কাল আজকাল

সূর্য সেন : মৃত্যুঞ্জয়ী মহাবিপ্লবী

কামরুল হাসান বাদল | বৃহস্পতিবার , ১২ জানুয়ারি, ২০২৩ at ৫:৫৭ পূর্বাহ্ণ

‘যারা স্বর্গগত তারা এখনো জানে
স্বর্গের চেয়ে প্রিয় জন্মভূমি
এসো স্বদেশব্রতের সহদীক্ষালোভী
সেই মৃত্যুঞ্জয়ীদের চরণচুমি’

এই উপমহাদেশ তথা বিশ্বের মানবমুক্তির লড়াইয়ের ইতিহাসে ‘চরণচুম্বনের’ মর্যাদায় অভিসিক্ত বিপ্লবী বীর সূর্য সেনের মৃত্যুর আগে ইংরেজিতে লেখা শেষ বাণী ছিল এরকম, ‘আদর্শ ও একতা। ফাঁসির রজ্জু আমার মাথার ওপর ঝুলছে। মৃত্যু আমার দরজায় করাঘাত করছে। মন আমার অসীমের পানে ছুটে চলছে। এই তো সাধনার সময়। বন্ধুরূপে মৃত্যুকে আলিঙ্গন করার এইতো সময়। চলে যাওয়া দিনগুলোকে স্মরণ করার এই তো সময়। কত মধুর তোমাদের সকলের স্মৃতি। আমার প্রিয় ভাই-বোনেরা আমার এই জীবনের একঘেয়েমিকে ভেঙে দাও তোমরা। উৎসাহ দাও আমাকে। এই আনন্দময়, পবিত্র, ও গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে আমি তোমাদের জন্য কী রেখে গেলাম? মাত্র একটি জিনিস, তা হলো আমার স্বপ্ন, একটি সোনালী স্বপ্ন। স্বাধীন ভারতের স্বপ্ন।

কী শুভ মুহূর্ত ছিল যখন আমি এই স্বপ্ন দেখেছিলাম। বিগত জীবনে আগ্রহ ভরে এবং অক্লান্তভাবে পাগলের মতো ছুটেছি সে স্বপ্নের পেছনে। জানি না কতটা সফল হতে পেরেছি। জানি না কোথায় সেই অনুসরণ, আজ থামিয়ে দিতে হবে আমাকে। লক্ষ্যে পোঁছানোর আগে মৃত্যুর হিমশীতল তোমাদের স্পর্শ করলে তোমরাও অনুগামীদের হাতে এই অন্বেষণের ভার তুলে দেবে, যেমন আমি তোমাদের হাতে তুলে দিচ্ছি। প্রিয় বন্ধুরা, এগিয়ে চল, কখনো পিছিয়ে যেও না। ওই দেখা যাচ্ছে স্বাধীণতার নব-অরুণ। উঠে-পড়ে লাগো। কখনো হতাশ হয়ো না। সাফল্য আমাদের সুনিশ্চিত।

১৯৩০ সনের ১৮ এপ্রিলের চট্টগ্রাম ইস্টার বিদ্রোহের কথা কোনোদিন ভুলো না। জালালাবাদ, জুলধা, চন্দননগর, ও ধলঘাট সংগ্রামের কথা সবসময় স্পষ্ট মনে রেখো। ভারতের স্বাধীনতার বেদীমূলে যেসব দেশপ্রেমিক তাঁদের জীবন দান করেছেন, তাদের নাম রক্তাক্ষরে অন্তরের অন্তরতম প্রদেশে লিখে রেখো। আমাদের সংগঠনে যেন বিভেদ না আসে, এই আমার একান্ত আবেদন তোমাদের কাছে। যারা কারাগারের ভেতরে ও বাইরে রয়েছো তাদের সবাইকে জানাই আমার আশীর্বাদ। বিদায় নিলাম তোমাদের কাছ থেকে। বিপ্লব দীঘজীবী হোক। বন্দেমাতরম।’

ফাঁসিতে ঝোলানোর আগে মাস্টারদা সূর্য সেনের ওপর এত নির্যাতন করা হয়েছিল যে, ধারণা করা হয় মৃত সূর্য সেনকেই ব্রিটিশরা সেদিন ফাঁসিকাষ্ঠে ঝুলিয়েছিল।
পরবর্তীতে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি বরাত থেকে জানা যায়, ১৯৩৪ সালের ১২ জানুয়ারি মধ্যরাতে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে সূর্য সেন ও বিপ্লবী তারকেশ্বর দস্তিদারের ফাঁসি কার্যকর করা হয়। তবে তার আগে সূর্য সেন ও বিল্পবী তারকেশ্বর দস্তিদারকে ব্রিটিশ সেনারা নির্মমভাবে অত্যাচার করে। সেনারা হাতুড়ি দিয়ে তাদের দাঁত ও হাড় ভেঙে দেয়। ইচ্ছে মতো পিটিয়ে আধমরা করে। অত্যাচারের এক পর্যায়ে মাস্টারদা ও তারকেশ্বর দস্তিদার অজ্ঞান হয়ে পড়েন। এরপর তাদের অর্ধমৃত দেহকে ফাঁসির রশিতে ঝুলিয়ে পুরো মৃত্যু নিশ্চিত করে। পরে জেল থেকে ট্র্যাকে তুলে কর্ণফুলী নদীর চার নম্বর ষ্টিমার ঘাটে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে মৃতদেহের সঙ্গে লোহা বেঁধে বঙ্গোপসাগরে ফেলে দেয়া হয়। যাতে কেউ মাস্টারদা ও তারকেশরের মৃত দেহও খুঁজে না পায়। এটা সাম্রাজ্যবাদী শক্তির নির্মমতার আরেক নজির।

এটাও ধারণা করা হয় যে, সূর্য সেন বুঝতে পেরেছিলেন তাঁকে ব্রিটিশরা হত্যা করবেই এবং হত্যার আগে তাঁকে নির্মম নির্যাতনও চালাবে। যে কারণে তিনি সহযোদ্ধাদের জন্য এই চিঠিটি আগেই লিখে রেখেছিলেন। যদিও বিপ্লবীরা জেল থেকে মাস্টারদাকে মুক্ত করার চেষ্টা করেছিল কয়েকবার। মাস্টারদা শারীরিকভাবে দুর্বল হলেও তাঁর অপরিসীম মানসিক শক্তির পরিচয় পাওয়া যায় তাঁর সাথী বিপ্লবী অনন্ত সিংহের ভাষায়, তিনি লিখেছেন, ‘কে জানতো যে আত্মজিজ্ঞাসায় মগ্ন সেই নিরীহ শিক্ষকের স্থির প্রশান্ত চোখ দুটি একদিন জ্বলে উঠে মাতৃভূমির দ্বিশতাব্দীব্যাপি অত্যাচারের প্রতিশোধ নিতে উদ্যত হবে? ১৮৫৭ সালে সিপাহী বিদ্রোহ দমনের জন্য ববর্র অমানুষিক অত্যাচারের প্রতিশোধ, জালিয়ানওয়ালাবাগের নৃশংস হত্যাকান্ডের প্রতিশোধ! কে জানতো সেই শীর্ন বাহু ও ততোধিক শীর্ন পদযুগলের অধিকারী একদিন সাম্রাজ্যবাদী ইংরেজ রাজশক্তির বৃহত্তম আয়োজনকে ব্যর্থ করে তার সমস্ত ক্ষমতাকে উপহাস করে বৎসরের পর বৎসর চট্টগ্রামের গ্রামে গ্রামে বিদ্রোহের আগুন জ্বালিয়ে তুলবে?’

যৌবনকালে মানুষ রোমান্টিসিজমে ভোগে। এ সময় অনেক অলীক স্বপ্নও দেখে। প্রেম, সংগ্রাম এমনকি বিপ্লবের সঙ্গেও জড়িয়ে যায় কিন্তু একটি সময়ে এসে তাদের মধ্যে অনেকের মোহভঙ্গ ঘটে। তারা ফিরে যায় স্বাভাবিক জীবনে। সূর্য সেনও কি তেমন ভাবাবেগে জড়িয়ে গিয়েছিলেন?

তাঁর জীবনী পাঠে কিন্তু এমন মনে করার কোনো অবকাশই খুঁজে পাই না। বরং এক ত্যাগী, ত্যাজি ও আত্মনিবেদিত বিপ্লবীর পরিচয় পাই। তিনি দীক্ষা নিয়ে, ব্রত নিয়ে, প্রস্তুতি নিয়ে বিপ্লবের পথে নিজেকে নিবেদিত করেছিলেন। যে কারণে তিনি বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হতে চাননি। পরিবারের চাপে পাণিগ্রহণ করলেও বাসরঘর থেকে পালিয়ে গিয়ে আর কখনো স্ত্রীর কাছে ফিরে যাননি। তবে স্ত্রীর মৃত্যু সংবাদ পেয়ে জেল থেকে তাঁকে দেখতে গিয়েছিলেন। সংসারবিবাগী হওয়ার ক্ষেত্রে মহাত্মা গান্ধীর (গান্ধীজি বিয়ের পর কয়েকবছর সংসার করেছিলেন, তাঁর সন্তানও ছিল। একসময় তিনি সংসারবিমুখ হয়েছিলেন) সঙ্গে তাঁর মিল থাকলেও ভারতকে মুক্ত করার পন্থা নিয়ে তাঁদের মধ্যে কোনো মিল ছিল না। দুজনের পথ ছিল একেবারেই বিপরীতমুখী। তবে একবার শুধু বিপ্লবী সূর্য সেনই নন, ভারতের স্বদেশী ও বিপ্লবীরা মহাত্মা গান্ধীর ওপর আস্থা রেখে একবছরের জন্য বিপ্লবী কর্মকাণ্ড স্থগিত রেখেছিলেন। ১৯২০ খ্রিস্টাব্দে গান্ধীজী স্বরাজ এনে দেওয়ার জন্য বিপ্লবীদের কাছ থেকে এক বছরের সময় চেয়ে নেন। তৎকালীন বিপ্লবীরা অহিংস নীতিতে বিশ্বাসী না হলেও গান্ধীজির কথায় অনেকেই আস্থা রেখেছিলেন। শেষ পর্যন্ত অহিংস আন্দোলন এক বছরের ভেতর ভারতের স্বরাজ আনতে ব্যর্থ হলে বিপ্লবীরা আবার সশস্ত্র বিপ্লবের পথ বেছে নেন। ১৯২১ সাল থেকে বিপ্লবীরা আবার পূর্ণ ও নবোদ্যোমে অর্থ এবং অস্ত্র সংগ্রহে নেমে পড়ে। তরুণ সূর্য সেনও ব্যতিক্রম রইলেন না।

এর পরের বছরেই আরেকটি ঘটনা উপমহাদেশের রাজনীতিতে বিশেষ করে বিপ্লবী ও তরুণ সমাজের মনে এক অভূতপূর্ব সাড়া ফেলেছিল। ১৯২২ সালের ৬ জানুয়ারি প্রকাশিত হয় কাজী নজরুল ইসলামের বিদ্রোহী কবিতাটি। প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে কবিতাটি ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে। বিপ্লবী তথা ব্রিটিশবিরোধীদের মনে এক অসাধারণ সাহস ও প্রেরণা সঞ্চার করে এই কবিতাটি। তখন তরুণ-যুবকরা মুখে মুখে কবিতাটির বিভিন্ন অংশ আবৃত্তি করত।

১৯১৬ সালে বহররমপুর কৃষ্ণনাথ কলেজে অধ্যয়নকালে সূর্য সেন সরাসরি রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। বিপ্লবীদের গোপন ঘাঁটি এই কলেজ়ের অধ্যাপক সতীশচন্দ্র চক্রবর্তীর সান্নিধ্যে আসেন। তিনি তখন যুগান্তর দলে যুক্ত ছিলেন। তাঁর কাছেই সূর্য সেন বিপ্লবের দীক্ষা নেন। সূর্য সেন ১৯১৮ সালে শিক্ষাজীবন শেষ করে চট্টগ্রামে এসে গোপনে বিপ্লবী দলে যোগ দেন। ৪৯ নং বেঙ্গল রেজিমেন্টের নগেন্দ্রনাথ সেন ১৯১৮ সালে চট্টগ্রামে এসে সূর্য সেন, অম্বিকা চক্রবর্তী ও চারুবিকাশ দত্তের সঙ্গে দেখা করেন। সূর্য সেন এবং তাঁর ঘনিষ্ঠ সহযোগী অম্বিকা চক্রবর্তী একই থানার পাশাপাশি গ্রামের ছাত্র হিসেবে ছোটবেলা থেকেই পরস্পরের কাছে পরিচিত ছিলেন। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের শেষের দিকে অনুরূপ সেন, চারুবিকাশ দত্ত, অম্বিকা চক্রবর্তী, নগেন্দ্রনাথ সেন প্রমুখকে নিয়ে চট্টগ্রামে বিপ্লবী দল গঠিত হয়।

মাস্টারদার দল চূড়ান্ত অপারেশ করে ১৯৩০ সালের ১৮ এপ্রিল। ১৮৫৭ সালে সিপাহী বিদ্রোহের পর ব্রিটিশদের পিলে চমকে দেওয়ার মতো, নাজেহাল হওয়ার মতো, শঙ্কিত হওয়ার মতো এবং ব্রিটিশরাজের জন্য অশনিসংকেতের মতো ঘটনা ছিল এটি। এদিন মাস্টারদা মোট ৬৫ জন যোদ্ধা নিয়ে প্রায় রাত দশটার দিকে আক্রমণ করে চট্টগ্রাম পুলিশ লাইনে অবস্থিত অস্ত্রাগার দখল করেন। এই সময় তাঁদের পরনে ছিল সেনাবাহিনীর পোশাক। তাঁদের কাছে ছিল কয়েকটি রিভলবার এবং সাধারণ বন্দুক। অস্ত্রাগার ভেঙে তাঁরা রাইফেল, রিভলবার এবং কার্তুজ সংগ্রহ করেন। এই আক্রমণের শুরুতেই তাঁরা টেলিফোন লাইন কেটে দিয়েছিলেন। ফলে আক্রমণের সময়, ব্রিটিশ পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা শহরের অন্য প্রান্তের সৈন্যদের কাছে এই আক্রমণের যথার্থ সংবাদ পাঠাতে ব্যর্থ হয়। এ সময় বিপ্লবীরা এত দ্রুত আক্রমণ করে দখল করে নেয় যে, সার্জেন্ট ব্লাকবার্ন, কলোন, সার্জেন্ট মেজর ফেরেলসহ অনেক অফিসার প্রতিরোধ করার আগেই মৃত্যুবরণ করেন।

বিপ্লবীরা প্রথমে টেলিফোন ও টেলিগ্রাফ যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করেন এবং রেল চলাচল বন্ধ করে দেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী গণেশ ঘোষের নেতৃত্বে একদল বিপ্লবী পুলিশ অস্ত্রাগার এবং লোকনাথ বলের নেতৃত্বে দশজনের একটি দল সাহায্যকারী বাহিনীর অস্ত্রাগারের নিয়ন্ত্রণ নেন। এই দুঃসাহসী কাজের পরিকল্পনা ও নেতৃত্বে ছিলেন বিপ্লবের প্রাণপুরুষ মাস্টারদা সূর্য সেন। বিপ্লবীদের কাছে ব্রিটিশ আর্মি পরাজিত হয় এবং পিছু হটে। সফল অভিযানের পর বিপ্লবী দলটি পুলিশ লাইনে সমবেত হয় এবং মাস্টারদা সূর্য সেনকে পূর্ণ সামরিক কায়দায় অভিবাদন প্রদান করে। এ সময় সূর্য সেন জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে অস্থায়ী বিপ্লবী সরকার ঘোষণা করেন। চারদিন চট্টগ্রাম স্বাধীন রাখেন।

সূর্য সেন কোনো অভিজাত বা স্বচ্ছল পরিবারের সন্তান ছিলেন না। ১৮৯৪ সালের ২২ মার্চ চট্টগ্রামের রাউজান থানার নোয়াপাড়ায় অতি সাধারণ একটি পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা রাজমনি সেন। মা শশী বালা সেন। রাজমনি সেনের দুই ছেলে আর চার মেয়ের মধ্যে সূর্য সেন তাঁদের চতুর্থ সন্তান।

সূর্য সেন কি বুঝতেন না যে বৃহৎ ভারতবষের্র দক্ষিণ-পূর্বের একটি নগরকে স্বাধীন করে তিনি বেশিদিন টিকে থাকতে পারবেন না? তাঁর প্রতিপক্ষ যখন ব্রিটিশের মতো একটি পরাশক্তি? তিনি কি বিপ্লব করে, অস্ত্রাগার দখল করে, চট্টগ্রামকে স্বাধীন করে অপরিণামদর্শীতার পরিচয় দিয়েছিলেন? এমন প্রশ্ন সে সময়ও অনেক রাজনৈতিক দল ও নেতারা করেছিলেন। এক কথায় এর জবাব হবে, না। কারণ রাজনৈতিকভাবে এতটা অপরিপক্ক বা অপরিণামদর্শী তিনি ছিলেন না। ভাবালুতায় আক্রান্ত হয়েও তিনি বিপ্লবের পথ বেছে নেননি। তিনি বুঝেশুনেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। সূর্য সেনকে বিচার করতে হলে বিপ্লব এবং বিপ্লবীদের বিষয়ে বিস্তর জ্ঞান রাখা দরকার। বিপ্লবীরা অগ্রসর চিন্তার মানুষ। তাঁরা অগ্রবর্তী মানুষ। তাঁরা জাতিকে পথ দেখান। মুক্তির মন্ত্রণা দেন। তাঁদের সে দেখানো পথেই শেষ পর্যন্ত মুক্তি ঘটে। ১৯০ বছরের ব্রিটিশ শাসনামলে এত যে বিপ্লবী দেশপ্রেমিক আত্মাহুতি দিলেন তাঁরা জানতেন তাঁদের সে আত্মত্যাগে দেশ স্বাধীন হবে না বটে তবে পরাধীন জাতির বিবেক ও মননে তার ছাপ থেকে যাবে এবং পরবর্তীতে সে সাধারণ মানুষগুলোই দীক্ষিত হয়ে মুক্তির লক্ষ্যে ঝাঁপিয়ে পড়বে।

বিশ্বের বিপ্লবের ইতিহাসে, মুক্তিসংগ্রামের ইতিহাসে বিপ্লবী সূর্য সেন একটি প্রেরণার নাম, একটি আদশের্র নাম। ভারতের দীর্ঘ মুক্তিসংগ্রামের ইতিহাসে এক উজ্জ্বল অধ্যায়ের নাম। মুক্তির মন্দিরের সোপানতলে কত প্রাণ যে বলিদান হলো তাকে অশ্রুজলে লিখে রাখলেই শুধু হবে না। তাদের আদর্শকে লালন করতে হবে। ‘ স্বর্গের চেয়ে প্রিয় জন্মভূমি’ যাঁরা মনে করেন তাঁদের স্বপ্নের সে মাতৃভূমি তথা মুক্ত বিশ্ব গড়ে তুলতে হবে। তাতেই বিপ্লব সফল হবে। কারণ বিপ্লবীরা তো আর ফিরে আসবে না।

‘কত বিপ্লবী বন্ধুর রক্তে রাঙা
বন্দীশালায় ঐ শিকল ভাঙা
তারা কি ফিরিবে আর
তারা কি ফিরিবে এই সুপ্রভাতে
যত তরুণ অরুণ গেছে অস্তাচলে’।
লেখক : কবি-সাংবাদিক

পূর্ববর্তী নিবন্ধসাংস্কৃতিক শিক্ষা সব শিক্ষার্থীর জন্য, সবার জন্য, সর্বত্রই
পরবর্তী নিবন্ধসন্ত্রাসী গোষ্ঠীতে যুক্ত হয়েছিলেন, স্বীকারোক্তি শামীমা বেগমের