কে বুঝে নেবে সাত খালের দায়িত্ব

সিডিএ-চসিক সমন্বয় সভা আজ

আজাদী প্রতিবেদন | বুধবার , ৬ এপ্রিল, ২০২২ at ৫:৪৬ পূর্বাহ্ণ

নগরের জলাবদ্ধতা নিরসনে চলমান মেগা প্রকল্পের আওতাভুক্ত ৮ দশমিক ৭২ কিলোমিটার দীর্ঘ পৃথক সাতটি খালের উন্নয়ন কাজ শেষ হওয়ায় তা বুঝে নিতে গত সোমবার সিডিএকে চিঠি দিয়েছে প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। তবে সিডিএর দৈনন্দিন কাজের মধ্যে খাল রক্ষণাবেক্ষণের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত নেই। তাই তারা চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনকে (চসিক) খালগুলো বুঝিয়ে দিতে চায়। কিন্তু পুরো প্রকল্পের কাজ শেষ না হওয়ায় মাঝপথে খালগুলো বুঝে নিতে অনাগ্রহী চসিক।
এ অবস্থায় আজ মঙ্গলবার মেগা প্রকল্প নিয়ে জরুরি সমন্বয় সভায় মিলিত হচ্ছেন চসিক মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী ও সিডিএ চেয়ারম্যান জহিরুল আলম দোভাষ। দুপুরে বাটালি হিল নগর ভবনের অস্থায়ী কার্যালয়ে এ সভা হওয়ার কথা রয়েছে। সভায় সাতটি খালের বিষয়ে আলোচনা হতে পারে।
সিডিএ সূত্রে জানা গেছে, মেগা প্রকল্পভুক্ত খাল আছে ৩৬টি। এর মধ্যে কাজ শেষ হয়েছে সাতটির। খালগুলোর দুই পাশে ১১,১৭০.৫১ মিটার রিটেইনিং ওয়াল নির্মাণ এবং অন্যান্য কাজ শেষ করেছে সেনাবাহিনী। তাই খালগুলো বুঝে নিতে সংস্থাটি চিঠি দিয়েছে সিডিএকে। চিঠির সঙ্গে খালের ড্রয়িং ও ম্যাপ পাঠানো হয়েছে।
জানা গেছে, ভৌত কাজ শেষ হওয়া খালগুলোর মধ্যে ১ দশমিক ৭৭ কিলোমিটার দীর্ঘ রাজাখালী খাল-২ এ ডান পাশে ১ হাজার ৪১০ মিটার ও বাম পাশে ১ হাজার ৪০১ মিটার রিটেইনিং ওয়াল নির্মাণ করা হয়েছে। অন্যান্য খালগুলো হচ্ছে শূন্য দশমিক ৯৮ কিলোমিটার দীর্ঘ মরিয়ম বিবি খাল, শূন্য দশমিক ৪৫ কিলোমিটার দীর্ঘ কলাবাগিচা খাল, শূন্য দশমিক ৪২ কিলোমিটার দীর্ঘ সদরঘাট খাল-১, ১ দশমিক ০৬ কিলোমিটার দীর্ঘ সদরঘাট খাল-২, ১ দশমিক ৯ কিলোমিটার দীর্ঘ আজববাহার খাল এবং ২ দশমিক ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ গুপ্তা খাল।
এ বিষয়ে সেনাবাহিনীর প্রকল্প পরিচালক লে. কর্নেল শাহ আলী আজাদীকে বলেন, আমরা কাজ শেষ করেছি। এখন নিয়ম অনুযায়ী খালগুলো বুঝে নিতে সিডিএকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছি। যেহেতু প্রকল্পে সিটি কর্পোরেশনের সঙ্গে অফিসিয়ালি কোনো সম্পর্ক নাই তাই সিটি কর্পোরেশনকে বলতে পারি না। তিনি বলেন, খালগুলো তো রক্ষণাবেক্ষণ করতে হবে। এখন প্রতি বছর রক্ষণাবেক্ষণ করার মতো বরাদ্দ আমাদের কাছে নাই। তাই আমরা সিডিএকে বুঝে নিতে বলেছি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সিডিএর এক প্রকৌশলী আজাদীকে বলেন, খাল রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব সিটি কর্পোরেশনের। কাজেই খালগুলো তাদের বুঝে নিতে হবে। আমরা তাদের বুঝে নিতে চিঠি দেব। সমন্বয় সভায়ও এ বিষয়ে আলোচনা হবে।
এ প্রসঙ্গে চসিকের প্রধান প্রকৌশলী মো. রফিকুল ইসলাম মানিক আজাদীকে বলেন, সাতটি খালের কাজ শেষ হলেও তা একটি প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত। প্রকল্পের কাজ তো এখনো শেষ হয়নি। নিয়ম অনুযায়ী প্রকল্পের মাঝপথে বুঝে নেয়ার সুযোগ নাই। প্রত্যেকটি প্রকল্প শেষ হলে পিসিআর (প্রজেক্ট কম্প্লিশন রিপোর্ট) উপস্থাপন করা হয়। এরপর বুঝে নেয়ার বিষয় আসবে। তারপরও এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেবেন মেয়র মহোদয়।
উল্লেখ্য, সিডিএ গৃহীত ‘চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনকল্পে খাল পুনঃখনন, সম্প্রসারণ, সংস্কার ও উন্নয়ন’ শীর্ষক মেগা প্রকল্পটি ৫ হাজার ৬শ ১৬ কোটি ৪৯ লাখ ৯০ হাজার টাকায় ২০১৭ সালের ৯ আগস্ট একনেকে অনুমোদন পেয়েছিল। ২০১৮ সালের ৯ এপ্রিল প্রকল্পটি বাস্তবায়নে সেনাবাহিনীর সঙ্গে সিডিএর সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হয়েছিল। একই বছরের ২৮ এপ্রিল নগরীর চশমা খাল ছাড়াও মুরাদপুর এলাকার সুন্নিয়া মাদ্রাসা সংলগ্ন খাল ও বহদ্দারহাট মোড়ের বড় নালা পরিষ্কার করার মাধ্যমে শুরু হয়েছিল প্রকল্পের কাজ।

পূর্ববর্তী নিবন্ধএক মামলার শুনানিতে এসে অপর মামলায় কারাগারে ব্যবসায়ী
পরবর্তী নিবন্ধবন্দর পরিচালনায় গতি বাড়বে