাম্প্রদায়িকতার সামাজিকীকরণ হয়ে গেছে। বাস্তবে মাছে-ভাতে বাঙালি এখন জাতীয় পরিচয়ের ঊর্দ্ধে বিভক্ত হয়ে গেছে হিন্দু ও মুসলিম এই দুই ধর্ম পরিচয়ে। যে সেতু দিয়ে জাতির এই বিভক্তিকে যুক্ত করা যায় তা নির্মাণ জাতীয় স্বার্থে জরুরী হলেও বর্তমান সরকার তা প্রয়োজনীয় মনে করছে না। কোন ঝুঁকি না নিয়ে জিয়া ও এরশাদের মত আমলা, অসৎ ব্যবসায়ী ও ধর্ম ব্যবসায়ীদের তুষ্ট রেখে ক্ষমতায় টিকে থাকাকে শ্রেয়তর বিবেচনা করছে সরকার। এজন্য হেফাজতের পরামর্শে সাধারণ শিক্ষার পাঠ্যসূচি পর্যন্ত পাল্টে ফেলা হয়েছে। প্রকৃত প্রস্তাবে ১৯৪৭ সালের দ্বি-জাতিতত্ত্বের প্রত্যাখ্যাত ধারনা জিয়া-এরশাদের আমলে সমাজে রাজনীতিতে পুন: প্রতিষ্ঠিত হলেও বর্তমান সরকারের আমলে তা মহীরুহে পরিণত হয়েছে। ক্ষমতার রাজনীতি ও ভয়ের সংস্কৃতি ক্রমাগত আওয়ামী লীগকে চরম দক্ষিণ পন্থার দিকে নিয়ে যাচ্ছে।

’৭১ সালে ইয়াহিয়া ও টিক্কা এথনিক ক্লিনসিং বা হিন্দু নিধন কর্মসূচি হাতে নেয় যাতে তারা পালিয়ে ভারতে চলে যায় বা যতটুকু পারা যায় হত্যা করে জোর করে দেশকে হিন্দুশূন্য করার চেষ্টা করা হয়। টিক্কার নির্দেশে এদেশে প্রায় প্রত্যেকটি হিন্দুপল্লী জ্বালিয়ে পুড়িয়ে বিধস্ত করে দেওয়া হয় এবং সম্প্রদায়গতভাবে হিন্দুরা অপেক্ষাকৃতভাবে বেশি হত্যা লাঞ্চনা ও দেশত্যাগের শিকার হয়। এখনো সেই হতশ্রী হিন্দুপল্লীগুলো ’৭১ এর পূর্ববর্তী সম্পন্ন অবস্থায় ফিরেনি। স্বাধীনতার পর এই নির্মম বাস্তবতার স্বীকৃতি শাসকদল দেয়নি ক্ষমতার রাজনীতির দৃষ্টিকোণ থেকে। ট্রাজেডি হল সংখ্যলঘুদের এই অবর্ণনীয় ত্যাগের মাত্র নয় মাসের মাথায় ১৯৭২ সালের শারদীয়া দূর্গাৎসবের দ্বিতীয় দিনে একই সময়ে সারা বাংলাদেশে পূজামণ্ডপ ভাঙচুর করা হয়। ১৯৭২ সালেই পরাজিত সাম্প্রদায়িক শক্তি গোপনে দ্রুত সংগঠিত হয়ে একদিকে তাদের শক্তির জানান দেয় অন্যদিকে তৎকালীন সরকার ও সরকারীদল আওয়ামী লীগের প্রতিক্রিয়ার মাত্রা পরখ করে নেয়। বলা বাহুল্য সেই সময় সরকারের শীতল প্রতিক্রিয়া তাদের একই সাথে বিষ্মিত ও উৎসাহিত করে। বিগত ১২ বছর ধরে সেই আওয়ামী লীগের আমলেই একের পর এক পুড়ছে হিন্দুপল্লী। আজ নড়াইল বা নাসিরনগরের ঘর বাড়ি হারানো সংখ্যালঘুরা যদি বলে কি প্রয়োজন ছিল ’৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার নামে মা-বাবা ও আপনজন হারানোর, কি প্রয়োজন ছিল বোনদের সম্রম হারানার, যদি স্বাধীনতার ৫০ বছর পরেও শুধু হিন্দু হওয়ার কারণে আবারো সর্বস্ব হারাতে হয়-লাঞ্ছিত হতে হয় চেনা জানা অন্যধর্মের প্রতিবেশীর হাতে, জুতার মালা পড়তে হয়, লাঞ্ছিত হতে হয় হিন্দু শিক্ষক হবার কারণে? এর উত্তর তো নৈতিকভাবে দিতে বাধ্য ঐ মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী দল আওয়ামী লীগ।

বিজয়ের মাত্র সাড়ে তিন বছরের মাথায় আওয়ামী লীগের একাংশের ও আমেরিকার যৌথ চক্রান্তে অকল্পনীয় আগস্ট ট্র্যাজেডি ঘটে যায়। বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানে দেশ সরাসরি ফিরে যায় পাকিস্তানি সংস্কৃতি ও ভাবাদর্শের বলয়ে। জিয়া ক্ষমতায় এসেই সাংবিধানিকভাবে নিষিদ্ধ সাম্প্রদায়িক দল ও রাজনীতিতে ধর্মের ব্যবহার আইনসিদ্ধ করে দেয়। রাজনীতিকে ‘ডিফিকাল্ট’ করার জন্য নিয়ে আসেন একাত্তরের গণহত্যার কুশীলব গোলাম আজম, নিজামী, সবুর খান ও শাহ আজিজদের। সমাজে ও রাজনীতিতে জোর কদমে শুরু হয়ে যায় ধর্ম ব্যবসা। পরবর্তীতে এরশাদ ’৭১ এর মৌল চেতনার মূলে কুঠারঘাত করে ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম করে অমুসলিম জনগোষ্ঠীকে দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিকে পরিণত করে। বেড়ে যায় ধর্মীয় নিপীড়ন ও বৈষম্য। এ সময়ে দেশের সব চেয়ে মারাত্মক ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায় শিক্ষার সামগ্রিক সাম্প্রদায়িকীকরণ ও প্রতিক্রিয়াশীলতা। কুদরত-ই-খুদা শিক্ষা কমিশন রিপোর্ট অঘোষিতভাবে বাতিল হয়ে যায়। মুক্তিযুদ্ধের প্রতিশ্রুত একমুখী অবৈতনিক প্রাথমিক শিক্ষা, বিজ্ঞামনষ্ক সেকুলার সর্বজনীন শিক্ষার জায়গায় চালু হয় বহুধা বিভক্ত সাধারণ, ইংরেজী ও ব্যাপকভাবে ধর্মভিত্তিক শিক্ষা। শিক্ষা ও শিক্ষার্থীর মধ্যে যদি কৌতুহল না থাকে, অবাধ জিজ্ঞাসার স্বাধীনতা না থাকে, শিক্ষক যদি পড়াতে গিয়ে ধর্মান্ধ আক্রমণের শিকার হন তা হলে সেই সমাজ ও শিক্ষাকে তো মধ্যযুগীয় বলা যায়। মনে হয় আমরা সেই মধ্যযুগে ফিরে যাচ্ছি। সরকারী সাহায্য পুষ্ট ঐতিহ্যবাহী খারিজি মাদ্রাসার শিক্ষার গুরুত্ব কমে যাচ্ছে। সেই স্থলে ব্যাপকভাবে গড়ে উঠেছে মধ্যপ্রাচ্য ও এ দেশীয় কতিপয় ধনাঢ্য ব্যক্তির সাহায্যপুষ্ট নানা রকমের মাদ্রাসা। দীর্ঘ প্রায় ৪০ বছর ধরে এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে থেকে কোমল মতি লক্ষ লক্ষ শিক্ষার্থীদের কয়েকটি বিশাল প্রজন্মকে পরধর্ম ও সামগ্রিকভাবে বাঙালি সংস্কৃতির প্রতি অসহিষ্ণু মানসিকতায় গড়ে তোলা হয়েছে। এভাবে গড়ে উঠেছে এক সাম্প্রদায়িক সামাজিক মনস্তত্ব। বিপদের কারণ হলো এখন এ কাজ শুরু হয়েছে ধর্মীয় সংখ্যালঘু হিন্দুদের মধ্যে বিশেষ করে ছাত্র যুবকদের মধ্যে কিছু মৌলবাদী সংগঠনের অতৎপরতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। সাম্প্রদায়িকতা দিয়ে যে সাম্প্রদায়িকতা ঠেকানো যায় না এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির জন্য বিশেষ করে সংখ্যালঘুদের সুরক্ষার জন্য প্রয়োজন অসাম্প্রদায়িক রাজনীতি ও সংস্কৃতির চর্চা এ শিক্ষা দেবার মত বাম ও উদার রাজনীতির লোক তো এখন হিন্দুদের মধ্যে নেই। নানা কিসিমের ধর্মীয় সংগঠনের নেতা হওয়ার জন্য তারা অনেকেই ব্যস্ত।

একটি দেশের অধিকাংশ মানুষ যদি প্রকাশ্যে বা সংগোপনে মনে করে থাকেন যে তাঁদের নিজ নিজ ধর্মই শ্রেষ্ঠ, অন্যধর্ম মিথ্যা ও কল্পকাহিনী সে দেশে সম্প্রীতি, অসাম্প্রদায়িকতা এসব কথাগুলো তো বাহুল্যমাত্র। এমতাবস্থায় অসহিষ্ণুতা ঘৃণা, সাম্প্রদায়িতকতাই তো হবে সমাজের প্রধান ধারা এবং ইতোমধ্যে হয়েছেও তাই। সাধারণ শিক্ষার মধ্যে যা কিছু বিজ্ঞানমনস্কতা, সর্বজনীন মানবিকতা ছিল সেসব কিছু সংগোপনে বাদ দেয়া হয়েছে। ১৯৮০ সালের পরে উচ্চ মাধ্যমিক জীববিজ্ঞানে বিবর্তনবাদ বিষয়টি সম্পূর্ণ তুলে দেয়া হয়েছে যেন এর আগে যারা এসব পড়ে এসেছে তারা ধর্মচর্চা ছেড়ে অমানুষ হয়ে গেছে। এরকম উদাহরণ অনেক দেয়া যায়। বর্তমান মুক্তিযুদ্ধের সরকার হেফাজতের নির্দেশে পাঠ্যসূচি পরিবর্তন করেছে এবং উচ্চ মাধ্যমিকের জীববিজ্ঞানে যা সম্প্রতি যুক্ত করা হয়েছে তাকে অপবিজ্ঞান ছাড়া অন্য কিছু বলা যাবে না। ধর্মান্ধ, সংস্কারাচ্ছন্ন, পরধর্ম ও পরমত অসহিষ্ণু, একটি বিশাল ছাত্র তরুণ যুব গোষ্ঠী দিয়ে সরকার একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশ গঠনের অলীক স্বপ্ন দেখছেন। মনে রাখা দরকার পৃথিবীর সব উন্নত দেশ সামাজিকভাবে সেকুলার বা ইহজাগতিক দর্শনে বিশ্বাসী। একটি ব্যাপক সাংস্কৃতিক গণজাগরণ ছাড়া, মুক্তচিন্তার সব শক্তির জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রাস্তায় নামা ছাড়া এই অন্ধকার থেকে উত্তরণ অসম্ভব।

উত্তরণের পথ নিয়ে বারান্তরে বিস্তৃত আলোচনার ইচ্ছা রইল। শুধু শাসক দলের নেতা ও কর্মী সমর্থক বুদ্ধিজীবীদের কাছে একটি প্রশ্ন রেখে শেষ করতে চাই। প্রতি মুহুর্তে বঙ্গবন্ধুর নাম নিয়ে ১৪ বছর ধরে এককভাবে ক্ষমতায় থেকে বঙ্গবন্ধু প্রণীত উপমহাদেশের শ্রেষ্ঠ দু’টি দলিল, ’৭২ এর মূল সংবিধান ও কুদরত-ই-খুদা শিক্ষানীতি বাস্তবায়নে কোন কার্যকর পদক্ষেপ এই দীর্ঘ সময়ে সরকার নিতে পারলো না কেন? এই দু’টি দলিলে বাস্তবায়ন ছাড়া কোন অবস্থাতেই বঙ্গবন্ধুর আকাঙ্ক্ষিত দেশতো গঠন করা যাবে না। অনেক কিছু করা হচ্ছে কিন্তু এ কাজটি করার প্রকৃত শক্তি শক্তিশালী শাসকদলের আছে বলে মনে হয় না। এজন্য প্রয়োজন প্রকৃত রাজনৈতিক ক্ষমতা। ক্ষমতার রাজনীতি দিয়ে তা সম্ভব নয়। পরিশেষে ‘মুক্তধারা’ নাটকের রবীন্দ্রনাথের একটি উদ্বৃতি দিয়ে শেষ করতে চাই- ভাবছো হবে তুমি যা চাও / জগতটাকে তুমিই নাচাও/ দেখবে হঠাৎ নয়ন মেলে / হয়না যেটা সেটাও হবে।
লেখক : অবসরপ্রাপ্ত কলেজ শিক্ষক, প্রাবন্ধিক, কলামিস্ট

পূর্ববর্তী নিবন্ধইসলামী সংস্কৃতি বিকাশে অনন্য দৃষ্টান্ত চট্টগ্রাম
পরবর্তী নিবন্ধভূগোলের গোল