কোনো জুটিই পারেনি আলো জ্বালাতে

টাইগারদের ম্যাচ ও সিরিজ হার

ক্রীড়া প্রতিবেদক | শনিবার , ২৮ মে, ২০২২ at ৭:২৪ পূর্বাহ্ণ

ঢাকা টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসের শুরু এবং শেষ যেন দারুণ এক মিল। শুরুতে ২৪ রানে নেই ৪ উইকেট। আর শেষে ১৫ রানে নেই ৫ উইকেট। এই যখন ব্যাটিংয়ের চিত্র তখন ফলাফল কেমন হতে পারে বা কেমন হওয়া উচিত তা বোধহয় বলার অপেক্ষা রাখে না। এখানেও যা হওয়ার তাই হয়েছে। দশ উইকেটে হারের লজ্জায় নীল হয়েছে বাংলাদেশ। আর সে সাথে হারিয়েছে সিরিজও। ঢাকা টেস্ট শুরু হয়েছিল ব্যাটিং লজ্জা দিয়ে। প্রথম ইনিংসে সে লজ্জায় কিছুটা হলেও আবরণ দিয়েছিলেন মুশফিক এবং লিটন। কিন্তু দ্বিতীয় ইনিংসে পারলেন না তারা। তাই পারল না বাংলাদেশও। ম্যাচের চতুর্থ দিনেই হারের গরম হাওয়া গায়ে লাগছিল বাংলাদেশের। তারপরও একটা ক্ষীণ আশা ছিল যেহেতু তখনো উইকেটে প্রথম ইনিংসের নায়ক মুশফিক এবং লিটন। কিন্তু মুশফিক লিটনরা কি প্রতিদিনই টানবে দলকে? এ দুজন ছাড়াও সাকিব ছিলেন ভরসার জায়গা হয়ে। কিন্তু কোনো ভরসাই কাজে আসল না। সবকিছুই হার মানল ব্যাটিং লজ্জার কাছে।
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি বলেছিলেন বাংলাদেশ আসলে টানা দশদিন খেলতে পারে না। তার কথাই সত্যি হলো। অন্তত দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজ থেকেই সেটা প্রমাণিত। দক্ষিণ আফ্রিকায় দুই টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিং লজ্জার পর এবার অপেক্ষাকৃত খর্ব শক্তির দল শ্রীলংকার বিপক্ষেও ব্যাটিং লজ্জা উপহার দিল বাংলাদেশের ব্যাটাররা। যার পরিণতি দশ উইকেটের লজ্জার হার। সে সাথে সিরিজ হার। ঢাকা টেস্টের চতুর্থ দিনেই হারের শংকায় পড়েছিল বাংলাদেশ। শ্রীলংকার প্রথম ইনিংসের চাইতে ১৪১ রানে পিছিয়ে থাকা বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে ২৪ রান তুলতেই হারিয়ে ফেরেছিল ৪ উইকেট। তখন হাল ধরেছিলেন প্রথম ইনিংসের নায়ক মুশফিক এবং লিটন দাশ। দুজন মিলে চতুর্থ দিনটা শেষ করেছিল। কিন্তু পঞ্চম দিনে পারলনা প্রথম ইনিংসের ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে। আগের দিনের ৪ উইকেটে ৩৪ রান নিয়ে শেষ দিন শুরু করেছিলেন দুই অপরাজিত ব্যাটার মুশফিক এবং লিটন। কিন্তু এবার তারা পারলেন না দলকে টানতে। আগের দিনের
৩৪ রানের সাথে আর ১৯ রান যোগ হতেই ফিরেন প্রথম ইনিংসে অপরাজিত ১৭৫ রানের ইনিংস খেলা মুশফিক। রাজিথার বলে বোল্ড হন ২৩ রান করা মুশফিক। এরপর লিটনের সাথে যোগ দেন সাকিব। প্রথম ইনিংসে ব্যর্থ হলেও দ্বিতীয় ইনিংসে ভাল কিছু করার ইঙ্গিত দিচ্ছিলেন। দুজন মিলে বেশ ভালই এগিয়ে যাচ্ছিলেন। এ দুজনের ব্যাটিং দেখে মনে হচ্ছিল ম্যাচটা বাঁচতে পারে তাদের হাত ধরে। কিন্তু ভালো খেলতে থাকা লিটন এবার পথ হারালেন। আশিথা ফার্নান্ডোর হাতে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে ফিরলেন লিটন ১৩৫ বলে ৫২ রান করে। কে জানতো সেখানেই শেষ হয়ে যাবে বাংলাদেশ।
সাকিবের সাথে যোগ দিয়ে দলকে টেনে নিয়ে যাবেন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত তেমনটি যখন ভাবছিল টিম ম্যানেজমেন্ট তখনই সেই আসিথা ফান্র্‌ান্ডোর বলে ফিরেন সাকিব। ষষ্ট উইকেট হিসেবে সাকিব ফিরেন ৭২ বলে ৫৮ রান করে। প্রথম ইনিংসে রানের খাতা খুলতে না পারা মোসাদ্দেক এই ইনিংসে ফিরলেন ৯ রান। ফলে টেস্ট টেস্ট দলে তার অন্তর্ভুক্তিটাকে প্রশ্নবোধক করেই রাখলেন মোসাদ্দেক। এরপর বাকিরা কেবলই আসা যাওয়া করেছে। লিটন দাশ ফিরে আসার পর বাকি চারটি উইকেট হারিয়েছে বাংলাদেশ মাত্র ১৩ রানে। শেষ ৫ উইকেট হারিয়েছে ১৫ রানে। আর তাতেই বাংলাদেশ অল আউট হয় ১৬৯ রানে। ৬ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশের হন্তারক আসিথা ফার্নান্ডো। প্রথম ইনিংসে নিয়েছিলেন ৪ উইকেট। শ্রীলংকার সামনে ম্যাচ জয়ের জন্য লক্ষ্য দাঁড়ায় মাত্র ২৯ রানের। সেখানেই ব্যর্থ বাংলাদেশের বোলাররা। অনেকটা টি-টোয়েন্টি স্টাইলে মাত্র ৩ ওভারে সে রান তুলে নিয়ে ম্যাচ এবং সিরিজ দুটোই জিতে নেয় শ্রীলংকা। ম্যাচ সেরা হয়েছেন শ্রীলংকার আসিথা ফার্নান্ডো। সিরিজ সেরা হয়েছেন অ্যঞ্জেলো ম্যাথিউস।

পূর্ববর্তী নিবন্ধআগামী বছর জুনের মধ্যে ট্রেন চালানোর টার্গেট
পরবর্তী নিবন্ধহজের নিবন্ধন শেষ হচ্ছে আজ, খোলা থাকবে ব্যাংক