কালুরঘাট সেতু দিয়ে চলতে পারবে না নতুন আনা ইঞ্জিন

লোকাল ট্রেন সাড়ে ৭ মাস বন্ধ দোহাজারী রুটে

আজাদী প্রতিবেদন | মঙ্গলবার , ২৩ নভেম্বর, ২০২১ at ৬:০৭ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম-নাজিরহাট রুটে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক থাকলেও ইঞ্জিন সংকটের কারণে সাড়ে ৭ মাস ধরে বন্ধ রয়েছে দোহাজারী রুটের ট্রেন চলাচল। সড়ক পথে অধিক ভাড়া এবং যানজটের কারণে দিন দিন ট্রেনের প্রতি যাত্রীদের আগ্রহ বাড়ছে। সড়ক পথের তুলনায় রেলপথের ভাড়া একেবারেই কম। তাছাড়া নিরাপদ ও স্বাচ্ছন্দ্যময় ভ্রমণের জন্য সাধারণ মানুষ সবার আগে ট্রেনকেই বেছে নেন।
রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের বাণিজ্যিক বিভাগ থেকে জানা গেছে, চট্টগ্রাম-দোহাজারী, চট্টগ্রাম-নাজিরহাট রুটের রেললাইন মেরামত করার পর ট্রেনের সংখ্যাও বাড়ানো হয়েছে। রেলমন্ত্রী নিজে দোহাজারী এবং পটিয়ায় উপস্থিত থেকে এই রুটে আরো দুটি ট্রেন সার্ভিসের উদ্বোধন করেছিলেন। এরপর থেকে যাত্রী সংখ্যাও আগের চেয়ে দ্বিগুণ বেড়েছে এই দুই রুটে। সেই সাথে রাজস্বও বেড়েছে আগের চেয়ে।
চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন ম্যানেজার রতন কুমার চৌধুরী আজাদীকে জানান, চলতি বছরের ৫ এপ্রিল থেকে ৯ আগস্ট পর্যন্ত করোনার কারণে সারাদেশের মতো চট্টগ্রাম-হাটহাজারী-নাজিরহাট ও চট্টগ্রাম-দোহাজারী রুটে সকল ধরনের ট্রেন চলাচল বন্ধ ছিল। পরবর্তীতে ১০ আগস্ট থেকে হাটহাজারী-নাজিরহাট রুটে ট্রেন চলাচল শুরু হয়। দোহাজারী রুটে সকল লোকাল ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। এখন দুটি ডেমু ট্রেন চলাচল করে। একটি পটিয়া পর্যন্ত এবং অপরটি দোহাজারী পর্যন্ত। দোহাজারী রুটে আগে দুটি লোকাল ট্রেন চলাচল করতো। বর্তমানে ইঞ্জিন সংকটের কারণে চট্টগ্রাম-দোহাজারী রুটে লোকাল ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে বলে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের পরিবহন বিভাগ থেকে জানা গেছে। সম্প্রতি দক্ষিণ কোরিয়া থেকে উচ্চ গতির ২০টি ইঞ্জিন ক্রয় করা হয়েছে। গত ২১ নভেম্বর দক্ষিণ কোরিয়া থেকে আরো ১০টি ইঞ্জিন চট্টগ্রাম বন্দরে এসেছে।
রেলের মেকানিক্যাল বিভাগ বলছে, আগের সবচেয়ে ভারী ইঞ্জিনগুলোর গড় ওজন প্রতি এঙেলে ১১ দশমিক ৯৬ লোডের হিসাবে (প্রতিটি ইঞ্জিনে ৬ এঙেল) ৭০ থেকে ৭২ টন। বর্তমানে আমদানি হওয়া ইঞ্জিনগুলোর গড় ওজন ১০০ টনেরও বেশি (প্রতি এঙেলে ১৫ থেকে ১৬ টন)। সর্বশেষ প্রযুক্তির ইঞ্জিন হওয়ায় এসব ইঞ্জিন এঙেল লোডের হিসাব থেকেও ভারী হয়। সে কারণে আমদানি হওয়া নতুন ইঞ্জিনগুলো প্রায় শতবর্ষী সেতুগুলো দিয়ে পারাপারের সময় দুর্ঘটনা ঝুঁকি অনেক বেড়ে যাবে। এতে রেলের আর্থিক ক্ষতির পাশাপাশি হতাহতের আশঙ্কাও প্রবল বলে মনে করছেন রেলওয়ে সংশ্লিষ্টরা।
নতুন আমদানিকৃত এসব অত্যাধুনিক ভারী ইঞ্জিনের ভার বহনে সক্ষম নয় পূর্বাঞ্চল কালুরঘাট সেতুসহ অনেক সেতু। ব্রিটিশ আমলে নির্মিত এসব সেতুতে নতুন ইঞ্জিন চলাচলের বিষয়টি না ভেবে আমদানি করায় বিপাকে পড়েছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। এখন এসব ইঞ্জিন ব্যবহারের জন্য সেতুগুলোতে সংস্কার কাজের পরিকল্পনা রেলওয়ের।

পূর্ববর্তী নিবন্ধএক সপ্তাহে টিকা পেল ৯ হাজার অপেক্ষায় ২৫ হাজারের বেশি
পরবর্তী নিবন্ধ৭৮৬