কোভিডে ‘ঘরে ফেরা’ : ৬% সুদে ৫০০ কোটি টাকার তহবিল

| মঙ্গলবার , ৪ জানুয়ারি, ২০২২ at ১০:৪১ পূর্বাহ্ণ

করোনাভাইরাস মহামারীতে চাকরি ও ব্যবসা হারিয়ে গ্রামে ফিরে যাওয়া মানুষের কাজের সুযোগ তৈরিতে সহজ শর্তে ও স্বল্প সুদে ঋণ দিতে ৫০০ কোটি টাকার তহবিল করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ‘ঘরে ফেরা’ নামের এ পুনঃঅর্থায়ন তহবিল থেকে জামানত ছাড়াই ৬ শতাংশ সুদে পাঁচ লাখ পর্যন্ত ঋণ পাওয়া যাবে। খবর বিডিনিউজের।
গতকাল সোমবার কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ তহবিল গঠনের ঘোষণা দিয়ে এ বিষয়ক সার্কুলার সব তফসিলি ব্যাংকে পাঠিয়েছে। ঋণ গ্রহীতারা দুই লাখ পর্যন্ত ঋণের কিস্তি পরিশোধে তিন মাস গ্রেস পিরিয়ডসহ দুই বছর সময় পাবেন। আর ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণের ক্ষেত্রে ছয় মাস গ্রেস পিরিয়ডসহ তিন বছর সময় পাওয়া যাবে। এ তহবিলের অন্তত ১০ শতাংশ ঋণ বা বিনিয়োগ নারীদের দেওয়ার জন্যও সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলোকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এ তহবিল গঠনের বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, গ্রামে ফিরে যাওয়া মানুষের নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও দারিদ্র্য বিমোচনের জন্য এ পুনঃঅর্থায়ন গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সার্কুলারে বলা হয়েছে, করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে শহরকেন্দ্রিক জনগোষ্ঠীর উল্লেখযোগ্য সংখ্যক কর্মজীবী মানুষ হঠাৎ কাজ হারিয়ে গ্রামাঞ্চলে ফিরে যেতে বাধ্য হয়েছেন। এসব মানুষের অধিকাংশই এখন গ্রামে অবস্থান করছেন এবং মানবেতর জীবনযাপন করতে বাধ্য হচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজের সুবিধার আওতায় এসব মানুষকে আনা একান্ত প্রয়োজন। তা না হলে গ্রামীণ অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাদের জন্য গ্রামেই উপযুক্ত কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা গেলে গ্রামীণ অর্থনীতি চাঙ্গা হবে; ফলে সামগ্রিক অর্থনীতিতে এর ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।
এ তহবিলের আওতায় ঋণ দেবে রাষ্ট্রীয় বাণিজ্যিক ও বিশেষায়িত ব্যাংকগুলো। বেসরকারি ও বিদেশি ব্যাংকেরও এ কর্মসূচিতে যুক্ত হয়ে ঋণ দেওয়ার সুযোগ থাকছে। ইসলামী শরীয়াহভিত্তিক ব্যাংকগুলো নিজেদের শরীয়াহ নীতিমালা অনুসরণ করে এ কর্মসূচির আওতায় বিনিয়োগ কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবে। সার্কুলারে বলা হয়েছে, আগ্রহী ব্যাংকগুলো বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে চুক্তির পর ঋণ বিতরণ শুরু করবে। ব্যাংকগুলো এ তহবিল থেকে টাকা পাবে দশমিক ৫০ শতাংশ সুদে। আর গ্রাহক পর্যায়ে বিতরণ করবে ৬ শতাংশ সুদে। শুরুতে তহবিলের পরিমাণ ৫০০ কোটি টাকা ধরা হলেও তা প্রয়োজনে বাড়ানোর সুযোগ থাকবে। ২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত এ মেয়াদ নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে গ্রাহক পর্যায় থেকে আদায় কার্যক্রম পরেও অব্যাহত থাকবে।
যেসব খাতে দেওয়া হবে ঋণ : স্বল্প পুঁজির স্থানীয় ব্যবসা; পরিবহন খাতে ক্ষুদ্র ও মাঝারি যানবাহন কেনা; ক্ষুদ্র প্রকৌশল শিল্প; মৎস্য চাষ, গরু, ছাগল, হাঁস-মুরগি পালন; তথ্যপ্রযুক্তি সেবা কেন্দ্র ও অন্যান্য সেবা উৎসারী কর্মকাণ্ড; বসতঘর নির্মাণ বা সংস্কার; সবজি ও ফলের বাগান; কৃষি যন্ত্রপাতি কেনা ও ফসল বিপণন।
এছাড়া গ্রামীণ অর্থনীতিতে গতি আনবে এমন কর্মকাণ্ড, যেমন: ছোট ছোট ব্যবসা, বিশেষ করে ধান ভাঙ্গানো, চিড়া বা মুড়ি তৈরি, নৌকা কেনা, মৌমাছি পালন, সেলাই মেশিন কেনা, কৃত্রিম গহনা ও মোমবাতি তৈরি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধদেশে এক দিনে শনাক্ত বেড়ে ছাড়াল সাড়ে ছয়শ
পরবর্তী নিবন্ধচমেক মর্গের সেই স্টাফের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা